ঝিনাইদহ; বখাটেদের মারধরে দুই পা হারানো শাহানূর বিশ্বাসের পক্ষের দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি কামাল হোসেনসহ ১৩ জন আজ বুধবার বেলা ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। ঝিনাইদহ বিচারিক হাকিম (তৃতীয়) আদালতের বিচারক কাজী আশরাফুজ্জামান তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় গত ১৬ অক্টোবর হাতুড়ি, লোহার রড ও শাবল দিয়ে শাহানূর বিশ্বাসকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বখাটেরা।
আদালতে আত্মসমর্পণকারী আসামিরা হলেন উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের নলভাঙ্গা গ্রামের কামাল হোসেন, একই গ্রামের মাহবুবুর বিশ্বাস, আজম আলী, মোতালেব বিশ্বাস, আবু তালেব, হাসান আলী, বিল্লাল হোসেন, জাহিদ হোসেন, রুহুল আমিন, শিপন আলী, এমদাদুল হক, আরিফ হোসেন ও বিপ্লব।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে এই মামলার ৩ নম্বর আসামি কালীগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা গ্রামের আবদুল মজিদের ছেলে কুরবান আলীকে নিজ গ্রাম থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, তাঁকেও আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ৬ নভেম্বর পুলিশ আবদুল মজিদের আরেক ছেলে আজাদ হোসেন ও একই গ্রামের মোতালেব বিশ্বাসের ছেলে লিখন বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠান। এ নিয়ে মামলার ১৬ আসামির সবাই কারাগারে গেল।
গত ১৬ অক্টোবর একদল সন্ত্রাসী হাতুড়ি, লোহার রড ও শাবল দিয়ে কাষ্টভাঙ্গা গ্রামের শাহানূর বিশ্বাসকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় তাঁর ওপর এই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। হামলার পর গুরুতর অবস্থায় তাঁকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে যশোর ও পরে ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর দুই পা কেটে ফেলতে হয়েছে। বর্তমানে তিনি দুই পা হারিয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ নিয়ে ২২ নভেম্বর প্রথম আলো পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ একটি আদেশ জারি করেন। হাইকোর্ট সব আসামিকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কারাবন্দী করার নির্দেশ দেন। এরপর গ্রামে পুলিশি অভিযান শুরু হয়। মঙ্গলবার দিনভর অভিযানে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও রাতে একজনকে গ্রেপ্তার করে। আজ বুধবার মামলার বাকি আসামিরা আত্মসমর্পণ করলেন।
এ বিষয়ে শাহানূর বিশ্বাসের মেয়ে আজ বুধবার প্রথম আলোকে জানান, আসামিরা আত্মসমর্পণ করেছে এবং তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে—এটা তাঁরা শুনেছেন। তাঁরা এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন