রংপুর: রংপুরের কাউনিয়া সাবরেজিষ্টারী অফিসের দুর্নীতি থামানো কি অসম্ভব! এই প্রশ্ন এখন কাউনিয়া উপজেলার সাধারণ মানুষের মনে খোঁচা দিচ্ছে অহরহ। রংপুরের কাউনিয়া সাব রেজিষ্টার অফিসে প্রকাশ্যে দুর্নীতি চালাচ্ছে খোদ সাবরেজিষ্টার অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও দলিল লেখক সমিতি।
এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ থাকলেও তারা ওই সাব রেজিষ্টার অফিসে অসহায়। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলেই একটি মহলের অদৃশ্য হাত এসে প্রতিবাদকারীর ওপর হামলা চালায়। আর এ হামলার ঘটনা চলছে হর-হামেশাই। মজলুমদের ধারনা তাদের এ অবস্থা দেখার কেউ নেই। তাই অসহায়ের মত আর্থিক ও শারিরীক জুলুম সহ্য করেই চলছে ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগীদের আভিযোগ ক্ষোদ সাবরেজিষ্টার হলো এই দুর্নীতির হোতা। তিনি সচ্ছ হলে এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া সম্ভব হতো কিন্ত পোড়া কপাল কে শুনবে কার কথা।
কারন উপজেলার সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটিতে কাউনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাহফুজার রহমান মিঠু সাবরেজিষ্টারী অফিসে দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ তুললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি উল্টো গত ১০ ডিসেম্বর রোববার বিকেল ৩ টায় সাবরেজিষ্টার উম্মে সালমা উপজেলা চেয়ারম্যানের অফিসে আপ্যায়িত হয়ে বেজায় খুশি। এ নিয়ে ভুক্তভোগীরা নানা কথা বলছেন।
সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগ পাওয়া যায়, কাউনিয়া সাবরেজিষ্টারী অফিসে ২১আগষ্ট ২০১৬ তারিখে সাবরেজিষ্টার উম্মে সালমা যোগদানের পর থেকেই চলমান দুর্নীতি আরও ভয়াবহ রুপ লাভ করে। সাব রেজিষ্টার নির্বিঘ্নে এই দুর্নীতি চালালেও বার খুটির জোর কোথায় তা এখন এলাকার মানুষকে ভাবিয়ে তুলছে।
কেউ জমি রেজিষ্টারীর জন্য অফিসে ঢুকার প্রাক্কালেই অর্পিত হয় দালালের হাতে তার পর ২‘শ টাকার হলফ নামা কিনতে হয় ২ হাজার টাকায়। এরপর শুরু হয় নানা রকম চাদার দীর্ঘ তালিকা। সমিতির চাদা, আফিস সহকারির চাদা, টিপসই নেয়ার চাদা, স্কুলের চাদা এমন কী মসজিদের চাদা থেকেও রক্ষা নেই এই সাবরেজিষ্টার অফিসে। তথ্য অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায় সাবরেজিষ্টার ৫ টার পর অফিসে কাজ করলে তাকে দিতে হয় প্রতি ঘন্টায় ২০ হাজার টাকা। আর এই বিপুল অংকের বাড়তি টাকা জোগান দেয় দলিল লেখকরা আর তাদের হাতে বলি হয় জমি ক্রেতা বিক্রেতারা। এ ছাড়াও জমির স্থান পরিবর্তন যেমন দোলা কে বাশঝাড়, ভিটা জমিকে দোলা, পুকুরকে আবাদী জমি দেখিয়ে জমিরেজিষ্টারী করে সাব সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হচ্ছে অহরহ।
এ বিষয়ে সাব রেজিষ্টার উম্মে সালমার সাথে কথা বললে তিনি জানান এসব আভিযোগ অসত্য। এ ব্যাপরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর রায় এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, গত মাসের আইন শৃংখলা সভায় এ নিয়ে অভিযোগ এসেছে। সাবরেজিষ্টারকে ডেকে নিয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে রংপুর জেলা রেজিষ্টার মকবুল হোসেন এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, টিপসই নেয়ার টাকা, হলফনামা বেশী দাম, ৫ টার পরে অফিসে কাজ করার ক্ষেত্রে নেয়া টাকা সম্পুর্ন অবৈধ।
তবে ভুক্তভোগীরা বলছেন, এ অনিয়মের শেষ আর কতদূর? তারা এ বিষয়ে উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের তদন্ত কামনা করেছেন।