বৃষ্টি ও শীতে কাবু উত্তরাঞ্চলবাসী

Slider লাইফস্টাইল

48541_thumbm_f

 

বগুড়া; গত দুদিন বগুড়াসহ উত্তরের আকাশের সূর্যের দেখা মেলেনি। আবহাওয়া অফিসের মতে  শৈতপ্রবাহ না হলেও কুয়াশা, বৃষ্টির সাথের হালকা বাতাস অনেকটা কাবু করেছে বাইরের মানুষদের। বিশেষ করে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ গত দুই দিনের চলমান ঠান্ডায় স্বাভাবিক কাজ ভাবে কাজ করতে পারেনি। সাকালে ঘণ কুয়াশার কারণে মহাসড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করেছে বাস-ট্রাক।
বগুড়া আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার রাতে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিলো ১৪.৪ ডিগ্রি সে. আর এইমাত্রা দিনের বেলা কিছুটা বাড়লেও শিরশির বাতাসের কারণে এবারের শীত মৌসুমে সব চেয়ে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। আর মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত .১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।
এই শীতের কারণে শহরে লোকজনের উপস্থিতি অনেকটা কমেছে। বিশেষ জরুরি কাজ ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে আসছে না। স্কুল, কলেজ, ব্যাংক বীমা অফিসগুলোতেও শীতের ছোঁয়া লেগেছে। দিনের শেষ ভাগেও লোকজনের সারা কম ছিলো।
এদিকে হঠাৎ বেশি ঠান্ডা পড়ায় গরম কাপড়ের দোকানে বেচা কেনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বগুড়ার হকার্স মার্কেট, রেলওয়ে মার্কেট, নিউমার্কেসহ খোল রাস্তায় ভ্রাম্যমান দোকানগুলোতে গরম কাপড় কেনার ভীড় চোখে পড়েছে।
শাপলা মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন জানান, হঠাৎ দুই দিন থেকে সূর্যের দেখা না মেলা এবং সারাদিরে বৃষ্টিতে বেশি শীত লাগছে তাই হকার্স মার্কেট থেকে পরিবারের সবার জন্য গরম কাপড় কিনলাম।
শীত এবং বৃষ্টিতে মাঠের কৃষক, রিক্সা চালকসহ খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ তাদের নিজ নিজ পেশার কাজ করতে পারছেন না। কথা হয় পঞ্চাশ বছর বয়সের আব্দুল করিমের সাথে, তিনি নিয়মিত বগুড়া শহরের রাস্তায় সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত রিক্স চালান। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে স্টেশন রোডে একটি নিরিবিলি জায়গায় রিক্সার হুক তুলে চাদর গায়ে জড়োসরো হয়ে আছে। তিনি জানালেন, বৃষ্টি আর ঠান্ডা বাতাসে হাত পা বরফ হয়ে গেছে। রিক্সায় পেডেল মারতে পারছি না।
শহরের মাটিডালি এলাকার আলু চাষি খয়বার জানান, প্রতিদিনের মত তিন মঙ্গলবার সকালেও জমিতে কাজের উদ্দেশ্যে এসেছিলেন কিন্তু বৃষ্টি আর বাতাস তাকে কাজ করতে দেয়নি। ঠান্ডার করণে তিনি দ্রুত জমি ত্যাগ করে বাড়িতে যান।
এদিকে তীব্র শীতে মানুষ জড়োসরো হয়ে পড়েছে। এতে ফুটপাত এবং গৃহহারা ছিন্নমূল মানুষ বেশি কাবু হয়ে পড়েছে। শহরের রেল স্টেশন, উডবার্ণ পার্ক এবং খোকন পার্কের আশেপাশের ফটপাতগুলোতে সহ¯্রাধিক ছিন্নমূল শিশু থাকে। এদের গায়ে তেমন শীতের কাপড় নেই। চলমান শীতল বাতাস আর বৃষ্টি মোকাবেলায় এরা দুই তিন জন মিলে একটা কম্বলের মধ্যে জড়োসরো হয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে।
এছাড়াও বৃদ্ধ ও শীশুরা সর্দি , শ্বাসকষ্ট , আমাশয়সহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে এসব রোগের রোগি সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনসালটেন্ট অর্থোপেডিক্স ডা. রেজাউল করিম জানান, হঠাৎ করে তাপমাত্র কমে গেলে বয়স্ক এবং শিশুদের শ্বাস কষ্ট হয়ে থাকে। অপর দিকে হাড়ের জয়েন্টগুলোতে তিব্র ব্যথা অনুভূত হয়। পাশাপাশি ঘাড় এবং কোমরের ব্যাথা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। তিনি এসব সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে সাবধনতা অবলম্বনের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *