তাজুল ইসলাম, মালয়েশিয়া: চলতি বছরে ফেব্রুয়ারী ও জুন মাসে দু দফায় বাড়ানো হয়েছে মালয়েশিয়া অবৈধ শ্রমিকদের বৈধকরন নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মেয়াদকাল। চলতি ৩১শে ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে শ্রমিক বৈধকরন নিবন্ধন প্রক্রিয়া।
এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়েছেন লক্ষ লক্ষ শ্রমিক। মালয়েশিয়ার সরকার কর্তৃক অনুমোদিত মাইজি নামক একটি প্রতিষ্ঠান ও আরো দুটি প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের অনুমতি দেয়া হয়। তবে বৈধকরনের সাথে কতগুলো শর্তযুক্ত করে দিয়েছেন মালয়েশিয়ার সরকার। যারা সাগর পথে নৌকা বা টলারে এসেছেন ,
এসব শ্রমিকদের বৈধতা দেওয়া হবে না। যে সকল শ্রমিক ২০১৫ সালের আগস্টের আগে বিমানযোগে এসেছেন( ট্ররিস্ট , স্টুডেন্ট, ভিজিট ) কোন রকম বৈধ কাগজ পত্রের রেকর্ড আছে কেবল তারাই এই নিবন্ধন প্রক্রিয়ার আওতাভুক্ত হবে । এবং যে সকল শ্রমিক এজেন্টের খপ্পড়ে পড়ে বৈধভাবে এসে কোম্পানি থেকে অবৈধ হয়ে গেছেন তাদেরকে পুনরায় বৈধ পথে আসার জন্য দেওয়া হয়েছে এই সুযোগ। কিন্তু অনেক শ্রমিকরা নৌপথে এসে না বুঝে দালালদের হাতে পাঁচ থেকে সাত হাজার রিঙ্গিত দিয়েছন বৈধ হবার আশায় কিন্তু আশাতো আশায় রয়ে গেল । হবে হবে বলে দিন গুনে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই । মাইজিতে ফিংগার দেওয়ার পরও ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। মাইজিতে ফিংগার দেওয়ার পর অনেকেরই পাঁচ মাস ছয় মাস কেটে গেল এখনো কোন ইমাগ্রেশন ফিংগারের ডাক পায়নি। অনেকের ফিংগার দিতে গিয়ে ইমাগ্রেশন অফিস থেকে আবার ফিরে এসেছেন। বৈধ হতে খরচ বেশী লাগায় অনেক শ্রমিক এমন নিয়মকে প্রত্যাহার করেছেন। এমন অবস্থায় চলছে পুলিশি অভিযান। পুলিশের ভয়ে অনেক শ্রমিক রাত কাটাচ্ছেন জঙ্গলে। এমনি একজন বাংলাদেশী শ্রমিক( বাহ্মণবাড়ীয়া জেলার বাঞ্চারামপুর ) রুবেল মিয়া জানালেন তার কষ্টের কথা। তিনি বলেন, আমি নৌপথে মালয়েশিয়া এসেছি তিন বছর হয়ে গেছে। পুলিশের ভয়ে রাত কাটাচ্ছি জঙ্গলে পাহাড়ে। অবৈধভাবে মালয়েশিয়া এসে আজ ভুলের মাশুল দিচ্ছি। কোন অবৈধ শ্রমিককে কোম্পানি রাখতে চায়না। আর রাখলে ও অল্প বেতনে কাজ করাচ্ছে। ভেবেছি যখন সরকার পারমিট দিয়েছে এবার বুঝি আমাদের কপাল খুলছে। এই ভেবে মাইজিতে ফিংগারের জন্য তিন হাজার রিঙ্গিত দিয়েছি কিন্ত এখনো কোন ইমাগ্রেশন ফিংগারের ডাক পায়নি। আট মাস হয়ে গেল এজেন্টে রিঙ্গিত ও ফেরত দেয়নি। হবে হবে বলে আজও আশা দিচ্ছেন।
সুতরাং আমরা মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, সকল অবৈধ শ্রমিকদের বৈধ করতে যেন বাংলাদেশ সরকার মালয়েশিয়ার সরকারের সাথে অতি শীঘ্রই যেন আলোচনায় বসেন।