গুলিস্তানে হকার উচ্ছেদ নগর ভবনে হামলার চেষ্টা

Slider টপ নিউজ

37717_b4

 

ঢাকা; রাজধানীর গুলিস্তানে গতকাল দুই দফা হকার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় ফুটপাথের হকাররা সংঘবদ্ধ হয়ে উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে শেষ পর্যন্ত হকারদের বাধা অতিক্রম করে উচ্ছেদ অভিযান শেষ করে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বেলা ১১টার দিকে  নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট  মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে ডিএসসিসি। এ সময় গুলিস্তান, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, পাতাল মার্কেট এবং সিটি করপোরেশন মার্কেটের পাশে রাস্তার ফুটপাথ দখলকারী হকারদের উচ্ছেদ করা হয়। অবশ্য এর আগেও তাদের সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ওই রাস্তার ফুটপাথ থেকে উঠে যাওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু, তারা ওই কথায় সায় দেয়নি। পরে উচ্ছেদ হওয়া প্রায় ৬০০  হকার দুপুর ২টার দিকে নগর ভবনে যান। তাদের কেন উচ্ছেদ করা হলো ব্যাখ্যা চান কর্তৃপক্ষের কাছে।
এ সময় হকাররা নগর ভবনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। তারা কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুর করে। তখন সেখানে কর্তব্যরত আনসার সদস্য, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের অফিস থেকে বাইরে বের করে দেন। এসময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। কটূক্তিমূলক বক্তব্য দিতে থাকে। তখন আনসার সদস্যরা তাদের নগর ভবনের বাইরে যেতে বললে তারা পটকা ফোটায়। এসময় কর্তব্যরত আনসার ও নগর ভবনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের ধাওয়া দিয়ে বাইরে বের করে দেন। তখন চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পথচারীরা এদিক সেদিক ছোটাছুটি শুরু করে। রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গোলাগুলির সময় পাশের পুলিশের হেডকোয়ার্টারে আইজিপি সারা দেশ থেকে আসা এসপিদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন। এসময় পুলিশ হেডকোয়ার্টারের অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। হট্টগোলের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, জিরো পয়েন্ট এবং গুলিস্তান এলাকা এমনিতেই যানজটপূর্ণ। দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থান হওয়ার কারণে সেখানে প্রচণ্ড মানুষের যাতায়াত রয়েছে। তিনি জানান, ওই এলাকায় হকাররা রাস্তার ফুটপাথ দখল করে ব্যবসা করে থাকে। এতে পথচারীরা ফুটপাথে না হাঁটতে পেরে রাস্তা দিয়ে হাঁটে। এতে ওই এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। তাদের জন্য অনেকের হিমশিম দশা হয়।
নগর ভবনের আনসার সদস্য নাজমুল হোসেন জানান, প্রায় ৬০০ দুর্বৃত্ত নগর ভবনে এসে হইচই শুরু করে। তারা পটকা ফোটালে আমরাও ফাঁকা গুলি করি। পরে তাদের ধাওয়া দিয়ে সেখান থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এরপর বিকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন সাংবাদিকদের জানান, আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি যে, জনগণকে ভোগান্তির মধ্যে রেখে রাস্তার ফুটপাথ দখল করে কেউ ব্যবসা করতে পারবে না। তারা নগর ভবনে হট্টগোল করতে এসেছিল। কিন্তু, নগর ভবনের আনসার ও কর্মচারীরা তাদের বের করে দিয়েছে। গোলাগুলিতে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। শাহবাগ থানার ওসি আবুবকর সিদ্দিক মানবজমিনকে জানান, অপ্রীতিকর অবস্থা এড়ানোর জন্য নগর ভবনের আশপাশে এবং গুলিস্তান এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গুলিবর্ষণকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। হকাররা আবার যেন রাস্তায় নেমে কোনো প্রকারের অরাজকতা না করতে পারে এ জন্য সতর্ক রয়েছে পুলিশ। মেয়র বলেন, গুলিস্তান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। প্রতিদিন লাখ লাখ লোক এ পথ দিয়ে চলাচল করে। তাই এ এলাকার ফুটপাথ পরিচ্ছন্ন রাখতে প্রতিদিন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাসহ যা যা করা দরকার সব করা হবে। ফুটপাথে অবৈধভাবে নির্মিত দোকানপাট উচ্ছেদকালে সংস্থার প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. খালিদ আহমেদ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রশীদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মেয়রের ব্রিফিংকালে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু আহমেদ মন্নাফী, হুমায়ুন কবির, মো. ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ রতন, আনিসুর রহমান, ওমর বিন আজিজ, মোস্তফা জামান পপি উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *