ঢাকা; জামাই জারেড কুশনারকে হোয়াইট হাউজে সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে ঘোষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডনাল্ড ট্রাম্প। কুশনার একজন প্রপার্টি ডেভলপার। শ্বশুর ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি মূল ভূমিকা রেখেছেন। এখন তাকে হোয়াইট হাউজে শীর্ষ উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়ার ফলে দেশের আভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্র বিষয়ক নীতি উভয় ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তাকে নিয়োগ দেয়ার এমন ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে। ডেমোক্রেটরা এ নিয়োগ পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছে অবিলম্বে। জামাইকে এ পদে নিয়োগ দেয়ার মাধ্যমে ট্রাম্প তার প্রশাসনকে আত্মীয়করণ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়েক আইনের অধীনে জারেড কুশনারকে নিয়োগের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আহ্বান জানানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় এবং অফিস অব গভর্নমেন্ট এথিকস’কে এ বিষয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের হাউজ জুডিশিয়ারি কমিটির সদস্যরা। এ খবর সারা বিশ্বের মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। উল্লেখ্য, ডনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভানকা’কে বিয়ে করেছেন জারেড কুশনার। তার রয়েছে বিরাট ব্যবসায় কর্মকান্ড। তিনি তার ভিতর থেকে কিভাবে ট্রাম্প প্রশাসনে ভূমিকা রাখবেন তা নিয়েও প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। তবে তার আইনজীবী জেমি গোরেলিক এর আগে বলেছেন, যদি হোয়াইট হাউজে কোনো দায়িত্ব দেয়া হয় কুশনারকে তাহলে তিনি পারিবারিক ব্যবস্থা থেকে সরে দাঁড়াবেন। তিনি আরও বলেছেন, কুশনার কেন্দ্রীয় ‘এথিকস’ আইন মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ বিষয়ে কি পদক্ষেপ নিতে হবে সে বিষয়ে তিনি অফিস অব গভর্নমেন্ট এথিকস-এর সঙ্গে শলাপরামর্শ করেছেন। ওয়াশিংটন থেকে অ্যান্থনি জারচার এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ট্রা¤েপর অতি ঘনিষ্ঠতা লাভ করেছেন জারেড কুশনার। এর মধ্য দিয়ে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনে নিজের শক্ত অবস্থান পাকাপোক্ত করেছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে ১৯৬০ এর দশকের আত্মীয়করণ বিরোধী আইন নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে ট্রাম্প টিমের আইনজীবীরা মনে করছেন এক্ষেত্রে যে বাধা আসবে তা কাটিয়ে ওঠার পথ তারা খুঁজে পেয়েছেন। তারা বলছেন, ওই আইন শুধু সরকারি বিভিন্ন সংস্থা বা এজেন্সির জন্য প্রযোজ্য। ওই আইন হোয়াইট হাউজের জন্য প্রযোজ্য নয়। আরও খবর বেরিয়েছে যে, জারেড কুশনার কোনো বেতন ভাতা ছাড়াই দায়িত্ব পালন করবেন হোয়াইট হাউজে। বলাবলি আছে যে, ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিমে জায়গা করে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন নিউ জার্সির গভর্নর ক্রিস ক্রিস্টি। তাকে এ টিম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন জারেড কুশনার। উল্লেখ্য, ক্রিস ক্রিস্টি যখন নিউ জার্সিতে যুক্তরাষ্ট্রের এটর্নি ছিলেন তখন তিনি আয়কর ফাঁকি দেযার জন্য বিচার করেছিলেন জারেড কুশনারের পিতার। তাকে তিনি জেলে পাঠিয়েছিলেন। হয়তো তারই প্রতিশোধ নিয়েছেন কুশনার। মন্ত্রীপরিষদের সাক্ষাতকার ও বিদেশী নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তিনি। নিউ ইয়র্কে ট্রাম্প টাওয়ারের কয়েক ব্লক পরেই রয়েছে ৬৬৬ ফিফথ এভিনিউতে একটি আকাশচুম্বী টাওয়ার। এর মালিক জারেড কুশনার।
কি আছে আত্মীয়করণ বিষয়ক আইনে: আত্মীয়করণ আইনে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বিষয়ে বিধিনিষেধ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতমÑ
১. এ আইনের অধীনে কোনো সরকারি কর্মকর্তা যে সংস্থায় নিজে দায়িত্ব পালন করছেন বা যেখানে তিনি নীতিনির্ধারণের বিষয়টি চর্চা করেন বা নিয়ন্ত্রণ করেন তাতে তিনি কোনো আত্মীয়কে নিয়োগ দিতে পারেন না।
২. ১৯৬৭ সালে এ আইন বিষয়ক বিলে স্বাক্ষর করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসন । ফলে তা আইনে পরিণত হয়।
৩. ১৯৬০ সালে ভাই রবার্টকে এটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন জন এফ কেনেডি। ধারণা করা হয়, এ ঘটনার পরেই এ আইনটি প্রণয়নে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
৪. এ আইনের অধীনে প্রেসিডেন্ট মন্ত্রীপরিষদের কোনো পদে তার কোনো আত্মীয়কে নিয়োগ দিতে পারেন না।
৫. তবে যদি মন্ত্রীপরিষদের বাইরে, যেমন উপদেষ্টা পরিষদে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয় তাহলে সে বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট বিধিনিষেধ উল্লেখ করা হয় নি।
কি আছে আত্মীয়করণ বিষয়ক আইনে: আত্মীয়করণ আইনে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বিষয়ে বিধিনিষেধ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতমÑ
১. এ আইনের অধীনে কোনো সরকারি কর্মকর্তা যে সংস্থায় নিজে দায়িত্ব পালন করছেন বা যেখানে তিনি নীতিনির্ধারণের বিষয়টি চর্চা করেন বা নিয়ন্ত্রণ করেন তাতে তিনি কোনো আত্মীয়কে নিয়োগ দিতে পারেন না।
২. ১৯৬৭ সালে এ আইন বিষয়ক বিলে স্বাক্ষর করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসন । ফলে তা আইনে পরিণত হয়।
৩. ১৯৬০ সালে ভাই রবার্টকে এটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন জন এফ কেনেডি। ধারণা করা হয়, এ ঘটনার পরেই এ আইনটি প্রণয়নে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
৪. এ আইনের অধীনে প্রেসিডেন্ট মন্ত্রীপরিষদের কোনো পদে তার কোনো আত্মীয়কে নিয়োগ দিতে পারেন না।
৫. তবে যদি মন্ত্রীপরিষদের বাইরে, যেমন উপদেষ্টা পরিষদে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয় তাহলে সে বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট বিধিনিষেধ উল্লেখ করা হয় নি।