রংপুর ডেস্কঃ পৌষ মাষের প্রারম্ভেই তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনাসহ গাইবান্ধার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সবগুলো নদ-নদীর পানি কমে গিয়ে সেগুলো শাখা -প্রশাখায় ভাগ হয়ে এখন শীর্ণকায় রূপ নিয়েছে। আকস্মিক পানি শূন্যতায় প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা নৌ ঘাটগুলোর অস্তিত্ব এখন বিপন্ন। ইতিমধ্যে অনেক নৌ ঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। যে সব নৌ ঘাট এখনও কোন রকমে টিকে রয়েছে সেগুলোরও এখন বেহাল দশা। চ্যানেলের অভাবে নৌযান কমে গেছে অর্ধেকেরও বেশি।
বালাসীঘাট এলাকায় নদী পাড় থেকে ১৭টি রুটে যাত্রবাহী যান্ত্রিক নৌকা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। অথচ আগে ৩০টি রুটে এখান থেকে অবাধে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করতো।
আগে যেখানে একেক রুটে ৪টি করে নৌকা চলাচল করতো এখন সেখানে মাত্র দু’টি করে নৌকা চলাচল করছে।
মূলত: পানি সংকটের কারণে নৌ যোগাযোগ এখন হুমকির মুখে। যে সব রুটে এখনও যান্ত্রিক নৌকাগুলো চলছে জেগে ওঠা চরের কারণে ঘুর পথে চলাচল করতে হচ্ছে বলে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে সময় লাগছে দ্বিগুণেরও বেশি।
অপরদিকে ছোট ছোট নদীগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় ওইসব নদীতে ইতিপূর্বে স্থাপিত সেচ যন্ত্রগুলো এখন পানি সংকটের মুখে পড়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট সেচ যন্ত্রের আওতাধীন বোরো জমি পানির অভাবে এখন শুকিয়ে যাচ্ছে।
এ বছর নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনাসহ ছোট বড় সবগুলো নদীর পানি দ্রুত কমতে শুরু করে। অব্যাহত পানি হ্রাসের ফলে নদীগুলো নিজেদের অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। এ তিনটি নদীর পানি এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে এবং বিশাল বিশাল চর জেগে উঠেছে এখন নদীর বুকে।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্র্ণ চরাঞ্চলের বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষ নদীতে নাব্যতা থাকার সময় স্বাভাবিকভাবে নৌকায় চলাচল করতো। এখন নদী বুকে জেগে ওঠা বিস্তীর্ণ চর এবং শীর্ণকায় নদীর শাখাগুলো পায়ে হেটে গন্তব্য স্থলে তাদের পৌঁছতে হয়। ইতিমধ্যে অনেক চরে ভূট্টা, বাদাম ও মরিচসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানানো হয়েছে, এ অবস্থা চলতে থাকলে নদীগুলো আরও ভরাট হয়ে যাবে এবং নাব্যতা সংকটের সৃষ্টি হবে। সেজন্য অবিলম্বে নৌ চ্যানেলগুলো ড্রেজিং না করলে এ জেলার চরাঞ্চলের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। তবে দেশের নদীগুলো ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্যতা ফিরিয়ে আনার সরকারের একটি মহাপরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।