ঢাকা; যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হতে পারেন নি হিলারি ক্লিনটন। কিন্তু তিনি যে শিখা জ্বালিয়ে গেলেন সে আলো ইতিহাস চিরদিন মনে রাখবে। শুধু তা-ই নয়। তিনি এক নতুন আশার বাণী শুনিয়ে গেছেন। মঙ্গলবার রাতে পরাজয় মেনে নেয়ার সময় তিনি আবেগী, দৃপ্তকণ্ঠে তিনি ঘোষণা করেছেন, সর্বোচ্চ উচ্চতার ও সবচেয়ে কঠিন গ্লাস সিলিং তিনি ভাঙতে পারেন নি। নিকট ভবিষ্যতেই তা ভাঙা হবে। এর মধ্য দিয়ে হিলারি কি ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন! এ নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু হয়ে গেছে। হিলারি কি তার হাতের মশাল তুলে দিতে চাইলেন ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামার হাতে! তিনি কি ইঙ্গিত দিলেন ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবার দেখা হবে রিপাবলিকানদের সঙ্গে। তখন তিনি নন, ভোটের লড়াইয়ে সামনে এসে দাঁড়াবেন মিশেল ওবামা! যদিও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার স্ত্রী এমন নির্বাচন করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু হিলারির ইঙ্গিত তার চেয়েও বেশি চিত্তাকর্ষক। আবেগী হিলারি মঙ্গলবার রাতে যখন মুখে হাসি নিয়ে পরাজয় স্বীকার করছিলেন তখন তার অন্তরাত্মা ফেটে যাচ্ছিল। যারা সিএনএন সহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি সে দৃশ্য দেখেছেন তারা এর সাক্ষী। তিনি যখন বক্তব্য রাখতে মঞ্চে আসেন তখন সামনের সারিতে ডেমোক্রেটদের রথি মহারথিরা বসা। তাদের চোখে অশ্রু। ঝাঁপসা চোখে তারা তাকিয়ে ছিলেন হিলারির দিকে। বর্ষীয়ান একজন রাজনীতিককে তো চশমা খুলে চোখ মুছতে দেখা যায়। ডেমোক্রেট শিবিরের সামনে এ নির্বাচন শুধুই একটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছিল না। এটা ছিল হিলারি ক্লিনটনকে অন্য উচ্চতায়, দেশের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট বানানোর এক দীর্ঘ লড়াই। সে লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে এখন আতঙ্ক চারদিক। বিভিন্ন শহরে শুরু হয়েছে ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারী সহ সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। হিলারি তার শেষ ভাষণে তাদের অবদানের জন্য, সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওবামা ও ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামার প্রতি। ওবামা, মিশেল গত আট বছরে হোয়াইট হাউজে অবস্থান করে যে সম্মান অর্জন করেছেন তা স্মরণ করেন হিলারি। মিশেলের হোয়াইট হাউজের দৌড়ে নামার কোনো ইচ্ছা এখনও নেই এমনটা জানানো হলেও হিলারি যেন সে ইঙ্গিতই দিয়ে গেলেন। হিলারি ইংরেজিতে ঘোষণা করলেন, ‘নাউ আই নো উই হ্যাভ স্টিল নট শ্যাটারড দ্যাট হাইয়েস্ট অ্যান্ড হার্ডেস্ট গ্লাস সিলিং,বাট সামডে সামওয়ান উইলÑ অ্যান্ড হোপফুলি সুনার দ্যান উই মাইট থিঙ্ক রাইট নাউ’। অর্থাৎ এখন আমি জানি আমরা সর্বোচ্চ ও সবচেয়ে কঠিন কাচের সিলিং ভেড় করতে পারি নি। কিন্তু একদিন, কেউ একজন তা পারবে। এবং আশা করি এখন আমরা যা ভাবছি তার চেয়ে অনেক আগেই তা ঘটবে। এর মধ্য দিয়ে কি তবে তিনি তার রাজনীতির শিখা তুলে দিলেন মিশেলের হাতে!