ঢাকা; সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন রোববার রুদ্ধদ্বার অধিবেশনে নির্বাচিত হবেন আওয়ামী লীগের পরবর্তী কাণ্ডারিরা। গতকাল থেকে সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে। কে কোন পদ পাচ্ছেন তা নিয়ে রাতভর চলছে গুঞ্জন, গুজব। নেতাকর্মীদের কাছে দলের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার বিষয়টি নিশ্চিত। দলের দ্বিতীয় কাণ্ডারির পদ সাধারণ সম্পাদক নিয়ে চলছে নানামুখী আলোচনা।
বুধবার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের আগে আলাদাভাবে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে কথা বলেন দলীয় সভাপতি। এরপরই গুঞ্জনের ডানা মেলে। বিশেষ করে ওবায়দুল কাদের সভাপতির গ্রিন সিগন্যাল পেয়েছেন এমন প্রচারণা চলতে তাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হলে দলে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অবস্থান কি হবে, সেটাও আসছে আলোচনায়। তা ছাড়া সভাপতিমণ্ডলীতে সব অঞ্চলের প্রতিনিধি রাখার চেষ্টা করা হবে বলে কেন্দ্র থেকে বলা হচ্ছে। তাই সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের নেতাদের মধ্যে কারা সভাপতিমণ্ডলীতে আসছেন, তা নিয়েও চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে বর্তমানের ৭৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির আকার বাড়িয়ে তা ৮১ সদস্য বিশিষ্ট করা হচ্ছে। এর মধ্যে দলের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়াম পদ ১৫ থেকে বাড়িয়ে ১৯ করা হচ্ছে। দলের প্রেসিডিয়ামে পরিবর্তন, সংযোজন, বিয়োজন হচ্ছে সেটিরও ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যুগ্ম সম্পাদক পদ তিনটি থেকে বেড়ে হবে চারটি। এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদকের একটিসহ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদ দুটি বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তারুণ্য ও অভিজ্ঞের মিশেলে আওয়ামী লীগে নতুন নেতৃত্ব আসছে বলে জানিয়ে আসছেন দলের শীর্ষ নেতারা। সম্মেলনে নতুন নেতৃত্বের নির্বাচনের জন্য দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, ড. মসিউর রহমান ও রাশিদুল আলমের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এদিকে কাউন্সিলকে ঘিরে নেতৃত্ব নিয়ে একদিকে তৈরি হয়েছে প্রত্যাশা অন্যদিকে রয়েছে শঙ্কা। দলটির পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে নতুন নেতৃত্বকে গুরুত্ব দেয়ার। নেতৃত্বের বীজ বপনের। এ থেকে তরুণ ও নবীন নেতারা প্রত্যাশার বীজ বুনেছেন নিজেদের নিয়ে। দলের প্রতি তাদের অবদান মূল্যায়ন হবে এটাই তাদের বিশ্বাস। অন্যদিকে তরুণদের জায়গা দিতে হলে ছাড়তে হবে পুরণোদের। তাই শঙ্কায় পড়েছেন অনেক সিনিয়র ও প্রবীণ নেতা। এদিকে কাউন্সিলে দলের মূল্যায়ন পাবেন এমন অন্তত এক ডজন নেতা রয়েছেন প্রত্যাশায়। এদের কেউ কেউ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব পালন করছেন। আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা জানান, সরকারের পাশাপাশি দলের জন্য তারা কঠোর পরিশ্রম করেছেন। সময় দিয়েছেন অনেক। দলীয় সভানেত্রী এসব তথ্য জানেন। তাই প্রত্যাশা রয়েছে দল তাদের মূল্যায়ন করবে। এসব বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাস সবচেয়ে বেশি। তৃণমূল নেতা-কর্মীরা জানান, আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহাসিক দল। দলটি কখনই নেতা ও নেতৃত্ব নির্বাচনে ভুল করেনি। এবারের কাউন্সিলেও ভুল হবে না।