এস. এম. মনিরুজ্জামান মিলন, রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার রাউতনগরে কুলিক নদী থেকে স্কুটার মেশিন দিয়ে অবাধে বালু মাটি তুলছে সরকারি রাস্তা নির্মানকারী একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাউতনগর কুলিক নদী থেকে অত্যাধুনিক স্কুটার মেশিন দিয়ে নদী খনন করে বালু মাটি তুলছেন আলমাস নামক এক ব্যক্তি। তিনি জানান, রাউতনগর বাজার থেকে কলিগা স্কুল পর্যন্ত ৪ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সরকারী রাস্তা নির্মানের কাজ চলছে। সে রাস্তায় বালু মাটির প্রয়োজন হওয়ায় রাস্তা নির্মানকারী ঠিকাদার আবু সিদ্দিক তোতার নির্দেশেই আমি বালুমাটি তুলছি।
কতদিন বালু মাটি উত্তোলন করবেন প্রশ্নে বলেন, প্রায় সাড়ে ৪ কিঃমিঃ রাস্তায় বালুমাটি ফেলাতে হবে তাহলে বুঝেন কতটুকু বালুমাটি লাগবে আর এর সব বালুমাটিই নেওয়া হবে এই নদী থেকে। এভাবে বালুমাটি তোলার নিয়ম আছে কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব বিষয় ঠিকাদার জানেন।
উল্লেখ্য, প্রতিদিন গড়ে ৫০/৬০ গাড়ী বড় ট্রলি দিয়ে নদী থেকে বালুমাটি তুলে রাস্তায় ফেলছেন ঠিকাদার আবু সিদ্দিক তোতা। অপর দিকে রাস্তায় বালু ফেলানোর কথা থাকলেও ফেলছেন বালুমাটি।
ঐ রাস্তার নির্মানের গ্রাম চড়োলপাড়ার বাসিন্দা সেলিম বলেন, এখানে কোন ইঞ্জিনিয়ার আসে না। এ রাস্তা নির্মানে চরম অনিয়ম দূনীর্তি হচ্ছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, রাস্তা খননকালে অনিয়ম হয়েছে। এখানে রাস্তা ধসে যেন না পড়ে সেজন্য নির্মানাধীন প্যারাসেডিং গুলোতে নিম্নমানের রডসিমেন্ট ব্যবহার করছেন। এক কথায় শহর থেকে আমাদের গ্রাম অনেক দুর হওয়ায় ঠিকাদার ইচ্ছেমত কাজ করছেন।
রাউতনগর গ্রামের বাসিন্দা বারেক বলেন, এরশাদ সরকারের আমলে এই নদীর উপড়ে রাউতনগর-রওশনপুর ব্রিজটি নির্মান হওয়ার কিছুদিনের মধ্যে ধসে পড়ে । এরপরে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে উঠে। অবশেষে এলাকাবাসীর স্বউদ্যোগে বাঁশের সাকো নির্মান করে যাতায়াত করছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে মেশিন দিয়ে নদী খনন করে বালু মাটি তোলায় আর বোধায় সাকো দিয়েও যাতায়াত হবে না দুই গ্রামের মানুষের।
এ বিষয়ে ঠিকাদার আবু সিদ্দিক তোতা বলেন, রাস্তায় বালু প্রয়োজন হওয়ায় আমি নদী থেকে বালুমাটি উত্তোলন করছি। প্রশাসনের অনুমতি নিয়েছেন কিনা প্রশ্নে বলেন,আমি যাদের জমি নদীতে আছে তাদের কাছ থেকে বালুমাটি কিনে নিয়েছি।
এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠাকুরগাঁও জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, নদী থেকে বালুমাটি উত্তোলন করার কোন বিধি-বিধান নেই। যদি কেউ উত্তোলন করে থাকে সেটা সম্পূর্ণ বেআইনি। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন দেখবেন।
রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা খন্দকার মোঃ নাহিদ হাসান বলেন, নদী থেকে কোনক্রমেই বালুমাটি তোলা যাবে না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আমি দ্রুতসময়ে ব্যবস্থা নিব।