ঝিনাইদহের সংবাদ

Slider খুলনা

bnp-1

 

ঝিনাইদহে খেজুরগাছ ও ধান কাটার মৌসুমে মহা ব্যাস্ত কামার সম্প্রদায় !

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহ জেলা জুড়ে শীত মৌসুমের খেজুরগাছ ও ধান কাটা নিয়ে কামার সম্প্রদায় এখন মহা ব্যাস্ত সময় পার করছেন।

সরেজমিনে ঝিনাইদহ সদরের হরিনাকুন্ডু থানার শাখারীদহ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, দুলাল কর্মকারের ছেলে দিলিপ কর্মকার শীত মৌসুমের খেজুরগাছ ও ধান কাটার অস্ত্রপাতি কাচি, গাছিদা, তৈরিতে এখন মহাব্যাস্ততার মধ্যে দিয়ে কাটছে তাদের কর্মজীবন।

শীতের মৌসুম এলেই দিলিপের কামার ঘরে প্রচুর পরিমান কাজের ভিড়জমে। এই মহা ব্যাস্ততার জন্য নাটোর থেকে আগত দিলিপের এক জন মুসলীম বিশ্বস্ত কর্মচারী আশরাফুলকে রাখা আছে। সে নাটোর থেকে প্রতি শীতের মৌসুমে ছয় মাস কাজ কররা জন্য ঝিনাইদহে দিলিপের দোকানে আসে।

আশরাফুল সাংবাদিককে বলেন, আমাদের নাটোরে এধরনের জাকজমকপূর্ন কামারের কাজ হয় না তাই আমারো কোন কাজ থাকে না। আমাকে বাড়ীতে বসেই তাকতে হত। আমি ঝিনাইদহে আসি মৌসুমের কাজ করার জন্য। কাজ শেষে মালিকের কাছথেকে টাকা বুঝেনিয়ে আবার আমি নাটোরে আমার নিজ বাড়িতে ফিরে যায়।

তাছাড়া, শীতের কাজের ধুমপড়াতে শাখারীদহ এলাকার কামার সম্প্রদায়ের মধ্যে আলোচিত যুগল কর্মকার, জগো কর্মকার, মধু কর্মকার, স্বপন কর্মকারের দোকানেও ব্যাপক ব্যাস্ততা ও লোকজনের ভিড় দেখাগেছে। এই শীত মৌসুমে গরমের তুলনাই এদের সংসারও আগের থেকে এখন ভালো চলছে।

যুগল কর্মকার বলেন, সরকার যদি আমাদের দিকে একটু নজর দিত তাহলে আমরা আরো ভালভাবে কাজকর্ম করে জীবনাতিপাত করতে পারতাম।

মধু কর্মকার সাংবাদিককে বলেন, আগে যখন কামারের কাজ করেছি তখন কেউ নগদ টাকা-পয়সা দিতনা। সারা বছর কাজ করে দেয়ার পর বছর শেষে চাষীর ধান দিয়ে যেত, আগে ধেনো ব্যাবসা করতাম এখন নগদ টাকা ছাড়া কাজ করিনা। এছাড়াও সারা বছর দা, বটি, কাচি তৈরি করা সহ সব ধরণের টুকিটাকি কাজ আসতে থাকে।

তিনি আরো বলেন, মৌসুম এলেই আমাদের কাজের চাপ বেড়েযায় এতে অনেক টাকা পায়সা রোজগার করতে পারি তাই আগের ছাড়া আমাদের সংসারও এখন ভালো চলছে।

ঝিনাইদহে মহা ধুমধামে তারেক রহমানের ৫২ তম জন্মদিন পালিত !
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫২ তম জন্মদিন পালিত হয়েছে। জেলা বিএনপি জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এ উপলক্ষ্যে রোববার সকাল ১০ টার দিকে কেপিবসু সড়কের কার্যালয়ে কেক কাটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আব্দুল মালেক, পৌর বিএনপির সভাপতি জাহিদুজ্জামান মনা, হরিনাকুন্ডু উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাল আজাদ পান্নু, জেলা কৃষক দলের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সাধারন সম্পাদক সাজেদুর রহমান পপ্পু, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান আলী, সাবেক ছাত্র নেতা আশরাফুল ইসলাম পিন্টু, বিএনপি নেতা জিয়াউল ইসলাম ফিরোজ, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মীর ফজলে এলাহী শিমুল, ছাত্র দলের আহবায়ক আরিফুল ইসলাম আনন, ছাত্র নেতা আবুল বাশার বাশি ও মোস্তাক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। কেক কাটা শেষে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

ঝিনাইদহে অধিগ্রহনকৃত জমি থেকে গাছপালা বিক্রি দেখার কি কেউ নেই ?
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুফাডাঙ্গা মৌজায় গ্রীড স্টেশনের জন্য অধিগ্রহনকৃত জমি থেকে লাখ লাখ টাকার সরকারী গাছ বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। জালাল উদ্দীন গাজী নামে এক নার্সারি ব্যবসায়ী রাতের আঁধারে এই চারা বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ।

সরেজমিন পরিদর্শন করে জানা গেছে, ওয়েষ্টার্ণ গ্রীড নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার ১৩২ নং কুলফাডাঙ্গা মৌজায় ১৬ একর ৪০ শতক জমি অধ্রিগহন করা হয়। এ জন্য এলাকার প্রায় ৩৫/৪০ জন কৃষকদের ৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা চেকের মাধ্যমে প্রদান করা হয়।

এ সব জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বাবদ ২৯ লাখ ৫০ হাজার একশ টাকা কৃষকদের প্রদান করা হয়। অধিগ্রহনকৃত জমির মধ্যে জালাল উদ্দীন গাজির লীজ নেওয়া জমিতে ৭৫ হাজার আম, কাঠাল, কড়াই ও মেহগনি গাছের চার ছিল। জমি অধিগ্রহনের সময় জালাল উদ্দীন গাজীকে গাছের চারা বাবদ ক্ষতি পুরণ হিসেবে প্রদান করা হয় ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

ঝিনাইদহ বন বিভাগের কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম গাছের মুল্য নির্ধারণ করেন। সুত্র মতে এলাকার কৃষক আবু সুলতান পান ১৪ হাজার চারশ টাকা, ওমর আলী পান ২৬ হাজার চারশ টাকা, শমসের কাজী পান ৫১ হাজার তিনশ টাকা ও একরামুল হক নান্টু পান সাড়ে তিন লাখ টাকা। এ ভাবে এলাকার ১৮ জন কৃষককে গাছের মুল্য পরিশোধ করা হয়।

জমি অধিগ্রহনের পর এ সব সম্পদের মালিক হয়ে যায় ওয়েষ্টার্ণ গ্রীড নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট। কিন্তু তাদের কোন তদারকী না থাকায় জালাল উদ্দীন গাজী নামে এক নার্সারি মালিক রাতের আঁধারে লাখ লাখ টাকার চারা বিক্রি করে দিয়েছেন। জালাল উদ্দীন গাজির দেখাদেখি অন্যান্য কৃষকরাও গাছপালা বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ।

এ বিষয়ে পিজিসিপি প্রকল্পের পিডি মাসুম আলম বকশী খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমি শুনেছি অধিগ্রহনকৃত জমি থেকে গাছের চারা বিক্রি করে দিচ্ছে। সরেজমিন গিয়ে আমি প্রমানও পেয়েছি।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের একটি জিডি করা ছাড়া আর কোন করণীয় নেই। তিনি বলেন, মাটি ভরাটের টেন্ডার হয়েছে। দ্রুত বিষয়টি দেখা হচ্ছে। রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে এগুলো হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

ঝিনাইদহে কৃষকদের এবার সিনজেনটার সানশাইন বীজে সর্বনাশ !
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
সিনজেনটা কোম্পানীর সানশাইন বীজ রোপন করে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর এলাকার কৃষকদের বারোটা বেজে গেছে। বীজ বপন করে হাতাশ কৃষকরা। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বলরামপুর ও মুরুটিয়া গ্রামের মাঠে অসংখ্য কৃষকের ক্ষেতের করুন অবস্থা। একটি ভুট্রা গাছ থেকে অসংখ্য গাছ বের হওয়ার কারণে কৃষকের চোখেমুখে হতাশার ছাপ।

কৃষক সাহেব আলী এক বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। আশা ছিল ৪০ মন ভুট্টা পাবেন। কিন্তু ভুট্টা ক্ষেতে অজ্ঞাত রোগ দেখা দেওয়ায় আদৌও ফলন পাবেন কিনা তা নিয়ে চিন্তিত তিনি।

একই অবস্থা হযরত আলীর। তার তিন বিঘা জমির পুরোটায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম। কৃষকরা বলছেন, একটা ভুট্টা বীজ থেকে একটা গাছ হয়ে থাকে। কিন্তু সিনজেনটা কোম্পানীর সানশাইন বীজ ব্যবহার করায় তাদের ক্ষেতের ভুট্টার মূল গাছের পাশ থেকে আরো ৩/৪ টি গাছ বেরিয়েছে। এই গাছ ভেঙ্গে দিলেও আবারো বের হচ্ছে। এতে মূল গাছের শক্তি থাকছে না। যার কারনে ভুট্টার ফলন ঠিকমতো হবে না।

ওই দুই গ্রামে গিয়ে একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, অক্টোবর মাসের দিকে ভুট্টা চাষ শুরু হয়। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ভুট্টা তাদের ঘরে আসে। এক বিঘা জমি চাষ করতে তাদের ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। আর এক বিঘা জমিতে ৪০ মন পর্যন্ত ভুট্টা পাওয়া যায়। যা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা মন দরে বিক্রি করলে তাদের ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় হয়।

কৃষকরা জানান, এবছর তারা ভুট্টা বীজ রোপন করে এক থেকে দেড় ফুট লম্বা হয়েছে। চলছে জমির আগাছা পরিষ্কার আর সেচ দেওয়ার কাজ। কিন্তু তারা লক্ষ্য করছেন অনেক ক্ষেতে ভ্রট্টার একটি গাছ থেকে আরো অনেকগুলো গাছ বের হচ্ছে। এই অবস্থা সিনজেনটা কোম্পানীর সানশাইন বীজ যারা ব্যবহার করেছেন তাদের প্রায় সবার।

বলরামপুর গ্রামের কৃষক সাহেব আলী জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে সানশাইন ভুট্টার চাষ করেছেন। ক্ষেতের সমস্ত গাছের গোড়া থেকে আরো একাধিক গাছ গজাচ্ছে। কৃষি বিভাগের লোকজন এগুলোকে সাকার বা কুসি বলছেন। তিনি জানান, গত ৮ থেকে ১০ দিন পূর্বে হঠাৎ দেখতে পান তার ক্ষেত্রের গাছগুলোর গোড়া (মাটির নিচ) থেকে একাধিক চারা বের হচ্ছে। এই অবস্থা দেখে চিন্তিত হয়ে ছুটে যান কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে। তারা কুসিগুলো ভেঙ্গে দেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি জানান, একটা বীজ থেকে একটাই গাছ হবে, সেখানে একাধিক গাছ হলে মূল গাছ শক্তি হারিয়ে ফেলছে। এতে ওই গাছে ভুট্টার ভালো ফলন হবে না।

সাহেব আলী আরো জানান, তাদের গ্রামের ১৭ জন কৃষক এই জাতের চাষ করেছেন। তাদের মধ্যে ১০ জনের ক্ষেতে এই অবস্থা ইতোমধ্যে ধরা পড়েছে। বাকি ৭ জনের ক্ষেতে গাছগুলো সবে বড় হচ্ছে। পাশের মুরুটিয়া গ্রামের ১৫ জন কৃষকের ক্ষেতে এই জাতের চাষ হয়েছে। তাদের অনেকের ক্ষেতে এই অবস্থা দেখা দিয়েছে। জমির পরিমানটা সঠিক ভাবে কৃষকরা বলতে না পারলেও আনুমানিক ২০ থেকে ২৫ বিঘা হবে বলে জানিয়েছেন।

সানশাইন জাতের সব ক্ষেতের একই অবস্থা বলে জানান কৃষকরা। এ ব্যাপারে সিনজেনটা কোম্পানীর কোটচাঁদপুর এরিয়ার কর্মকর্তা মহাসিন আলীর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, শুধু তাদের কোম্পানীর বীজে এটা হয়েছে তা ঠিক নয়। অন্য কোম্পানীর বীজেও হয়েছে। এটা আবহাওয়ার সমস্যায় হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, কৃষকদের তারা বলেছেন, পাশের গাছগুলো নষ্ট করে চাষ ধরে রাখতে।

এতে ফলন কম হলে তারা ক্ষতিপূরনের ব্যবস্থা করবেন। ঝিনাইদহ জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক শেখ আকরামুল হক জানান, তিনি ওই এলাকায় গিয়েছিলেন। ৭ জন কৃষকের তিন একর জমিতে এই সমস্যা হয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, কৃষকদের মূল গাছ রেখে পাশের গাছগুলো ভেঙ্গে দেবার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আশা করছেন এতে ফলনের খুব একটা ক্ষতি হবে না। তাছাড়া কৃষকের ক্ষতি হলে ক্ষতি পূরনের আশ^াসও দিয়েছেন তিনি। বিষয়টি তারা পর্যবেক্ষন করছেন বলে জানান।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *