বাসা ভাড়া দেওয়া ও অন্যান্য বিষয়ে জোনাকি রাসেল বলেন, তাঁর বাবার বাড়িতে টু-লেট টাঙানো ছিল। গত ১ সেপ্টেম্বর মো. ইমতিয়াজ আহমেদ পরিচয় দিয়ে একজন নিচতলার বাসাটি দেখতে আসেন। তখন ওই ব্যক্তি নিজেকে অনলাইন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেন এবং বলেন যে বাসায় তিনি, তাঁর স্ত্রী ও এক বাচ্চা থাকবে। মাঝেমধ্যে স্ত্রীর বোন এসে থাকবেন। ১০ হাজার টাকায় তিনি বাসাটি ভাড়া নেন। ৩ সেপ্টেম্বর পরিবার নিয়ে তিনি সেখানে ওঠেন।
বাড়িওয়ালার মেয়ে দাবি করেন, বাসা ভাড়া দেওয়ার পর তিনি বেশ কয়েকবার ওই বাসায় গেছেন। বাসায় ল্যাপটপ, খাট, ড্রেসিং টেবিল, ফ্রিজ দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘উনারা কখনো বের হতেন না। বাসায় ওঠার সময় বাচ্চার বয়স ছিল ৪০ দিন।’ কেন বের হন না?—জানতে চাইলে বলতেন, হিজড়ারা বাচ্চা দেখলে টাকা চায়। সে কারণে বের হন না। তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে দুজন নারী ওই বাসায় আসতেন। জিজ্ঞেস করলে বলতেন, মা ও এক আত্মীয়। গ্রামের বাড়ি থেকে এসেছেন।’
বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় পরিবারটি জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিয়েছে, ভাড়াটেসংক্রান্ত ফরম পূরণ করেছে এবং সে ফরম থানায় জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান জোনাকি রাসেল।
পুলিশের অভিযান শুরুর বিষয়ে বাড়িওয়ালার মেয়ে বলেন, গতকাল শুক্রবার রাত ১২টার পুলিশ তাঁর বাবার বাড়িতে নক করে। তাঁর মা নিচে নেমে যান। তখন পুলিশ তাঁর কাছে নিচতলার ভাড়াটে সম্পর্কে জানতে চায়। তখন তিনি পুলিশকে বলেন, তাঁর বড় মেয়ে (জোনাকি রাসেল) সব জানেন। তখন তাঁর মা পুলিশকে নিয়ে তাঁর বাসায় যান। তখন তিনি ভাড়াটেদের কাছ থেকে নেওয়া সব কাগজপত্র পুলিশকে দেন। এরপর পুলিশ চলে যায়।
আশকোনায় হাজিক্যাম্পের কাছে বাড়িটি ঘিরে গতকাল দিবাগত রাত থেকে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই বাড়ি থেকে দুই শিশুকে নিয়ে দুজন নারী আত্মসমর্পণ করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ছানোয়ার হোসেনের ভাষ্য, আত্মসমর্পণকারী চারজন হলেন মিরপুরের রূপনগরে পুলিশের অভিযানে নিহত জঙ্গি ও সাবেক মেজর জাহিদের স্ত্রী জেবুন্নাহার শীলা ও তাঁর মেয়ে এবং পলাতক জঙ্গি মুসার স্ত্রী তৃষ্ণা ও তাঁর মেয়ে। বাসার ভেতরে এখনো তিনজন ‘জঙ্গি’ রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন আজিমপুরে অভিযানে নিহত জঙ্গি তানভীর কাদেরির ছেলে।