রংপুর ডেস্কঃ রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
ইন্টার্ন চিকিৎসক ইউনিয়নের সভাপতি ডা. রাকিবকে কুপিয়ে জখম ও ডা. মিলন ইন্টার্ন ছাত্রাবাসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও মালামাল লুটপাঠকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ধর্মঘট শুরু হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রোগীরা চরম।
চিকিৎসাসেবা না পেয়ে অনেক রোগী হাসপাতাল ছেড়ে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চলে যাচ্ছেন। জরুরি বিভাগসহ হাসপাতালের কোনো বিভাগেই তারা দায়িত্ব পালন করছেন না। এমনকি ইমারজেন্সি স্কোয়াড পর্যন্ত গঠন করা হয়নি।
হাসপাতালে দায়িত্বরত বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, সোমবার রাতে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের একটি গ্রুপের নেতা ফারহান ও উত্তমের নেতৃত্বে রংপুর মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে ডা. মিলন ইন্টার্ন ডক্টরস হোস্টেলে হামলা চালিয়ে ৪টি কক্ষ ভাঙচুর ও ল্যাপটপসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। তারা ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. রাকিব ও ছাত্রলীগ নেতা রাসেলকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় অন্য ইন্টারনি চিকিৎসকেরা ছাত্রলীগের ১২ জন কর্মীকে অস্ত্রসহ কক্ষে আটকে রাখে।
খবর পেয়ে পুলিশ ও রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনিমেষ মজুমদার শিক্ষকদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক হামলাকারী ১২ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে পুলিশে না দিয়ে ছেড়ে দেন। পরে পুলিশ হোস্টেলের বিভিন্ন কক্ষ থেকে ১০টি লোহার রড ও ৭টি ছোড়া উদ্ধার করে।
কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনিমেষ মজুমদার জানান, যারা হামলার সাথে জড়িত তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান জানান, কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্ররাই এ হামলা চালিয়েছে। কেউ অভিযোগ দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে হামলাকারীদের ছেড়ে দেওয়া ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সভাপতি ডা. রাকিবসহ ৫ জনের ওপর হামলার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তারা অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা ফারহান ও উত্তমের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছোরা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ডা. মিলন হোস্টেলে হামলা চালিয়ে ৪টি রুম ভাঙচুর, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনসহ মালামাল লুট করে নেয়। এ সময় তারা ১২ জন হামলাকারীকে আটক করলেও কলেজের অধ্যক্ষ তাদের পুলিশে না দিয়ে ছেড়ে দেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ সন্ত্রাসীদের পক্ষ নেওয়ায় হতবাক ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) আব্দুল আজিজ জানান, লিখিত অভিযোগ না দিলে তাদের কিছুই করার নেই।
জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল হাসান জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর হামলা করায় তারা কেউ কাজে যোগদান করেনি। ফলে চিকিৎসায় কিছুটা ব্যাঘাত ঘটছে।