চার-ছক্কা মারতে এত অরুচি ঢাকার!

Slider খেলা

98cd2b311282fa4852c88fd4c9ba1eb2-dhaka

ঢাকা; ১৪তম ওভার শেষ। হাতে ৭ উইকেট নিয়ে শেষ ৬ ওভারে যাচ্ছে কোনো দল। ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে ঝড় উঠবে, রানটাও চলে যাবে আকাশে। এ-ই তো টি-টোয়েন্টি। কিন্তু ১৪ ওভারে ১১৯ রান তুলে ফেলা ঢাকা ডায়নামাইটস হয়তো ভাবল, রানটা বেশিই তোলা হয়ে গেছে। সাড়ে ৮ করে রান ওভারে, ঠিক হয়নি। একদম ঠিক হয়নি। সেই প্রায়শ্চিত্ত ভালোমতোই করল তারা। ১৫ থেকে ১৮ ওভারে ২৪ বলে মাত্র একটা বাউন্ডারি এল ব্যাটসম্যানের ব্যাটে! শেষ ৬ ওভারে ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে দুটি চার একটি ছক্কা। আরও দুটি চার হয়েছে বটে, তবে তা লেগ বাই। এর জন্য ব্যাটসম্যানদের ‘দায়ী’ করলে চলবে না!
ঢাকার ব্যাটসম্যানদের এই রান তোলার অনীহার পুরো ফায়দা তুলে ফেলল খুলনা টাইটানস। ঢাকা শেষ ৬ ওভারে ৬০ রান তুললেও খুলনার লক্ষ্য দাঁড়াত ১৮০। কিন্তু খুলনার সামনে লক্ষ্য দাঁড়াল ১৫৯। খুলনা অবশ্য সেই লক্ষ্যটা ৬ উইকেট আর ১২ বল হাতে রেখেই পেরিয়েছে এই বার্তা দিয়ে—১৮০ হলেও ক্ষতি ছিল না। কিন্তু তবুও ওই শেষ ৬ ওভারে খুলনার বোলারদের দুর্দান্ত ফিরে আসার চেয়ে ঢাকার ব্যাটসম্যানের চার-ছক্কার অরুচি চোখে বিঁধল বেশি।
আজ না জিতলে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে আসা দূরের কথা, শেষ চারেই থাকতে পারত না খুলনা। ১২ পয়েন্ট পাওয়া অন্য তিন দলের চেয়ে যে নেট রান রেটে পিছিয়েই ছিল দলটা! শেষ ম্যাচে জেতায় এখন আর সে হিসেব করতে হচ্ছে না মাহমুদউল্লাহর দলকে।
ঢাকা ডায়নামাইটস, খুলনা টাইটানস, চিটাগং ভাইকিংস, রাজশাহী কিংস—এই হলো চতুর্থ বিপিএলের শীর্ষ চার দল। খুলনা শুধু শেষ চারেই গেল না, নিশ্চিত করে ফেলল সেরা দুইয়ে থাকা। অর্থাৎ​ এই ঢাকা আর খুলনাই আবারও মুখোমুখি হবে। অন্য ম্যাচে মুখোমুখি হবে চিটাগং-রাজশাহী।

ব্যক্তিগত ২ রানের সময় কুমার সাঙ্গাকারার তুলে দেওয়া ক্যাচটা নিতে পারলে আরও সহজ হতে পারতো খুলনার জয়। মিড অনে সহজ ক্যাচ মুঠোবন্দী করতে পারেননি আরিফুল হক। বেনি হওয়েলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে সাবেক শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক করেছেন ৪১ বলে ৫৯।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচারকে হারালেও ঢাকার বোলার, ফিল্ডাররাই যেন পথ হারাতে দিল না খুলনা টাইটানসকে। ১৫৮ করে জিততে হলে যেরকম বোলিং, ফিল্ডিং দরকার, সেটার ধারেকাছেও ছিল না তারা। ব্যতিক্রম কেবল কাভার থেকে অনেকটা দৌড়ে গিয়ে মেহেদী মারুফের নেওয়া মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত ক্যাচ। মাহমুদউল্লাহর ২৮ বলে ৫০ করে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিলেন।
খুলনার ওপেনার হাসানুজ্জামানের ১৯ বলে ৪০, হওয়েলের ১৬ বলে অপরাজিত ২৬ রানের অবদানও কিন্তু ম্যাচ শেষে তাদের সাফল্যের চেয়ে ঢাকার ব্যর্থতা নিয়েই বেশি আলোচনা। ম্যাচটা যেন খুলনা জেতেনি, ঢাকাই হেরেছে।
ঢাকা অবশ্য দলের তিন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে বসিয়ে রেখে বার্তা দিয়েছিল, ম্যাচটার অতটা গুরুত্ব তাদের কাছে নেই। ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেছে বলেই কি না অ্যাভিন লুইস, আন্দ্রে রাসেল আর ডোয়াইন ব্রাভো—তিন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানকেই বিশ্রামে রাখল। দলের গুরুত্বপূর্ণ অলরাউন্ডার সানজামুলকেও তারা খেলায়নি এ ম্যাচে। তবে এতটা ‘খাতির’ খুলনাকে পরের ম্যাচে নিশ্চয়ই করবে না ঢাকা!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ১৫৮/৭ (সাঙ্গাকারা ৫৯, মোসাদ্দেক ২০; জুনায়েদ ৩/২২)।
খুলনা টাইটানস: ১৮ ওভারে ১৫৯/৪ (মাহমুদউল্লাহ ৫০, হাসানুজ্জামান ৪০, হওয়েল ২৬*, মজিদ ২১; বোপারা ২/১৭)।
ফল: খুলনা টাইটানস ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মাহমুদউল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *