ছাদেকুল ইসলাম রুবেল/গাইবান্ধা প্রতিনিধি; শীতের আগাম সবজি হিসেবে পলাশবাড়ীর কৃষকরা চাষ করেছেন শিম। কিন্তু বিরূপ আবহাওয়া ও পোকার আক্রমণে ফলন বিপর্যয়ের আশংকা করছেন তারা। তাই ফসল বাঁচাতে ব্যপক মাত্রায় রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার করেও কোন ফল না মেলায় লোকসানের পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকির আশংকা সংশ্লিষ্টদের।
এখানকার কৃষকরা আগাম শীতের সবজি হিসেবে শিম রোপণ করেছেন। তবে ফুলপচা, ডগা পচা রোগসহ নানা পোকার আক্রমণে ফলন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন তারা।
শিম চাষী আবু তালেব, মোস্তফা, রিপন, মর্জিনার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে দাম ভালো থাকলেও এ বছর রাতে বেশি কুওয়াসা হওয়ায় ফুলপচা, ডগাপচাসহ নানা রোগে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে শিম। সেই সঙ্গে রয়েছে মাজরা পোকাসহ বিভিন্ন পোকামাকড়ের উপদ্রব। এসব কারণে শিমের ফলনে এবার অনেক খারাপ অবস্থা।
ফরিদপুর গ্রামের শিম চাষী মাসুদ রানা জানান, গত বছর এ সময়ে সপ্তাহে বিঘা প্রতি ১৫-২০ মণ শিম উত্তোলন করেছি। কিন্তু এ বছর সে একই জমি থেকে সপ্তাহে ১৫-২০ কেজি শিমও পাওয়া যাচ্ছে না।
ঝালিঙী গ্রামের শিম চাষী আবু তাহের জানান, বন্যা ও অতিবৃষ্টির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম শিম চাষ করেছিলাম। কিন্তু পচন আর ডগাপচা রোগে সব শিম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলন ও কম হচ্ছে। ডিলারদের পরামর্শে নানা ধরণের বিষ প্রয়োগ করেও কোন লাভ হচ্ছে না। ফসলও নষ্ট হচ্ছে, টাকাও জলে যাচ্ছে।
এদিকে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহারে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যঝুঁকির আশংকা করছেন চিকিৎসকরা। এসব সবজি খেলে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিসসহ শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন জটিলতা, কিডনি ও লিভারের নানা রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া, গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে জন্মগত ত্রুটিযুক্ত সন্তান জন্ম দেয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। তবে, এ পরিস্থিতির জন্য আবহাওয়াকে দায়ী করেছে কৃষিবিভাগ। পোকা দমনে কৃষকদের জৈব প্রযুক্তি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
পলাশবাড়ী কৃষি কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম জানান, এ বছর কার্তিক মাসেও প্রকৃতিতে শীতের আমেজ না আসায় কৃষক আশানুরুপ ফল পাচ্ছেনা। অধিক তাপমাত্রার কারণে শীতের সবজি উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। শীত বাড়লে ফলন বাড়বে, পচন ও অন্যান্য রোগও প্রাকৃতিকভাবেই কমে আসবে। উপজেলায় চলতি বছর ৫০০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছে।