সৎমাকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টাঃ আটক ছাত্রলীগ ক্যাডারকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

Slider রংপুর

student-league-sm20161121015900

এস. এম. মনিরুজ্জামান মিলন, রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধিঃ সৎমাকে উপর্যুপরি চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আটক ছাত্রলীগের ক্যাডার হারুন অর রশিদকে (৩০) ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। রোববার রাত ১০ টায় তাকে রাজনৈতিক চাপে ঠাকুরগাঁও থানা হাজত থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনাচক্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঘনিমহেশপুর গ্রামের বাসিন্দা সাদেকুল ইসলাম কিছুদিন আগে পার্শ্ববর্তী রাজাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদসংলগ্ন বাসিন্দা আনোয়ারা বেগমকে (৩৫) বিয়ে করেন। বিয়ের কথা জানাজানি হলে সাদেকুলের প্রথম স্ত্রী হাসিনা বেগম ও ছেলে হারুন অর রশিদ আপত্তি জানান। এ কারণে সাদেকুলকে তার ছেলে মারধরও করেন। পরে সাদেকুল তার দ্বিতীয় স্ত্রীসহ অন্যত্র বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন এবং প্রায় ৫০০ গজ দূরে একটি বাড়ি নির্মাণ করেন।

গত শনিবার (১৯ নভেম্বর) রাতে দ্বিতীয় স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে নিয়ে নতুন বাড়িতে ওঠেন সাদেকুল। এ কথা জানতে পেরে সাদেকুলের প্রথম স্ত্রী ও সন্তানেরা রোববার (২০ নভেম্বর) সকালে ওই বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় ছাত্রলীগ ক্যাডার হারুন অর রশিদ ধারালো চাপাতি দিয়ে তার সৎমা আনোয়ারাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। মুমূর্ষু স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে চাইলেও তাকে যেতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন সাদিকুল।

পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ খবর জানাজানি হলে ঘটনার ৩ ঘণ্টা পর বেলা ১২ টায় রুহিয়া থানার ওসি খান মো. শাহারিয়ারের নেতৃত্বে পুলিশ তাকে আটক করে ঠাকুরগাঁও সদর থানা হাজতে রাখেন।

পরবর্তী সময়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারুল ইসলাম ও রুহিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মনিরুল হক বাবু তাকে ছাড়তে রাজনৈতিক তদবির শুরু করেন।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারুল ইসলামের সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, বিষয়টি সম্পূর্ণ পারিবারিক। মামলা রুজুর আগে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারে না। এছাড়া এ ঘটনায় যেহেতু কেউ বাদী হয়ে মামলা করেননি তাই পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে।

এদিকে সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আবুল কালাম আজাদ জানান, আহত নারী রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় ওই নারী কিংবা তার স্বামী মামলা না করায় এবং রাজনৈতিক চাপের মুখে পুলিশ হারুন অর রশিদকে ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।

রুহিয়া থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার জানান, সৎমাকে মারধরের ঘটনায় বাদী পাওয়া যায়নি। তবে পরবর্তী সময়ে মামলার অভিযোগ পেলে তাকে আবার গ্রেফতার করা হবে। পুলিশ বাদী হয়ে মামলা কেন করা হলো না এ প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *