প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদেশের ফলে মওদুদের ক্ষেত্রে আগামী ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত এই মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ থাকছে বলে জানিয়েছেন তাঁর পক্ষের এক আইনজীবী। ওই আইনজীবীর ভাষ্য, এ সময় পর্যন্ত মওদুদের বিরুদ্ধে এই মামলার কার্যক্রম চলবে না।
এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ মওদুদের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছিলেন। বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ওই আদেশ দেন।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ৭ ডিসেম্বর চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করে দুদক। সেদিন আদালত বিষয়টি ১১ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।
আজ আদালতে মওদুদ নিজেই তাঁর আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রেখে ১৯ জানুয়ারির মধ্যে রুল নিষ্পত্তি করতে বলেছেন আপিল বিভাগ। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে রুল শুনানি করতে বলা হয়েছে। ফলে এই সময় পর্যন্ত মওদুদের ক্ষেত্রে এই মামলার কার্যক্রম চলবে না।
আইনজীবীরা জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে থাকা এই মামলা বিচারিক আদালতে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য ১৫ ডিসেম্বর দিন রয়েছে।
নাইকো দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর মামলাটি করে দুদক। পরের বছরের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। অভিযোগে বলা হয়, কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে তেল গ্যাস অনুসন্ধান চুক্তির মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।
মওদুদের আইনজীবীরা জানান, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগসংক্রান্ত কনভেনশন ট্রাইব্যুনালে নাইকো এবং বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার করা পৃথক সালিশি আবেদন বিচারাধীন। বাংলাদেশের কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষ যেন ওই চুক্তি সম্পর্কিত দুর্নীতি বিষয়ে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা না করে সে বিষয়ে ইতিমধ্যে ওই ট্রাইব্যুনাল আদেশ দেন। এই নথিপত্র তলব করতে ও ওই বিরোধের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নাইকো মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে মওদুদ গত ১৬ আগস্ট বিচারিক আদালতে দুটি আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে ওই দিন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ আবেদন দুটি খারিজ করে দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে মওদুদ আহমদ গত সেপ্টেম্বরে হাইকোর্টে আবেদন করেন। আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ আদেশ দেন। নিম্ন আদালতের দেওয়া আদেশ কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়।