গাজীপুর; জেলা শহরের দুটি সরকারী স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে যুদ্ধ হয়ে গেলে। কেউ বলছেন ভর্তি যুদ্ধ আবার কেউ বা বলছেন মুষ্টিযুদ্ধ। তবে ফলফল বলছে বেশী ভাল করতে গিয়ে কিছু মন্দ ঢুকে যেতে পারে বলেই সমালোচনা শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের বিশেষ ভূমিকার কারণে সৃষ্ট সূযোগে একটি সুবিধাবাদী চক্র সফল হয়েছেন কি না তা নিয়েও চলছে জল্পনা কল্পনা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে ভর্তির জন্য জয়দেবপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১হাজার ২শ ৬৪ জন পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। রানী বিলাসমনি সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১ হাজার ২’শ৪২ জন পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা দেয়। এর মধ্যে দুটি স্কুলে ৩৬০ জন করে মোট ৭২০ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ন হয়।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ওই দুটি স্কুলের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ফলাফল রাত ৮টার পর থেকেই বিভিন্ন ফটোকপির দোকানে পাওয়া শুরু হয়। রাত ১০টার পর ফলাফল টানানো হয় স্কুলের সামনে।
পরীক্ষার সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরীক্ষার কার্যক্রমের সাথে জড়িতদের সময় দেয়া হয়নি। পরীক্ষার খাতা খুব দ্রুত দেখা হয়েছে। খাতা দেখার পর পুন;নিরীক্ষনের জন্য কয়েক মিনিট দেয়া হয়েছে। অনেক শিক্ষকেরা পুন:নিরীক্ষন না করেই নিরীক্ষন হয়েছে বলে খাতা জমা দিয়েছেন। এতে অনেক মেধাবীরা বাদ পড়েছেন বলে খোদ শিক্ষকদেরই অভিযোগ রয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, তাড়াহুড়ো করে কাজ করায় ভুলের মাত্রা বেশী হতে পারে।
একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গাজীপুর জেলায় মোট ৬টি সরকারী মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে। এর মধ্যে ৪টি স্কুলের পরীক্ষা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। শুধু জেলা সদরের ওই দুটি স্কুলের পরীক্ষা জেলা প্রশাসনের সরাসরি নিয়ন্ত্রনে সম্পন্ন করা হয়। তড়িঘড়ি করে ওই দুটি স্কুলের পরীক্ষা অনুষ্ঠান ও কয়েক ঘন্টার মধ্যে ফলাফল দেয়ার মধ্যে কোন কারণ আছে কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার। একই সঙ্গে অতীতের কোন দূর্নীতি দূর করতে গিয়ে আরো বড় ধরণের কোন কিছু হল কি না তাও তদন্তের বিষয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেক মেধাবী শিশু ভর্তির সূযোগ পেয়েছে। আবার অনেক মেধাবীরা বাদ পড়েছে। মেধাবী নয় এমন অনেকে ভাল ফলাফলও করেছে। যারা উত্তীর্ন হয়েছে তাদের শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ ওই দুটি স্কুলের শিক্ষকদের থেকে কোচিং করেছে। ওই দুটি সরকারী স্কুলের যে কয়জন শিক্ষক ভর্তি কোচিং করেছেন তার মধ্যে রানী বিলাসমনি সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষকের কোচিং থেকে বেশী পরীক্ষার্থী চান্স পেয়েছে।
এমতাবস্থায়, সরকারী স্কুলের শিক্ষকদের কোচিং বন্ধে সরকারী সিদ্ধান্ত থাকা সত্বেও জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রনে শুধুমাত্র দুটি স্কুলের ভর্তি পরীক্ষায় কেন কোচিং প্রাধান্য পেল তা তদন্তের দাবি রাখে।
চলবে–