তদবিরের টাকা উদ্ধার করে ফেরত দিলেন সাংসদ

Slider রাজনীতি

83f3c5fa81f68eb08b4b6c4a11d5d922-06

নাটোর; পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ এনে দেওয়ার কথা বলে শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে আওয়ামী লীগের কিছু কর্মী দুই লাখ টাকা আদায় করেন। সেই টাকা উদ্ধার করে গ্রাহকদের ফেরত দিয়েছেন নাটোর-৪ আসনের সাংসদ আবদুল কুদ্দুস। দুই মাস আগেও তিনি অন্য এক অনুষ্ঠানে এ ধরনের সোয়া দুই লাখ টাকা গ্রাহকদের ফেরত দিয়েছিলেন।

সাংসদ গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার কচুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক অনুষ্ঠানে হলুদ খামে ভরে প্রত্যেক গ্রাহককে তাঁদের টাকা ফেরত দেন। এরপর বিদ্যুৎ-সংযোগের উদ্বোধন করেন। এতে ১০৫টি বাড়িতে জ্বলে ওঠে বৈদ্যুতিক বাতি।

নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ (বনপাড়া) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে বড়াইগ্রাম উপজেলার মৃধা কচুয়াসহ আশপাশের গ্রামের ১০৫টি বাড়িতে নতুন বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের স্থানীয় কিছু কর্মী গ্রাহকদের কাছ থেকে তদবির করার অজুহাতে প্রায় দুই লাখ টাকা আদায় করেন। ঘটনাটি সাংসদের কানেও যায়। এ অবস্থায় তিনি গ্রাহকদের চাঁদা দেওয়ার জন্য বকাবকি করেন এবং ওই টাকা আদায় করে না দেওয়া পর্যন্ত তিনি গ্রামে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেবেন না বলে জানান। একই সঙ্গে টাকা আদায়কারীদেরও তিনি টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দেন। অবশেষে গতকাল তারা টাকা ফেরত দিতে সম্মত হয়। এ কারণে ওই দিনই তিনি অনুষ্ঠান করে টাকা ফেরত দেন এবং বিদ্যুৎ-সংযোগের উদ্বোধন করেন।
গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস ছালাম খানের সভাপতিত্বে সাংসদ ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর মহাব্যবস্থাপক নিতাই কুমার সরকারসহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিভিন্ন কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা।

সাংসদ আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ বিনা খরচে গ্রামের মানুষকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। এ ক্ষেত্রে কিছু লোক তদবিরের নামে টাকা উঠিয়েছিল। আমি বিষয়টি জানতে পেরে ভীষণ রেগে ছিলাম এবং টাকা ফেরত না দিলে বিদ্যুৎ-সংযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। অবশেষে টাকা ফেরত দিতে পেরে ভালো লাগছে।’ তবে টাকা আদায়কারীদের পরিচয় জানাতে তিনি রাজি হননি। তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা-ও বলেননি।

এ ব্যাপারে কচুয়া গ্রামের কৃষক সেকেন্দার আলী (৪৫) প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ২ হাজার ১০০ টাকা দিছিলাম। এ টাকা যে ফেরত পাব তা ভাবতেও পারছি না। তবে দুঃখটা হচ্ছে, টাকার জন্য সংযোগ পাইতে দেরি হলো।’

মৃধা কচুয়া গ্রামের কৃষক রতন শেখ বলেন, ‘আমি দুই হাজার টাকা দিছিলাম। সব টাকাই ফেরত পাইছি। বিদ্যুৎও পাইছি। যখন টাকা দিছিলাম, তখন কষ্ট লিয়া দিছিলাম। এখন আর কষ্ট নাই। এমপি সাহেব কাজডা ভালো করিছে।’

গত অক্টোবরে একই উপজেলার চড়ইকুল গ্রামে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার আগমুহূর্তে তিনি তদবির বাবদ আদায় করা সোয়া দুই লাখ টাকা গ্রাহকদের মধ্যে ফেরত দিয়েছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *