মেয়র পদ থেকে আইভীর পদত্যাগ, পায়ে হেঁটে গেলেন নগর ভবন থেকে

Slider সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী সারাদেশ

15134811_134990230315307_1424151574011880930_n

 নারায়ণগঞ্জ; নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন সেলিনা হায়াৎ​ আইভী। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিতে নগর ভবনে শেষ কর্মদিবস শেষে আজ বুধবার বিকেলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর তিনি নগর ভবনে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
সেলিনা হায়াৎ​ আইভী বলেন, ‘গত পাঁচ বছর এখানে কাজ করেছি। আমার সর্বস্ব দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি, সফলতা কী আছে তা আপনারাই দেখেছেন। পাঁচ বছরের যে হিসাব-নিকাশ, এর সবকিছু আমাদের এখানে আছে। যখন আপনাদের প্রয়োজন, তখনই সিটি করপোরেশন থেকে নিতে পারবেন। গত পাঁচ বছরে আমি কতটুকু সফল এবং কতটুকু ব্যর্থ, তা নারায়ণগঞ্জবাসীই বিচার করবে। আমার ব্যর্থতার কথা যদি বলতে চাই, তবে বলব, আমি শতভাগ ট্যাক্স আদায় করতে পারিনি। এটাই আমার জন্য ব্যর্থতা। তবে ৬০ ভাগ ট্যাক্স আদায় করেছি।’

এলাকার ভোটারদের উদ্দেশে নারায়ণগঞ্জ সিটির প্রথম নির্বাচিত মেয়র বলেন, ‘আমি আপনাদের সঙ্গে পাঁচ বছর কাজ করেছি। এর আগে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভায় আট বছর দায়িত্ব পালন করেছি। মোট ১৩ বছর দায়িত্ব পালনকালে কোনো ভোটারকে ফাঁকি দিইনি। যতটুকু পেরেছি সবার পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। ২০১৬ সালে আমি আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছি। ২২ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আমি আপনাদের কাছে আবেদন করতে চাই, আমার কাজের, সততা এবং আমি আপনাদের মানুষ হিসেবে আবার আপনাদের সেবা করতে চাই। সেই সুযোগটা আমাকে করে দেবেন। আপনাদের কাছে এই আপিল করছি। আশা করছি, আপনারা আমার পাশে থাকবেন এবং দোয়া করবেন।’

গণভবনের বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের আইভী জানান, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন মিলেমিশে নৌকার জন্য কাজ করতে।’
এ সময় সেলিনা হায়াৎ​ আইভীর সঙ্গে সাবেক প্যানেল মেয়র ওবায়েদ উল্লাহ ও শিল্পপতি আবদুর রাশেদ রাশু উপস্থিত ছিলেন।
পরে আইভী হেঁটে নেতা-কর্মীদের নিয়ে নগরীর ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে দেওভোগের বাড়িতে ফিরে যান।

দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে আ.লীগ
নারায়ণগঞ্জের মেয়র পদে মনোনয়নবঞ্চিত মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন জানান, ‘আইভীর জন্য নয়, দলীয় প্রার্থীর জন্য কাজ করব।’ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য তিনি কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন।

মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় তৃণমূলের প্রস্তাবিত মেয়র পদের তালিকায় ২ নম্বরে ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান। তিনি জানান, ‘আমরা আওয়ামী লীগ করি। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই (শেখ হাসিনা) সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। আমরা মনোনয়ন চেয়েছি, তিনি আমাদের দেননি। আইভীকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তিনি আমাদের সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন আইভীর পক্ষে কাজ করার জন্য। আমরা সবাই দলীয় প্রার্থী হিসেবে আইভীর পক্ষে কাজ করব। আগামী শুক্রবার সিদ্ধিরগঞ্জে বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে। ওই দিনই নৌকার পক্ষে কাজ করতে দলীয় নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানাব।’

তৃণমূলে প্রস্তাবিত মেয়র পদের তালিকায় ৩ নম্বরে ছিলেন বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদ। তিনি বলেন, ‘মনোনয়ন দেওয়া দলীয় ব্যাপার। দলীয় সভানেত্রী আমাদের বলেছেন দলকে শক্তিশালী করতে হবে। আমরা নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব। কীভাবে আমাদের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করব, তা আমাদের নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নির্ধারণ করব।’

এ প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ​ আইভী জানান, তৃণমূল আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। এখানে প্রতিযোগিতা আছে। দলের ভেতরে কোনো ভেদাভেদ নেই। নির্বাচনের মাঠে দলীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *