ঢাকা; চাকরি চাইলেই পাওয়া যায়। তারা চাকরি দেন। বিশেষ করে নারীদের। সুন্দরী হলে মোটা বেতনের ভালো চাকরি। এরকম উদাহরণও আছে। চোখের সামনে দেখিয়ে দেন। শুধু দেশে না। চাকরি দেন বিদেশেও। বিশেষ করে দুবাই। আসলে চাকরি নয়, চাকরির নামে নারী পাচার ও যৌনকর্মী হতে বাধ্য করাই এই চক্রের কাজ। দেশে-বিদেশে বিস্তৃত এই চক্রের জাল। টার্গেট সুন্দরী নারী।
রেজিয়া, রুমা, রাত্রি, আঁখিসহ অনেক নারীর অভিযোগ এই চক্রের বিরুদ্ধে। অনুসন্ধানে জানা গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঢাকার কয়েকটি তারকা হোটেলে নিয়মিত নাচ-গান করতেন রুমা আক্তার নামের এক তরুণী। তুরাগ এলাকার একটি রিসোর্টে নাচ করার সময় তাকে টার্গেট করে চক্র। সেখান থেকেই পরিচয় হয় পাপন ও কাওসারের সঙ্গে। চট্টগ্রামের ছেলে কাওসার থাকে বাড্ডায়। নিজেকে বিত্তশালী ও বড় মাপের ব্যবসায়ী হিসেবে উপস্থাপন করে সে। রুমার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়েই এগুতে থাকে। এক পর্যায়ে বেশি টাকা আয়ের প্রস্তাব দেয় তাকে। এ জন্য দেশের বাইরে যেতে হবে। রুমা চাইলে ব্যবস্থা করবে কাওসার। মাসে লাখ টাকা আয়ের এই লোভনীয় প্রস্তাবে সহজেই সম্মতি দেন রুমা। শুরু হয় বিদেশ যাত্রার আয়োজন। মাত্র ছয় মাস আগের ঘটনা। রুমাকে পাঠানো হয় দুবাই।
বিমানবন্দর থেকে তাকে ওই চক্রের লোকজন নিয়ে যায় দুবাই নাইফ রোডের একটি হোটেলে। সেখানেই দেখা হয় এই চক্রের আরেক হোতা হান্নানের সঙ্গে। কিভাবে কোন্ হোটেলে নাচতে হবে এসব বিষয় বুঝিয়ে দেয়া হয় তাকে। স্বপ্নের খুব কাছাকাছি চলে এসেছেন বলেই তখন ভাবছিলেন রুমা। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই স্বপ্নগুলো দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। প্রথম দিনই যৌন নির্যাতনের শিকার হন তিনি। বাধা দিলে মারধর করা হয়। প্রাণে মারার হুমকি দেয়া হয়। তারপর প্রতিদিন দুবাই ও আল আইন শহরের হিল্টন, প্যারিস, বেনটা, ক্যালিফোর্নিয়া, হাভানা প্যালেস, ইন্টার সিটিসহ বিভিন্ন হোটেলে নাচতে পাঠানো হতো। রুমা জানান, নাচের নামে প্রথম দিনই কলগার্লের কাজ করতে হয়েছে তাকে। কিন্তু তেমন কোনো টাকা পাননি তিনি। বাইরেও বের হতে দেয়া হতো না রুমাকে। রুমা জানান, দুবাই’র এসব শহরে বাংলাদেশিরাই পরিচালনা করছেন বিভিন্ন নাইট ক্লাব। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি বাড়িতে জানানোর পর মামলা করার প্রস্তুতি নেয় রুমার পরিবার। তারপরেই সমঝোতার মাধ্যমে তাকে দেশে পাঠানো হয়।
তবে সর্বশেষ এই চক্রের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রেজিয়া বেগম। সোমবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ নম্বর আদালতে মামলাটি করেন। রেজিয়া জানান, নানাভাবে নারীদের টার্গেট করে এই চক্র। নাচ-গান করতে পারেন এমন সুন্দরী নারীদের দেশের বাইরে পাঠানোর নামে কলগার্লের ব্যবসা করানো হয়। একইভাবে দেশে আটকে রেখে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে নারীদের দিয়ে অনৈতিক কাজ করায় এই চক্র। মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১লা আগস্ট বরিশালের একটি জেলা শহর থেকে চাকরির জন্য ঢাকায় আসেন রেজিয়া। পরিচিত জনদের কাছে কোনো চাকরি না পেয়ে দেয়ালে সাঁটানো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিই ভরসা হয়ে ওঠে তার। ‘সরকার অনুমোদিত একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, রিসিপসনিস্ট ও ক্লিনার পদে কিছু নারীকর্মী নিয়োগ দেয়া হবে। পার্ট টাইমের সুবিধা রয়েছে। গৃহিণীরাও আবেদন করতে পারেন। থাকা-খাওয়ার সুবিধা। বেতন আলোচনাসাপেক্ষে।’ এমন চটকদার বিজ্ঞাপন দেখেই বিজ্ঞপ্তিতে দেয়া ফোন নম্বরে কল দিয়ে কথা বলেন রেজিয়া। ফোনে রকিব নামে এক যুবক নিজের পরিচয় দিয়ে তাকে আদালত এলাকায় যেতে বলেন। সেখানে দেখা হওয়ার পর রকিব জানায় তাকে একটি ক্লিনিকে চাকরি দেয়া হবে। পরে ওই এলাকা সংলগ্ন একটি ফ্ল্যাট বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় রেজিয়াকে। ওই বাসাতে রেখে তাকে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজে বাধ্য করা হয়। পরবর্তীতে তাকে কিছুদিন দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর হিরা নামের এক নারীর ৩২২ নম্বর বাসায় রাখা হয়। পরে যাত্রাবাড়ীর কাজলার পাড় আমিরের গলির আমিরের বাড়িতে আটকে রেজিয়াকে নির্যাতন করা হয়। গত ১৫ই সেপ্টেম্বর তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ রেজিয়াকে উদ্ধার করে।
রেজিয়া জানান, শুরুতে বাধা দিলে তাকে বেদম মারধর করা হয়। বাধ্য হয়েই অনৈতিক কাজ করতে হয়েছে তাকে। এই চক্রের মূল হোতা সদরঘাটের সিমসম রোডের ডি/চার নম্বর বাড়ির মৃত আতাহার হোসেনের পুত্র মীর জাভেল হোসেন পাপন, মিরপুরের বিক্রমপুর প্লাজার রাকিব, কুমিল্লার মেঘনার তুরিরচরের সুমন, যাত্রাবাড়ীর বিবির বাগিচার কামরুল হাসান রনি, নিলু, আমীর, রাহিম, হান্নান ও কাওসার। এই চক্রের অর্ধশত সদস্য এসব অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।
রেজিয়া বলেন, নারী পাচার, মাদক ও জুয়াসহ নানা অপরাধে জড়িত এই চক্র। প্রশাসনের অনেক কর্তার সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে এই চক্রের হোতাদের। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও আমলে নেন না কর্তারা।
তবে সর্বশেষ এই চক্রের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রেজিয়া বেগম। সোমবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ নম্বর আদালতে মামলাটি করেন। রেজিয়া জানান, নানাভাবে নারীদের টার্গেট করে এই চক্র। নাচ-গান করতে পারেন এমন সুন্দরী নারীদের দেশের বাইরে পাঠানোর নামে কলগার্লের ব্যবসা করানো হয়। একইভাবে দেশে আটকে রেখে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে নারীদের দিয়ে অনৈতিক কাজ করায় এই চক্র। মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১লা আগস্ট বরিশালের একটি জেলা শহর থেকে চাকরির জন্য ঢাকায় আসেন রেজিয়া। পরিচিত জনদের কাছে কোনো চাকরি না পেয়ে দেয়ালে সাঁটানো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিই ভরসা হয়ে ওঠে তার। ‘সরকার অনুমোদিত একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, রিসিপসনিস্ট ও ক্লিনার পদে কিছু নারীকর্মী নিয়োগ দেয়া হবে। পার্ট টাইমের সুবিধা রয়েছে। গৃহিণীরাও আবেদন করতে পারেন। থাকা-খাওয়ার সুবিধা। বেতন আলোচনাসাপেক্ষে।’ এমন চটকদার বিজ্ঞাপন দেখেই বিজ্ঞপ্তিতে দেয়া ফোন নম্বরে কল দিয়ে কথা বলেন রেজিয়া। ফোনে রকিব নামে এক যুবক নিজের পরিচয় দিয়ে তাকে আদালত এলাকায় যেতে বলেন। সেখানে দেখা হওয়ার পর রকিব জানায় তাকে একটি ক্লিনিকে চাকরি দেয়া হবে। পরে ওই এলাকা সংলগ্ন একটি ফ্ল্যাট বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় রেজিয়াকে। ওই বাসাতে রেখে তাকে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজে বাধ্য করা হয়। পরবর্তীতে তাকে কিছুদিন দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর হিরা নামের এক নারীর ৩২২ নম্বর বাসায় রাখা হয়। পরে যাত্রাবাড়ীর কাজলার পাড় আমিরের গলির আমিরের বাড়িতে আটকে রেজিয়াকে নির্যাতন করা হয়। গত ১৫ই সেপ্টেম্বর তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ রেজিয়াকে উদ্ধার করে।
রেজিয়া জানান, শুরুতে বাধা দিলে তাকে বেদম মারধর করা হয়। বাধ্য হয়েই অনৈতিক কাজ করতে হয়েছে তাকে। এই চক্রের মূল হোতা সদরঘাটের সিমসম রোডের ডি/চার নম্বর বাড়ির মৃত আতাহার হোসেনের পুত্র মীর জাভেল হোসেন পাপন, মিরপুরের বিক্রমপুর প্লাজার রাকিব, কুমিল্লার মেঘনার তুরিরচরের সুমন, যাত্রাবাড়ীর বিবির বাগিচার কামরুল হাসান রনি, নিলু, আমীর, রাহিম, হান্নান ও কাওসার। এই চক্রের অর্ধশত সদস্য এসব অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।
রেজিয়া বলেন, নারী পাচার, মাদক ও জুয়াসহ নানা অপরাধে জড়িত এই চক্র। প্রশাসনের অনেক কর্তার সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে এই চক্রের হোতাদের। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও আমলে নেন না কর্তারা।