চ্যাংয়ের লাশ নিতে চীনা দূতাবাসের কর্মকর্তারা যশোরে

Slider জাতীয়

44860_chang

 

ঢাকা; যশোরে চীনা নাগরিক চ্যাং হিং সং (৪৫) হত্যার ঘটনায় আটক নেত্রকোনা জেলা সদরের চকপাড়া এলাকার মুজিবর রহমানের ছেলে নাজমুল হাসান পারভেজ ও তার ভাইপো রফিকুল ইসলামের ছেলে মুক্তাদির রহমান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে তারা যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক বুলবুল ইসলামের কাছে জবানবন্দি দেয়। এসময় তারা আদালতের কাছে হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়ে নিজেদের দায় স্বীকার করে নেয়। এদিকে লাশ গ্রহণ করার জন্য চীনা দূতাবাসের কর্মকর্তারা আজ শুক্রবার সকালে যশোরে আসেন। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন ছাড়াও হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রশাসনের সাথে বৈঠক করেছেন। অন্যদিকে চীনা ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন যশোরের ব্যবসায়ীরা। তারা ঘাতকদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছন।
যশোর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ ইলিয়াস হোসেন জানান, চীনা নাগরিক হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামী আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। তারা হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে নিয়েছে।ফলে তাদের দুইজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলখানায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে চীনা দূতাবাসের কর্মকর্তারা যশোরে পৌঁছে হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করা ছাড়াও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তারা নিহত চ্যাং হিং সং এর লাশ গ্রহণের প্রক্রিয়া চালাচ্ছিলেন।
চ্যাং হিং সং হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন যশোরের ইজিবাইক ব্যবসায়ীরা। তারা এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করে জানিয়েছেন চ্যাং হিং সং একজন ভাল মানুষ ছিলেন। তার এ হত্যার ঘটনায় যশোরে ইজিবাইক ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

চীনা ব্যবসায়ী চ্যাং হিং সং যশোরে গত ৭ মাস ধরে ইজিবাইকের যন্ত্রাংশ বিক্রি করতেন। চীন থেকে আনা এসব যন্ত্রাংশ তিনি যশোরের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতেন। এজন্য বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন যশোর জেল রোড বেল তলা এলাকায়। আর উপশহর মহিলা কলেজের পাশের ফরিদা ভিলার ৩ তলা ভবনের নীচতলায় একটি ফ্লাট ভাড়া নিয়ে সেখানে গোডাউন খোলেন। সেই গোডাউনের একটি কক্ষে বাস করতেন চ্যাং হিং সং এর সহকারী নেত্রকোনার নাজমুল হাসান পারভেজ ও তার ভাইপো মুক্তাদির রহমান। ব্যবসার প্রসার ও দোভাষী হিসাবে কাজ করতেন তারা। অর্থ আত্মসাত করার জন্য ওই দু’হজন চ্যাং-কে হত্যা করে বলে পুলিশের দাবি। নিজ গোডাউনে বুধবার রাতে খুন হন চ্যাং। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ সেখান থেকে তার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় নেত্রকোনা জেলা সদরের চকপাড়া এলাকার মুজিবর রহমানের ছেলে নাজমুল হাসান পারভেজ ও তার ভাইপো রফিকুল ইসলামের ছেলে মুক্তাদির রহমানকে আটক করে পুলিশ। এ ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর গত রাতে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা দুজনই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয় ।

চীনা নাগরিক খুনের ঘটনার পর প্রশাসন যশোরে থাকা বিদেশী নাগরিকদের নিরাপত্তা জোরদার করেছে। বর্তমানে যশোরে চায়না, আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের মোট ৬০ জন নাগরিক রয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *