নারায়গঞ্জ; সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের লড়াই আজ। পুরো দেশবাসীর দৃষ্টি থাকবে এই নির্বাচনের দিকে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে শেষ এই নির্বাচন সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে। ভোটারদের মধ্যে নানা শঙ্কা থাকলেও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের আশ্বাস দিয়েছেন তারা। এদিকে ভোটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকার ঘোষণা দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রধান দুই রাজনৈতিক শিবির আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে তুমুল প্রচারযুদ্ধের পর এখন কেবল ফল জানার অপেক্ষা। মেয়র পদে সাত প্রার্থী লড়লেও লড়াই হচ্ছে নৌকা ও
ধানের শীষে। ভোটের মাঠেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলেছে গত কয়েক দিনে। প্রধান দুই শিবিরই এ নির্বাচনকে নিজেদের মর্যাদার লড়াই বলে মনে করছে। পাঁচ বছর আগে এ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে দেশের প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। এবার তিনি লড়ছেন আওয়ামী লীগের হয়ে। বিএনপির হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে লড়ছেন সাত খুন মামলার আলোচিত আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। দলীয় ও ব্যক্তিগত ইমেজে দুই প্রার্থীই জয়ের আশা দেখছেন। নারায়ণগঞ্জে এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে সিটি নির্বাচন হচ্ছে। মেয়র পদের বাকি পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মাহবুবুর রহমান ইসমাইল ‘কোদাল’, এলডিপির কামাল প্রধান ‘ছাতা’, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাসুম বিল্লাহ ‘হাতপাখা’, কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌস ‘হাতঘড়ি’ এবং ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি এজহারুল হক ‘মিনার’ প্রতীক নিয়ে এ নির্বাচনে লড়ছেন। এই সাতজনের মধ্য থেকেই ঢাকার লাগোয়া এই সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র বেছে নেবেন নারায়ণগঞ্জের পৌনে পাঁচ লাখ ভোটার। ভোটের আগমুহূর্ত পর্যন্ত নির্বাচনের জটিল অঙ্ক মেলাতে দেখা গেছে ভোটারদের। তারা জানান, অনেক ধরনের হিসাব-নিকাশ রয়েছে নির্বাচন কেন্দ্র করে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে। প্রশাসনের ভূমিকার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে যা যা প্রয়োজন তা করার ঘোষণা দেয় আগেই। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আইভি ও সাখাওয়াত হলেও স্থানীয় রাজনীতিও এখানে বড় নিয়ামক হবে জয় পরাজয়ে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকরা মনে করছেন, বিগত সময়ের উন্নয়ন, ব্যক্তি ইমেজ আর দলীয় ভোটে সেলিনা হায়াৎ আইভী দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হবেন। আর বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াতের সমর্থকরা মনে করছেন বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে জনরায়ের প্রকাশ ঘটবে। ‘নীরব ভোট বিপ্লবে’ অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত বিজয়ী হবেন। এ নির্বাচন নিয়ে উত্তাপ থাকলেও প্রচার প্রচারণা ছিল অনেকটা শান্তিপূর্ণ। কিছু অভিযোগ-অনুযোগ থাকলেও শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠ শান্তিপূর্ণই ছিল বলে স্থানীয় ভোটাররা মনে করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচনের ফল প্রভাব ফেলবে সামনের রাজনীতির গতি প্রকৃতি নির্ধারণে। নির্বাচন কমিশনের জন্যও নারায়ণগঞ্জের ভোট বড় এক চ্যালেঞ্জ। এ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে চেষ্টা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সাফল্য কতটুকু আসবে এ নিয়ে সংশয়ও আছে ভোটারদের মাঝে।
১৩০৪ বুথ ঘিরে সকল হিসাব-নিকাশ
শহর, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। ওয়ার্ড সংখ্যা ২৭টি। এর মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জে ১০, শহরে ৮ ও বন্দরে ৯। এবার ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১ জন। নতুন ভোটার বেড়েছে ৭০ হাজার ৭৪২ জন। যার মধ্যে শহরে প্রায় ২৪ হাজার, সিদ্ধিরগঞ্জে ৩২ হাজার এবং বন্দরে ১৬ হাজার। ২০১১ সালের ৩০শে অক্টোবর অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৪ হাজার ১৮৯ জন। সবচেয়ে বেশি ভোটার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। এবং সবচেয়ে কম ভোটার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে। মোট ভোটারের মধ্যে শহরের ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ১৭৫ হাজার ৮১১ ভোট, বন্দরে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৮৩ ভোট ও সিদ্ধিরগঞ্জে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৮০১ ভোট। মোট ১৭৪টি কেন্দ্রের মধ্যে শহরে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৬৬, বন্দরে ৪৮ ও সিদ্ধিরগঞ্জে ৬৬। এই কেন্দ্রগুলোর ভেতরে ১ হাজার ৩০৪টি গোপন বুথে ভোটাররা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন।
আজকের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে গতকাল সকাল থেকে জেলা নির্বাচন অফিস থেকে রিটার্নিং অফিসারের তত্ত্বাবধানে কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি (স্ট্যাম্প প্যাড, মার্কিং সিল, ব্রাশ সিল, গালা, অমোচনীয় কালি) পাঠিয়ে দেয়া হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তারিফুজ্জামান জানিয়েছেন, নাসিক নির্বাচনের ১৭৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩৭টিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বিবেচেনা করে ভোটের নিরাপত্তা সাজানো হয়েছে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে একজন এসআই, একজন এএসআই, ৫ জন পুলিশ কনস্টেবল, পুরুষ সাধারণ আনসার ৭ জন এবং নারী সাধারণ আনসার ৫ জন, ব্যাটালিয়ন আনসার ৩ জন, অস্ত্রসহ আনসার একজন মোতায়েন থাকবেন।
কোন ওয়ার্ডে কত ভোট
নির্বাচন কমিশন সূত্রমতে, ১ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৩০ হাজার ৫৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫ হাজার ৯২ জন ও মহিলা ভোটার ১৫ হাজার ৫০২ জন। ২ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১৮ হাজার ৪৩৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৩৪৭ ও মহিলা ভোটার ৯ হাজার ৮৬ জন। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ৮৯৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৬৬২ ও মহিলা ভোটার ১০ হাজার ২৩৪ জন। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১৪ হাজার ৭৬৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৪৬৪ ও মহিলা ভোটার ৭ হাজার ৩০২ জন। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৩০২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৫১৩ ও মহিলা ভোটার ৬ হাজার ৬৯২ জন। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ৭৮৮। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৯১৩ ও মহিলা ভোটার ৭ হাজার ৮৭৫ জন। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৪৩৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ১৪৮ ও মহিলা ভোটার ৭ হাজার ২৮৮। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার ৭৫৪। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৪ হাজার ৫১৬ ও মহিলা ভোটার ১৪ হাজার ২৩৮ জন। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৬ হাজার ৩৫৫। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ২০৮ ও মহিলা ভোটার ৮ হাজার ১৪৭ জন। ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১২ হাজার ৬০১। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৫৮৯ ও মহিলা ভোটার ৬ হাজার ১২ জন। ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৭ হাজার ৬৮২। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৯৩১ ও মহিলা ভোটার ৮ হাজার ৭৫১ জন। ১২ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২৫ হাজার ২০। এর মধ্যে পরুষ ভোটার ১২ হাজার ৬৪৪ ও মহিলা ভোটার ১২ হাজার ৩৭৬ জন। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩২ হাজার ৮৬৯। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৬ হাজার ৬৭৭ ও মহিলা ভোটার ১৬ হাজার ১৯২ জন। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২২ হাজার ৯৩৫। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ২০ ও মহিলা ভোটার ১০ হাজার ৯১৫ জন। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ৯৮৩। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৫১৫ ও মহিলা ভোটার ৭ হাজার ৯৯০ জন। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২৪ হাজার ৬৯। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ৭৯ ও মহিলা ভোটার ১১ হাজার ৯৯০ জন। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ৭৪৫। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৯০১ ও মহিলা ভোটার ৭ হাজার ৮৪৪ জন। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ১৭। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৮৪১ ও মহিলা ভোটার ১০ হাজার ৬৭৬ জন। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৮ হাজার ৯৪৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪ হাজার ৪৫০ ও মহিলা ভোটার ৪ হাজার ৪৯৬ জন। ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১২ হাজার ৫০৮। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ১৬৩ ও মহিলা ভোটার ৬ হাজার ৩৪৫ জন। ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৫৯৯। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৩৩০ ও মহিলা ভোটার ৭ হাজার ৩৬৯ জন। ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ৫৭৯। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ১৮৮ ও মহিলা ভোটার ১০ হাজার ৩৯১ জন। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৯ হাজার ৭৬১। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৯০০ ও মহিলা ভোটার ৯ হাজার ৮৬১ জন। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩ হাজার ৩২২। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৫৯২ ও মহিলা ভোটার ৬ হাজার ৭৩০ জন। ২৫ ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ৩২১। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪ হাজার ৬৫০ ও মহিলা ভোটার ৪ হাজার ৬৭১ জন।
২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ হাজার ২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ হাজার ৫৯২ ও মহিলা ভোটার ২ হাজার ৪১০ জন। ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ২৪৫। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪ হাজার ৮৩৭ ও মহিলা ভোটার ৪ হাজার ৪০৮ জন।
‘ব্যালট বাক্স লুট প্রশ্নই আসে না’
‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আজ ভোটের ‘ব্যালট বাক্স’ লুট বা ছিনতাইয়ের মতো কোন ঘটনা ঘটবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান। গতকাল বিকাল ৪টায় নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া জিয়া হলের সামনে নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে তিনি এসব কথা বলেন। ডিআইজির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, পুলিশ সুপার মঈনুল হক, রিটার্নিং অফিসার নুরুজ্জামান তালুকদার প্রমুখ। পরে তাঁরা নির্বাচনে ভোট দিতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে লিফলেট বিলি করেন।
ওই সময়ে সাংবাদিকদরা ‘ব্যালট বাক্স লুট কিংবা ছিনতাইয়ের’ কোনো আশঙ্কা আছে কী না জানতে চাইলে ডিআইজি বলেন, ‘প্রশ্নই আসে না’।
তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে আমরা প্রস্তুত। সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হবে যা একটি মডেল হিসেবে থাকবে সেটা আমি সকলকে আশ্বস্ত করতে চাই। আমরা চাই না এ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হউক। পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য হয় সে নির্বাচনই হবে।
ডিআইজি বলেন, কাল (আজ) সকাল থেকে আপনারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারবেন, সবাইকে বার্তা পৌঁছে দেন যেন সবাই ঘর থেকে বেরিয়ে ভোটকেন্দ্রে এসে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। নির্বাচন যেন গ্রহণযোগ্য হয় সেজন্য আমাদের এখানে এসে পর্যবেক্ষণ করা। আমরা কোনো কিছুকেই চ্যালেঞ্জ মনে করছি না, সবকিছুই স্বাভাবিক হবে।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচন সুশৃঙ্খলভাবে ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা সতর্ক থাকার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন যদি মনে করেন তবে যেকোনো ওসি পরিবর্তন করতে পারেন এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে পরিবর্তন করার কোনো প্রয়োজন আমরা অনুভব করছি না।
২৭নং ওয়ার্ডে র্যাবের ২৭ টিম
আজকের নির্বাচনকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়া হবে। নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করা হবে নাসিকের ২৭টি ওয়ার্ড। এজন্য গতকাল সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে চেক পোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি করেছে র্যাব সদস্যরা। পাশাপাশি ডগ স্কোয়াড ও বোম্ব ডিসপজাল টিম নিয়ে টহল দিয়েছে তারা। গতকাল দুপুরে শহরের চাষাঢ়া মোড়ে মহড়া শেষে র্যাব-কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন।
এর আগে বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান অভিযোগ করেন, নির্বাচন নিয়ে তাঁর শঙ্কা রয়েছে। ওই প্রসঙ্গে র্যাব-১১ এর কোম্পানি উপ-অধিনায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নরেশ চাকমা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের আশঙ্কা আমরা দেখছি না। আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে অন্যান্য আরো অনেক বাহিনী কাজ করছে। তবে আমরা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে কাজ করবো। ২৭টি ওয়ার্ডে ২৭টি টিম কাজ করছে। এ ছাড়াও ২৭টি ওয়ার্ডকে তিনটি জোনে ভাগ করে ৬০০ সদস্য কাজ করবে। তারা সার্বক্ষণিক কেন্দ্রগুলোতে টহল দিবে।’
বুধবারের টহল বিষয়ে নরেশ চাকমা আরো বলেন, ‘নিরাপত্তার জন্য এ টহল শুরু হয়েছে। এখানে ১২টি পেট্রোল, ২টি বোম্ব ডিসপজাল ও ২টি ডগ স্কোয়াড টিম রয়েছে। যদি কেউ বোমা ও অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তাহলে এগুলোর সাহায্যে বের করা সম্ভব। এক পেট্রোলে ৮ জন সদস্য রয়েছেন। এ অভিযান নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময়ে পরিচালনা করা হবে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন র্যাব-১১ এর সহকারী পুলিশ সুপার শাহ শিবলী সাদিক, মশিউর রহমান ও আলেপ উদ্দিন প্রমুখ।
আশা-শঙ্কার দোলাচালে সাখাওয়াত
নির্বাচনের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের সময় কেটেছে অনেকটা সেভাবে। নির্বাচনী ব্যস্ততায়। তার দিনের শুরু এবং শেষটাও ছিল অন্য দিনের মতো স্বাভাবিক। ভোটের আগের দিন স্বতঃস্ফূর্ত দেখা গেছে এই প্রার্থীকে। তবে সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ নিয়ে আশা ও আশঙ্কার দোলাচালে রয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, তফশিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত বড় কোনো সহিংসতা বা দুর্ঘটনা ঘটেনি। কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। ভোটের দিনও আশঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা নিরাপত্তার জন্য বারবার সেনাবাহিনী নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তো নিজেকে আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছে। পুলিশসহ অন্য সাধারণ বাহিনী দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হবে বলে ধরে নিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোট। আমি আশা করবো এর শেষ ভালোও রক্ষা হবে। ধানের শীষের পক্ষে জোয়ার এসেছে। সুষ্ঠু ভোট হলে আমি জয়ী হবো। ভোট সুষ্ঠু না হয়ে যদি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দেয়া হয় তার জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায় নিতে হবে।
এদিকে গতকাল বুধবার নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ থাকলেও নির্বাচনী কাজেই ব্যস্ত সময় কাটান তিনি। তিন বছর ধরেই তিনি ভাড়ায় থাকেন নারায়ণগঞ্জ শহরের কাজীপাড়ার আমেনা মঞ্জিলের ষষ্ঠ তলার একটি ফ্ল্যাটে। তার সঙ্গে থাকেন ৭৫ বছর বয়সী মা হোসনে আরা বেগম, স্ত্রী অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার ও এ লেভেল পড়ুয়া ছেলে শাহরিয়ার খান। তার পিতা মো. ফজলুর রহমান অবশ্য আগেই মারা যান। গতরাতে বাসায় মা না থাকলেও বাকিরা ছিলেন। তাদের সঙ্গে রাত কাটান তিনি। সাধারণত তিনি রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘুমালেও নির্বাচনে অংশ নেয়ার পর থেকে তা এক ঘণ্টা পেছায়। এখন ঘুমান রাত দেড়টার দিকে। গতকালও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। ঘড়িতে এলার্ম দিয়ে ভোট ৪টা ৫০ মিনিটে ঘুম থেকে জাগেন। ঘুম থেকে জাগার প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর তিনি বাসা থেকে বের হন। বাসার নিচ তলায় ৫ পুলিশ সদস্যকে নিরাপত্তা দিতে দেখা যায়। বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমে মাছদাইরে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপি সভাপতি তৈমূর আলম খন্দকারের বাসায় যান। তার সঙ্গে দেখা করেন। তারপর চেম্বার রোডে সনাতন পাল লেনে নারায়ণগঞ্জের পরিচিত আড্ডার স্থান বোস কেবিনে যান। সেখানে আড্ডা দেন আধঘণ্টা মতো। অন্যদের সঙ্গে চা পান করেন। সেখান থেকে যান জেলা বিএনপি কার্যালয়ে। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন। নির্বাচনী কার্যক্রম তদারক করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা মতো অপেক্ষার পর দুপুরের আগে যান সদরে পুরাতন কোর্ট মসজিদের বিপরীতে দিপু টাওয়ারের নিচতলায় তার নির্বাচনী মিডিয়া সেলে। সেখানেও তিনি নির্বাচনী কার্যক্রম তদারক করেন। দুপুরে কোর্ট মসজিদে জোহরের নামাজ পড়েন। তারপর যান নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে। সেখানেও আধঘণ্টার বেশি সময় কাটান। তারপর যান সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জ ক্লাব মার্কেটের তৃতীয় তলায় নিজের চেম্বারে। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর বিকালে ওই স্থান ছাড়েন এই ব্যস্ত প্রার্থী। তিনি এদিক ওদিক যাওয়ার সময় তার সঙ্গে একাধিক পুলিশ সদস্যকে সাদা পোশাকে দেখা গেছে।
এদিকে জেলা বিএনপি কার্যালয়, নির্বাচনী মিডিয়া সেল এবং তার চেম্বারে নেতাকর্মীদের ভোটের দিনের জন্য দফায় দফায় মিটিং, আলোচনা ও নানা প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। ২৭টি ওয়ার্ডের ১৭৪ ভোট কেন্দ্রের ১ হাজার ৩০৪টি ভোটকক্ষের জন্য ২ হাজারের বেশি পোলিং এজেন্ট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে স্থানীয় নেতাদের নিয়ে কেন্দ্র কমিটি করেছে বিএনপি। প্রত্যেক কেন্দ্র কমিটির কাছে ভোটার লিস্ট, ভোটার স্লিপসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি পৌঁছানো হয়েছে।
প্রস্তুতি বিষয়ে তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় প্রস্তুত। তাদের কাছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি পৌঁছানোসহ প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ধানের শীষের পক্ষে জোয়ার এসেছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ধানের শীষ জিতবে। নির্বাচনী সুষ্ঠু না হলে প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা এজন্য দায়ী থাকবেন।
সকালেই ভোট দেবেন ৭ মেয়র প্রার্থী
এবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ প্রার্থী। তারা সবাই সকালেই ভোট দেবেন। ভোট দেবেন নিজ নিজ কেন্দ্রে। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়বেন পুরো নগরীর কেন্দ্র পরিদর্শনে। গতকাল বুধবার ৭ মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে তা জানা গেছে।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী দেওভোগের চেয়ারম্যান বাড়িতে থাকেন। তিনি একই এলাকার ভোটার। তার কেন্দ্র ওই এলাকায় শিশু পার্ক স্কুলে। তিনি সকাল ৯ টার দিকে ওই কেন্দ্রে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে জানান।
তিনি মানবজমিনকে বলেন, আমি সকাল ন’টার দিকে বাড়ির পাশের কেন্দ্রে ভোট দেব। তারপর বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শনে বের হবো।
তারও আগে ভোট দেয়ার পরিকল্পনা বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. সাখাওয়াত হোসেন খানের। তিনি সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরুর পর পরই ভোট দিতে চান। তার ভোট কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জে মাছদাইর আদর্শ স্কুলে।
তিনি বলেন, এরপর অন্যান্য ভোট কেন্দ্রের কী পরিস্থিত তার খোঁজ খবর নিতে বের হবো। দেখবো ভোটাররা কীভাবে ভোট দিচ্ছে। এজেন্ট-কর্মী-সমর্থকরা কোন অসুবিধায় পড়ছে কিনা।
বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইলের প্রতীক কোদাল। তিনি সকাল ৯ টার দিকে ভোট দেবেন বলে জানান। তার ভোট কেন্দ্র হলো মাছদাইর এলাকার ঈদগাহের পাশে নারায়ণগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। তিনি প্রধান দু’ই প্রার্থীর পক্ষে ভোট কেনা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মো. মাছুম বিল্লাহ লড়ছেন হাতপাখা প্রতীক নিয়ে। তিনি ১২ নম্বর ওয়ার্ডের খানপুর এলাকার বার একাডেমী স্কুলে সকাল ১০টার দিকে ভোট দিবেন বলে জানালেন।
ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মুফতি এজহারুল হকের নির্বাচনী প্রতীক মিনার। তিনি সকাল ১০টার দিকে চাষাড়ার বাগিচা নাথ মহল্লার ভোট কেন্দ্রে ভোট দিয়ে কেন্দ্র পরিদর্শনের বের হবেন বলে উল্লেখ করেন।
এদিকে ভোটের কয়েকদিন আগে চলতি সপ্তাহেই বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোটেক মো. সাখাওয়াত হোসেন খানকে সমর্থন জানিয়ে দু’প্রার্থী সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্ধারিত দিনের পরে তা হওয়ায় তারা এখনও বৈধ প্রার্থী। ব্যালটে থাকছে তাদের প্রতীকও। তারা হলেন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রার্থী কামাল প্রধান ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী মো. রাশেদ ফেরদৌস। তাদের দলীয় নির্বাচনী প্রতীক যথাক্রমে ছাতা ও হাতঘড়ি। এর মধ্যে কামাল প্রধান দেওভোগ এলাকার এলেম রোডে প্রাইমারি স্কুলে সকালে ৯টার দিকে ভোট দেবেন। আর রাশেদ ফেরদৌসও সকালে নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিল কলেজ কেন্দ্রে তার ভোটাধিকার প্রদান করবেন।
সরে দাঁড়ানো প্রার্থীদের নির্বাচনী সুবিধা পাচ্ছেন সাখাওয়াত : ২০ দলীয় জোটের অন্তর্ভূক্ত এলডিপি প্রার্থী কামাল প্রধান নির্বাচনের ৫ দিন আগে গত ১৭ নভেম্বর বিএনপি প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানকে সমর্থন জানিয়ে সরে পড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর দু’দিন পর একই ঘোষণা আসে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী মো. রাশেদ ফেরদৌসের পক্ষ থেকেও। কিন্তু এখনও তারা বৈধ প্রার্থী। ব্যালটে থাকছে দু’জনের ছাতা ও হাতঘড়ি প্রতীক। কিন্তু তারা ও তাদের সমর্থকরা বিএনপিকে ভোট দেবেন বলে জানান। ভোটের দিন তারাও কেন্দ্রে এজেন্ট দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। দু’জনেই এজেন্টও দিচ্ছেন। তবে প্রার্থী হিসেবে তারা নিজেরা ও তাদের এজেন্টরা বিএনপি প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করবে বলে জানান দুজনই। গতকাল বিকেলে তাদের দু’জনকেই বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গে দেখা গেছে।
কামাল প্রধান বলেন, আমি ১০০ কেন্দ্রে এজেন্ট দেব। অবশ্য তাদের সহযোগিতা বিএনপি প্রার্থী পাবে। মাঠে আমার পোস্টার-প্রতীক থাকলেও আমার কর্মী-সমর্থকরাও ভোটের দিন ধানের শীষ প্রতীক বহন করবে। আমার চীফ এজেন্ট নুরুল ইসলাম সর্দার। তিনিও আমাদের জোটের প্রার্থীকে এগিয়ে নেয়ার জন্য কাজ করবেন।
সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়া অপর প্রার্থী রাশেদ ফেরদৌসের প্রধান এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে সাখাওয়াতের নির্বাচনী কার্যক্রম সমন্বয়ে দায়িত্বপালনকারী অ্যাডভোটেক সরকার হুমায়ুন কবিরকে।
এ বিষয়টি স্বীকার করে রাশেদ ফেরদৌস বলেন, আমি প্রধান এজেন্ট দিলেও কেন্দ্রে কোনো এজেন্ট দিচ্ছি না। তবে ভোট দেয়ার পর থেকে আমি মাঠে থাকবো।
কোন প্রার্থীর কত এজেন্ট : এদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর নৌকা প্রতীকের পক্ষে আগামিকাল ভোট গ্রহণের দিন ১ হাজার ৩০৪ ভোট কেন্দ্রের সবক’টিতেই এজেন্ট নিয়োগ দেয়ার কথা রয়েছে। বিএনপি প্রার্থী সাখাওয়াতের একই প্রস্তুতি থাকলেও এজন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে। অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল নিয়োগ দিচ্ছেন ৫ থেকে ৭০০ এজেন্ট। মাসুম বিল্লাহ ও এজাহারুল হক দু’জনেই ৪ শতাধিক করে এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হবে বলেন জানান। কামাল প্রধান সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও তার ১০০ এজেন্ট থাকছে সম পরিমাণ ভোটকক্ষে। অপর দিকে রাশেদ ফেরদৌস প্রধান এজেন্ট দিলেও ভোটকক্ষে কোনো এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হবে না বলে নিশ্চিত করেছেন।
ধানের শীষে। ভোটের মাঠেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলেছে গত কয়েক দিনে। প্রধান দুই শিবিরই এ নির্বাচনকে নিজেদের মর্যাদার লড়াই বলে মনে করছে। পাঁচ বছর আগে এ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে দেশের প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। এবার তিনি লড়ছেন আওয়ামী লীগের হয়ে। বিএনপির হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে লড়ছেন সাত খুন মামলার আলোচিত আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। দলীয় ও ব্যক্তিগত ইমেজে দুই প্রার্থীই জয়ের আশা দেখছেন। নারায়ণগঞ্জে এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে সিটি নির্বাচন হচ্ছে। মেয়র পদের বাকি পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মাহবুবুর রহমান ইসমাইল ‘কোদাল’, এলডিপির কামাল প্রধান ‘ছাতা’, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাসুম বিল্লাহ ‘হাতপাখা’, কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌস ‘হাতঘড়ি’ এবং ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি এজহারুল হক ‘মিনার’ প্রতীক নিয়ে এ নির্বাচনে লড়ছেন। এই সাতজনের মধ্য থেকেই ঢাকার লাগোয়া এই সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র বেছে নেবেন নারায়ণগঞ্জের পৌনে পাঁচ লাখ ভোটার। ভোটের আগমুহূর্ত পর্যন্ত নির্বাচনের জটিল অঙ্ক মেলাতে দেখা গেছে ভোটারদের। তারা জানান, অনেক ধরনের হিসাব-নিকাশ রয়েছে নির্বাচন কেন্দ্র করে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে। প্রশাসনের ভূমিকার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে যা যা প্রয়োজন তা করার ঘোষণা দেয় আগেই। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আইভি ও সাখাওয়াত হলেও স্থানীয় রাজনীতিও এখানে বড় নিয়ামক হবে জয় পরাজয়ে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকরা মনে করছেন, বিগত সময়ের উন্নয়ন, ব্যক্তি ইমেজ আর দলীয় ভোটে সেলিনা হায়াৎ আইভী দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হবেন। আর বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াতের সমর্থকরা মনে করছেন বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে জনরায়ের প্রকাশ ঘটবে। ‘নীরব ভোট বিপ্লবে’ অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত বিজয়ী হবেন। এ নির্বাচন নিয়ে উত্তাপ থাকলেও প্রচার প্রচারণা ছিল অনেকটা শান্তিপূর্ণ। কিছু অভিযোগ-অনুযোগ থাকলেও শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠ শান্তিপূর্ণই ছিল বলে স্থানীয় ভোটাররা মনে করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচনের ফল প্রভাব ফেলবে সামনের রাজনীতির গতি প্রকৃতি নির্ধারণে। নির্বাচন কমিশনের জন্যও নারায়ণগঞ্জের ভোট বড় এক চ্যালেঞ্জ। এ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে চেষ্টা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সাফল্য কতটুকু আসবে এ নিয়ে সংশয়ও আছে ভোটারদের মাঝে।
১৩০৪ বুথ ঘিরে সকল হিসাব-নিকাশ
শহর, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। ওয়ার্ড সংখ্যা ২৭টি। এর মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জে ১০, শহরে ৮ ও বন্দরে ৯। এবার ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১ জন। নতুন ভোটার বেড়েছে ৭০ হাজার ৭৪২ জন। যার মধ্যে শহরে প্রায় ২৪ হাজার, সিদ্ধিরগঞ্জে ৩২ হাজার এবং বন্দরে ১৬ হাজার। ২০১১ সালের ৩০শে অক্টোবর অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৪ হাজার ১৮৯ জন। সবচেয়ে বেশি ভোটার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। এবং সবচেয়ে কম ভোটার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে। মোট ভোটারের মধ্যে শহরের ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ১৭৫ হাজার ৮১১ ভোট, বন্দরে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৮৩ ভোট ও সিদ্ধিরগঞ্জে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৮০১ ভোট। মোট ১৭৪টি কেন্দ্রের মধ্যে শহরে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৬৬, বন্দরে ৪৮ ও সিদ্ধিরগঞ্জে ৬৬। এই কেন্দ্রগুলোর ভেতরে ১ হাজার ৩০৪টি গোপন বুথে ভোটাররা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন।
আজকের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে গতকাল সকাল থেকে জেলা নির্বাচন অফিস থেকে রিটার্নিং অফিসারের তত্ত্বাবধানে কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি (স্ট্যাম্প প্যাড, মার্কিং সিল, ব্রাশ সিল, গালা, অমোচনীয় কালি) পাঠিয়ে দেয়া হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তারিফুজ্জামান জানিয়েছেন, নাসিক নির্বাচনের ১৭৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩৭টিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বিবেচেনা করে ভোটের নিরাপত্তা সাজানো হয়েছে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে একজন এসআই, একজন এএসআই, ৫ জন পুলিশ কনস্টেবল, পুরুষ সাধারণ আনসার ৭ জন এবং নারী সাধারণ আনসার ৫ জন, ব্যাটালিয়ন আনসার ৩ জন, অস্ত্রসহ আনসার একজন মোতায়েন থাকবেন।
কোন ওয়ার্ডে কত ভোট
নির্বাচন কমিশন সূত্রমতে, ১ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৩০ হাজার ৫৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫ হাজার ৯২ জন ও মহিলা ভোটার ১৫ হাজার ৫০২ জন। ২ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১৮ হাজার ৪৩৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৩৪৭ ও মহিলা ভোটার ৯ হাজার ৮৬ জন। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ৮৯৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৬৬২ ও মহিলা ভোটার ১০ হাজার ২৩৪ জন। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১৪ হাজার ৭৬৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৪৬৪ ও মহিলা ভোটার ৭ হাজার ৩০২ জন। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৩০২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৫১৩ ও মহিলা ভোটার ৬ হাজার ৬৯২ জন। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ৭৮৮। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৯১৩ ও মহিলা ভোটার ৭ হাজার ৮৭৫ জন। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৪৩৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ১৪৮ ও মহিলা ভোটার ৭ হাজার ২৮৮। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার ৭৫৪। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৪ হাজার ৫১৬ ও মহিলা ভোটার ১৪ হাজার ২৩৮ জন। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৬ হাজার ৩৫৫। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ২০৮ ও মহিলা ভোটার ৮ হাজার ১৪৭ জন। ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১২ হাজার ৬০১। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৫৮৯ ও মহিলা ভোটার ৬ হাজার ১২ জন। ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৭ হাজার ৬৮২। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৯৩১ ও মহিলা ভোটার ৮ হাজার ৭৫১ জন। ১২ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২৫ হাজার ২০। এর মধ্যে পরুষ ভোটার ১২ হাজার ৬৪৪ ও মহিলা ভোটার ১২ হাজার ৩৭৬ জন। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩২ হাজার ৮৬৯। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৬ হাজার ৬৭৭ ও মহিলা ভোটার ১৬ হাজার ১৯২ জন। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২২ হাজার ৯৩৫। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ২০ ও মহিলা ভোটার ১০ হাজার ৯১৫ জন। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ৯৮৩। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৫১৫ ও মহিলা ভোটার ৭ হাজার ৯৯০ জন। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২৪ হাজার ৬৯। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ৭৯ ও মহিলা ভোটার ১১ হাজার ৯৯০ জন। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ৭৪৫। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৯০১ ও মহিলা ভোটার ৭ হাজার ৮৪৪ জন। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ১৭। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৮৪১ ও মহিলা ভোটার ১০ হাজার ৬৭৬ জন। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৮ হাজার ৯৪৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪ হাজার ৪৫০ ও মহিলা ভোটার ৪ হাজার ৪৯৬ জন। ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১২ হাজার ৫০৮। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ১৬৩ ও মহিলা ভোটার ৬ হাজার ৩৪৫ জন। ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৫৯৯। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৩৩০ ও মহিলা ভোটার ৭ হাজার ৩৬৯ জন। ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ৫৭৯। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ১৮৮ ও মহিলা ভোটার ১০ হাজার ৩৯১ জন। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৯ হাজার ৭৬১। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৯০০ ও মহিলা ভোটার ৯ হাজার ৮৬১ জন। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩ হাজার ৩২২। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৫৯২ ও মহিলা ভোটার ৬ হাজার ৭৩০ জন। ২৫ ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ৩২১। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪ হাজার ৬৫০ ও মহিলা ভোটার ৪ হাজার ৬৭১ জন।
২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ হাজার ২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ হাজার ৫৯২ ও মহিলা ভোটার ২ হাজার ৪১০ জন। ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ২৪৫। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪ হাজার ৮৩৭ ও মহিলা ভোটার ৪ হাজার ৪০৮ জন।
‘ব্যালট বাক্স লুট প্রশ্নই আসে না’
‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আজ ভোটের ‘ব্যালট বাক্স’ লুট বা ছিনতাইয়ের মতো কোন ঘটনা ঘটবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান। গতকাল বিকাল ৪টায় নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া জিয়া হলের সামনে নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে তিনি এসব কথা বলেন। ডিআইজির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, পুলিশ সুপার মঈনুল হক, রিটার্নিং অফিসার নুরুজ্জামান তালুকদার প্রমুখ। পরে তাঁরা নির্বাচনে ভোট দিতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে লিফলেট বিলি করেন।
ওই সময়ে সাংবাদিকদরা ‘ব্যালট বাক্স লুট কিংবা ছিনতাইয়ের’ কোনো আশঙ্কা আছে কী না জানতে চাইলে ডিআইজি বলেন, ‘প্রশ্নই আসে না’।
তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে আমরা প্রস্তুত। সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হবে যা একটি মডেল হিসেবে থাকবে সেটা আমি সকলকে আশ্বস্ত করতে চাই। আমরা চাই না এ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হউক। পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য হয় সে নির্বাচনই হবে।
ডিআইজি বলেন, কাল (আজ) সকাল থেকে আপনারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারবেন, সবাইকে বার্তা পৌঁছে দেন যেন সবাই ঘর থেকে বেরিয়ে ভোটকেন্দ্রে এসে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। নির্বাচন যেন গ্রহণযোগ্য হয় সেজন্য আমাদের এখানে এসে পর্যবেক্ষণ করা। আমরা কোনো কিছুকেই চ্যালেঞ্জ মনে করছি না, সবকিছুই স্বাভাবিক হবে।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচন সুশৃঙ্খলভাবে ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা সতর্ক থাকার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন যদি মনে করেন তবে যেকোনো ওসি পরিবর্তন করতে পারেন এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে পরিবর্তন করার কোনো প্রয়োজন আমরা অনুভব করছি না।
২৭নং ওয়ার্ডে র্যাবের ২৭ টিম
আজকের নির্বাচনকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়া হবে। নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করা হবে নাসিকের ২৭টি ওয়ার্ড। এজন্য গতকাল সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে চেক পোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি করেছে র্যাব সদস্যরা। পাশাপাশি ডগ স্কোয়াড ও বোম্ব ডিসপজাল টিম নিয়ে টহল দিয়েছে তারা। গতকাল দুপুরে শহরের চাষাঢ়া মোড়ে মহড়া শেষে র্যাব-কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন।
এর আগে বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান অভিযোগ করেন, নির্বাচন নিয়ে তাঁর শঙ্কা রয়েছে। ওই প্রসঙ্গে র্যাব-১১ এর কোম্পানি উপ-অধিনায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নরেশ চাকমা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের আশঙ্কা আমরা দেখছি না। আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে অন্যান্য আরো অনেক বাহিনী কাজ করছে। তবে আমরা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে কাজ করবো। ২৭টি ওয়ার্ডে ২৭টি টিম কাজ করছে। এ ছাড়াও ২৭টি ওয়ার্ডকে তিনটি জোনে ভাগ করে ৬০০ সদস্য কাজ করবে। তারা সার্বক্ষণিক কেন্দ্রগুলোতে টহল দিবে।’
বুধবারের টহল বিষয়ে নরেশ চাকমা আরো বলেন, ‘নিরাপত্তার জন্য এ টহল শুরু হয়েছে। এখানে ১২টি পেট্রোল, ২টি বোম্ব ডিসপজাল ও ২টি ডগ স্কোয়াড টিম রয়েছে। যদি কেউ বোমা ও অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তাহলে এগুলোর সাহায্যে বের করা সম্ভব। এক পেট্রোলে ৮ জন সদস্য রয়েছেন। এ অভিযান নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময়ে পরিচালনা করা হবে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন র্যাব-১১ এর সহকারী পুলিশ সুপার শাহ শিবলী সাদিক, মশিউর রহমান ও আলেপ উদ্দিন প্রমুখ।
আশা-শঙ্কার দোলাচালে সাখাওয়াত
নির্বাচনের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের সময় কেটেছে অনেকটা সেভাবে। নির্বাচনী ব্যস্ততায়। তার দিনের শুরু এবং শেষটাও ছিল অন্য দিনের মতো স্বাভাবিক। ভোটের আগের দিন স্বতঃস্ফূর্ত দেখা গেছে এই প্রার্থীকে। তবে সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ নিয়ে আশা ও আশঙ্কার দোলাচালে রয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, তফশিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত বড় কোনো সহিংসতা বা দুর্ঘটনা ঘটেনি। কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। ভোটের দিনও আশঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা নিরাপত্তার জন্য বারবার সেনাবাহিনী নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তো নিজেকে আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছে। পুলিশসহ অন্য সাধারণ বাহিনী দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হবে বলে ধরে নিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোট। আমি আশা করবো এর শেষ ভালোও রক্ষা হবে। ধানের শীষের পক্ষে জোয়ার এসেছে। সুষ্ঠু ভোট হলে আমি জয়ী হবো। ভোট সুষ্ঠু না হয়ে যদি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দেয়া হয় তার জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায় নিতে হবে।
এদিকে গতকাল বুধবার নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ থাকলেও নির্বাচনী কাজেই ব্যস্ত সময় কাটান তিনি। তিন বছর ধরেই তিনি ভাড়ায় থাকেন নারায়ণগঞ্জ শহরের কাজীপাড়ার আমেনা মঞ্জিলের ষষ্ঠ তলার একটি ফ্ল্যাটে। তার সঙ্গে থাকেন ৭৫ বছর বয়সী মা হোসনে আরা বেগম, স্ত্রী অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার ও এ লেভেল পড়ুয়া ছেলে শাহরিয়ার খান। তার পিতা মো. ফজলুর রহমান অবশ্য আগেই মারা যান। গতরাতে বাসায় মা না থাকলেও বাকিরা ছিলেন। তাদের সঙ্গে রাত কাটান তিনি। সাধারণত তিনি রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘুমালেও নির্বাচনে অংশ নেয়ার পর থেকে তা এক ঘণ্টা পেছায়। এখন ঘুমান রাত দেড়টার দিকে। গতকালও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। ঘড়িতে এলার্ম দিয়ে ভোট ৪টা ৫০ মিনিটে ঘুম থেকে জাগেন। ঘুম থেকে জাগার প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর তিনি বাসা থেকে বের হন। বাসার নিচ তলায় ৫ পুলিশ সদস্যকে নিরাপত্তা দিতে দেখা যায়। বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমে মাছদাইরে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপি সভাপতি তৈমূর আলম খন্দকারের বাসায় যান। তার সঙ্গে দেখা করেন। তারপর চেম্বার রোডে সনাতন পাল লেনে নারায়ণগঞ্জের পরিচিত আড্ডার স্থান বোস কেবিনে যান। সেখানে আড্ডা দেন আধঘণ্টা মতো। অন্যদের সঙ্গে চা পান করেন। সেখান থেকে যান জেলা বিএনপি কার্যালয়ে। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন। নির্বাচনী কার্যক্রম তদারক করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা মতো অপেক্ষার পর দুপুরের আগে যান সদরে পুরাতন কোর্ট মসজিদের বিপরীতে দিপু টাওয়ারের নিচতলায় তার নির্বাচনী মিডিয়া সেলে। সেখানেও তিনি নির্বাচনী কার্যক্রম তদারক করেন। দুপুরে কোর্ট মসজিদে জোহরের নামাজ পড়েন। তারপর যান নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে। সেখানেও আধঘণ্টার বেশি সময় কাটান। তারপর যান সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জ ক্লাব মার্কেটের তৃতীয় তলায় নিজের চেম্বারে। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর বিকালে ওই স্থান ছাড়েন এই ব্যস্ত প্রার্থী। তিনি এদিক ওদিক যাওয়ার সময় তার সঙ্গে একাধিক পুলিশ সদস্যকে সাদা পোশাকে দেখা গেছে।
এদিকে জেলা বিএনপি কার্যালয়, নির্বাচনী মিডিয়া সেল এবং তার চেম্বারে নেতাকর্মীদের ভোটের দিনের জন্য দফায় দফায় মিটিং, আলোচনা ও নানা প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। ২৭টি ওয়ার্ডের ১৭৪ ভোট কেন্দ্রের ১ হাজার ৩০৪টি ভোটকক্ষের জন্য ২ হাজারের বেশি পোলিং এজেন্ট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে স্থানীয় নেতাদের নিয়ে কেন্দ্র কমিটি করেছে বিএনপি। প্রত্যেক কেন্দ্র কমিটির কাছে ভোটার লিস্ট, ভোটার স্লিপসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি পৌঁছানো হয়েছে।
প্রস্তুতি বিষয়ে তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় প্রস্তুত। তাদের কাছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি পৌঁছানোসহ প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ধানের শীষের পক্ষে জোয়ার এসেছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ধানের শীষ জিতবে। নির্বাচনী সুষ্ঠু না হলে প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা এজন্য দায়ী থাকবেন।
সকালেই ভোট দেবেন ৭ মেয়র প্রার্থী
এবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ প্রার্থী। তারা সবাই সকালেই ভোট দেবেন। ভোট দেবেন নিজ নিজ কেন্দ্রে। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়বেন পুরো নগরীর কেন্দ্র পরিদর্শনে। গতকাল বুধবার ৭ মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে তা জানা গেছে।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী দেওভোগের চেয়ারম্যান বাড়িতে থাকেন। তিনি একই এলাকার ভোটার। তার কেন্দ্র ওই এলাকায় শিশু পার্ক স্কুলে। তিনি সকাল ৯ টার দিকে ওই কেন্দ্রে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে জানান।
তিনি মানবজমিনকে বলেন, আমি সকাল ন’টার দিকে বাড়ির পাশের কেন্দ্রে ভোট দেব। তারপর বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শনে বের হবো।
তারও আগে ভোট দেয়ার পরিকল্পনা বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. সাখাওয়াত হোসেন খানের। তিনি সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরুর পর পরই ভোট দিতে চান। তার ভোট কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জে মাছদাইর আদর্শ স্কুলে।
তিনি বলেন, এরপর অন্যান্য ভোট কেন্দ্রের কী পরিস্থিত তার খোঁজ খবর নিতে বের হবো। দেখবো ভোটাররা কীভাবে ভোট দিচ্ছে। এজেন্ট-কর্মী-সমর্থকরা কোন অসুবিধায় পড়ছে কিনা।
বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইলের প্রতীক কোদাল। তিনি সকাল ৯ টার দিকে ভোট দেবেন বলে জানান। তার ভোট কেন্দ্র হলো মাছদাইর এলাকার ঈদগাহের পাশে নারায়ণগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। তিনি প্রধান দু’ই প্রার্থীর পক্ষে ভোট কেনা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মো. মাছুম বিল্লাহ লড়ছেন হাতপাখা প্রতীক নিয়ে। তিনি ১২ নম্বর ওয়ার্ডের খানপুর এলাকার বার একাডেমী স্কুলে সকাল ১০টার দিকে ভোট দিবেন বলে জানালেন।
ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মুফতি এজহারুল হকের নির্বাচনী প্রতীক মিনার। তিনি সকাল ১০টার দিকে চাষাড়ার বাগিচা নাথ মহল্লার ভোট কেন্দ্রে ভোট দিয়ে কেন্দ্র পরিদর্শনের বের হবেন বলে উল্লেখ করেন।
এদিকে ভোটের কয়েকদিন আগে চলতি সপ্তাহেই বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোটেক মো. সাখাওয়াত হোসেন খানকে সমর্থন জানিয়ে দু’প্রার্থী সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্ধারিত দিনের পরে তা হওয়ায় তারা এখনও বৈধ প্রার্থী। ব্যালটে থাকছে তাদের প্রতীকও। তারা হলেন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রার্থী কামাল প্রধান ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী মো. রাশেদ ফেরদৌস। তাদের দলীয় নির্বাচনী প্রতীক যথাক্রমে ছাতা ও হাতঘড়ি। এর মধ্যে কামাল প্রধান দেওভোগ এলাকার এলেম রোডে প্রাইমারি স্কুলে সকালে ৯টার দিকে ভোট দেবেন। আর রাশেদ ফেরদৌসও সকালে নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিল কলেজ কেন্দ্রে তার ভোটাধিকার প্রদান করবেন।
সরে দাঁড়ানো প্রার্থীদের নির্বাচনী সুবিধা পাচ্ছেন সাখাওয়াত : ২০ দলীয় জোটের অন্তর্ভূক্ত এলডিপি প্রার্থী কামাল প্রধান নির্বাচনের ৫ দিন আগে গত ১৭ নভেম্বর বিএনপি প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানকে সমর্থন জানিয়ে সরে পড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর দু’দিন পর একই ঘোষণা আসে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী মো. রাশেদ ফেরদৌসের পক্ষ থেকেও। কিন্তু এখনও তারা বৈধ প্রার্থী। ব্যালটে থাকছে দু’জনের ছাতা ও হাতঘড়ি প্রতীক। কিন্তু তারা ও তাদের সমর্থকরা বিএনপিকে ভোট দেবেন বলে জানান। ভোটের দিন তারাও কেন্দ্রে এজেন্ট দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। দু’জনেই এজেন্টও দিচ্ছেন। তবে প্রার্থী হিসেবে তারা নিজেরা ও তাদের এজেন্টরা বিএনপি প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করবে বলে জানান দুজনই। গতকাল বিকেলে তাদের দু’জনকেই বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গে দেখা গেছে।
কামাল প্রধান বলেন, আমি ১০০ কেন্দ্রে এজেন্ট দেব। অবশ্য তাদের সহযোগিতা বিএনপি প্রার্থী পাবে। মাঠে আমার পোস্টার-প্রতীক থাকলেও আমার কর্মী-সমর্থকরাও ভোটের দিন ধানের শীষ প্রতীক বহন করবে। আমার চীফ এজেন্ট নুরুল ইসলাম সর্দার। তিনিও আমাদের জোটের প্রার্থীকে এগিয়ে নেয়ার জন্য কাজ করবেন।
সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়া অপর প্রার্থী রাশেদ ফেরদৌসের প্রধান এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে সাখাওয়াতের নির্বাচনী কার্যক্রম সমন্বয়ে দায়িত্বপালনকারী অ্যাডভোটেক সরকার হুমায়ুন কবিরকে।
এ বিষয়টি স্বীকার করে রাশেদ ফেরদৌস বলেন, আমি প্রধান এজেন্ট দিলেও কেন্দ্রে কোনো এজেন্ট দিচ্ছি না। তবে ভোট দেয়ার পর থেকে আমি মাঠে থাকবো।
কোন প্রার্থীর কত এজেন্ট : এদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর নৌকা প্রতীকের পক্ষে আগামিকাল ভোট গ্রহণের দিন ১ হাজার ৩০৪ ভোট কেন্দ্রের সবক’টিতেই এজেন্ট নিয়োগ দেয়ার কথা রয়েছে। বিএনপি প্রার্থী সাখাওয়াতের একই প্রস্তুতি থাকলেও এজন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে। অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল নিয়োগ দিচ্ছেন ৫ থেকে ৭০০ এজেন্ট। মাসুম বিল্লাহ ও এজাহারুল হক দু’জনেই ৪ শতাধিক করে এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হবে বলেন জানান। কামাল প্রধান সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও তার ১০০ এজেন্ট থাকছে সম পরিমাণ ভোটকক্ষে। অপর দিকে রাশেদ ফেরদৌস প্রধান এজেন্ট দিলেও ভোটকক্ষে কোনো এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হবে না বলে নিশ্চিত করেছেন।