সাভার; আশুলিয়ায় ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে টানা ৬ষ্ঠ দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন কয়েকটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হলে তাদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আশুলিয়া এলাকার প্রায় ২০টি কারখানায় একদিনের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছেন মালিকপক্ষ। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শিল্প এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি র্যাব টহল বৃদ্ধি, পুলিশের সাজোয়া যান ও জলকামান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই আশুলিয়ার বেশ কয়েকটি কারখানাতে কর্মবিরতি পালন করে আসছে শ্রমিকরা। গতকাল সকালে কর্মবিরতির অংশ হিসেবে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করলে মালিকপক্ষের লোকজন কারখানাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। এ ঘটনায় একযোগে কারখানাগুলো ছুটি দেয়া হলে শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হয়ে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কে বিক্ষোভের চেষ্টা করলে উত্তাল হয়ে ওঠে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল। এ সময় পুলিশের ধাওয়া ও লাঠিচার্জে শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে গেলেও আহত হয় ৫ শ্রমিক। ঘটনাটি দ্রুত অন্যান্য কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে অসন্তোষ ঠেকাতে এম ডিজাইন, এনভয়, উইন্ডি, হিয়ন এ্যাপারেলস, দ্যা ডিজাইন এন্ড জিন্স, সেতারা গ্রুপ, দি রোজ, বান্দু ডিজাইন, নেক্সট কালেকশন, পলমল সাফা, সেড ফ্যাশন, দ্যা আইডিয়াস ফ্যাশন, লিন্ডা ও ডেকোসহ প্রায় ২০টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, সরকার ঘোষিত বর্তমান মজুরিও শ্রমিকরা সঠিকভাবে পাচ্ছেন না। তার উপর বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের জীবন যাপন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে আমরা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলেও পুলিশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। এদিকে শ্রমিক বিক্ষোভ ঠেকাতে ঢাকা-১৯ আসনের এমপি ডা. এনামুর রহমান কারখানাগুলো পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি শিল্প এলাকার বাড়ির মালিকদের আগামী তিন বছরের মধ্যে বাড়ি ভাড়া না বাড়ানোর অনুরোধ করেন। এছাড়া শ্রমিকদের আন্দোলন বন্ধ করে কাজে যোগ দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী ও শ্রমমন্ত্রীকে অবগত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই আলোচনা করে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান করা হবে। এদিকে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান শ্রমিক আন্দোলন ঠেকাতে সরকারসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা চেয়েছেন। আর শ্রমিকদের এই আন্দোলনের পেছনে কারো উস্কানি আছে কিনা সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান।