গাজীপুর; গাজীপুর নাগরিক কমিটির সভাপতি জুলীয়াস চৌধুরীর ছেলে শামসুল হক চৌধুরী মিথুনকে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভিতর থেকে শুক্রবার রাতে অপহরণ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। অভিযোগ পেয়ে জয়দেবপুর থানার পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় মিথুনকে উদ্ধার ও হত্যাচেষ্টার অস্ত্রসহ ৩ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে। মিথুনের মা শামিম আরা সিরাজী বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বারি) কর্মরত রয়েছেন।
এ সূত্রে তারা বারি’র আবাসিক কোয়ার্টার সুফলায় বসবাস করেন। শামসুল হক চৌধুরী ওরফে মিথুন শহরের শিববারিস্থ আইডিয়াল কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং অনলাইন ফ্রিল্যান্সার। পড়ালেখার পাশাপাশি তার পিতার গাজীপুরস্থ অফিসে ওয়েব সাইট ডেভেলপমেন্ট, কন্টেন্ট রাইটিং ও সংবাদ সম্পাদনার কাজ করে। মিথুনের পিতা জুলীয়াস চৌধুরী গাজীপুর নাগরিক কমিটির সভাপতি এবং আমেরিকা ভিত্তিক গণমাধ্যম ডিয়ারজুলীয়াস.কম ও ডেইলি নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি প্রতিমাসে প্রচুর পরিমাণ অর্জিত রেমিটেন্স বাংলাদেশে আনেন। গাজীপুর শহরের শিববাড়িস্থ মান্নান প্লাজায় তার স্থানীয় অফিস। মিথুন শুক্রবার ২৮ অক্টোবর ২০১৬ খ্রীঃ বারিস্থ বাসার পার্শবর্তী বিল্ডিংয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রাইভেট পড়ে জয়দেবপুরের শিববাড়িস্থ মান্নান প্লাজায় পিতার অফিসে পায়ে হেটে যাওয়ার সময় বারি প্রশাসনিক ভবনের সামনে একদল তরুণ-তরুণী তার গতিরোধ করে। এদের মধ্যে একজন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ আবু বকর সিদ্দিক সরকারের ছেলে সন্ত্রাসী শিবলি মিথুনকে চড়-থাপ্পর ও কিল-ঘুসি মারে এবং মিথুনের সঙ্গে থাকা কম-বেশি ৩শত টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এর পর শিবলি ও তার সঙ্গীরা অটো রিকশাযোগে মিথুনকে মারতে মারতে বারি’র মেইন গেট দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় বারি’র প্রহরী ও আনসাররা মিথুনের আর্তচিৎকার তোয়াক্কা না করে গেট খুলে দেয়। সন্ত্রাসীরা মিথুনকে বারি মেইন গেটের সামনে লক্ষ্মীপুরাস্থ ঋষিপাড়া এলাকায় রুশদীর অন্ধকারাচ্ছান্ন বাউন্ডারীর ভিতরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে। এদিকে অফিসে আসতে দেরি হওয়ায় মিথুনের পিতা জুলীয়াস চৌধুরী মিথুনের কাছে থাকা মোবাইল (০১৭৯৯২২১১২২) ফোনে ডায়াল করলে ওপাশ থেকে বারবার কেটে দেয়। একসময় অপরিচিত কেউ ফোন ধরে “তোর ছেলেকে তুইলা নিছি ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা আমাগো অর্ডার মত জাগায় পাঠায় দিবি। অন্যথায় তোর ছেলের লাশ ফেরত পাবি।” মিথুনের মা শামিম আরা সিরাজী জয়দেপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
জয়দেবপুর থানার এসআই ইকবাল হোসেন ও এএসআই আব্দুল মমিন তাৎক্ষণিক এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে তাদের নিপূনতা ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে মুমূর্ষু অবস্থায় মিথুনকে উদ্ধার ও হত্যাচেষ্টার অস্ত্রসহ ৩ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে। মিথুনকে চিকিৎসার জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি মিথুন সাংবাদিকদের জানায়, “আমাকে বাউন্ডারীর ভিতরে নিয়ে আট/দশ জন মিলে পালা করে পিটায় এবং আমার কাছে থাকা মোবাইল দিয়ে প্রথমে আমার বন্ধুদের কাছে এবং পরে আমার আত্মীয় ও বাবার কাছে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা দিতে দেরি হওয়ায় শিবলী আমাকে খুন করতে উদ্যত হয় এবং আমাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। তখন আমি জ্ঞান হারাই।”