ঢাকা; বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। জাতীয় সংগীত ও দলীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
আজ শনিবার সকাল ১০টার একটু পরেই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়।
সম্মেলন উপলক্ষে কানায় কানায় পরিপূর্ণ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। কাউন্সিলর, ডেলিগেট ও আমন্ত্রিত অতিথিদের পদচারণে মুখরিত।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারে সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছেন নেতা-কর্মীরা। দলের নেতা-কর্মীরা দেশের বাইরে থেকেও সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছেন। এসেছেন বিদেশি অতিথিরাও।
সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের সব রাস্তায় সকাল আটটা থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনে ৬ হাজার ৫৭০ জন কাউন্সিলর অংশ নেবেন। সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশন হবে দ্বিতীয় দিন আগামীকাল রোববার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে। ওই অধিবেশনে নতুন কার্যনির্বাহী সংসদ নির্বাচন করা হবে। এবারের জাতীয় কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের স্লোগান হচ্ছে, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার, এখন সময় বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার’।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দেশের সাবেক কূটনীতিক ও রাষ্ট্রদূত, খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকেরাও আমন্ত্রণ পেয়েছেন।
সম্মেলনে নেতাদের বসার জন্য স্থাপন করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন নৌকা আকৃতির বিরাট মঞ্চ। ১৬৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬৫ ফুট প্রস্থের এই মঞ্চে স্থাপন করা হয়েছে ডিজিটাল প্রদর্শনী। মঞ্চের দুই পাশে রাখা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় নেতাদের প্রতিকৃতি। বিভিন্ন প্রবেশপথ থেকে সম্মেলনস্থল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিভিন্ন অর্জনের ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে।
নির্মাণকাজে যুক্ত কর্মীরা বলেন, মূল মঞ্চ হয়েছে পাঁচ স্তরের। একেবারে সামনের অংশটির উচ্চতা হবে আড়াই ফুট। যেখানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা হবে। সাত ফুট উচ্চতার স্থানটিতে দলীয়প্রধান শেখ হাসিনাসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতারা বসবেন। আর পেছনের বিভিন্ন উচ্চতার তিন সারিতে কেন্দ্রীয় নেতারাসহ ৫৮ জনের বসার স্থান করা হয়েছে।
মঞ্চের সামনে বিশাল প্যান্ডেল প্রস্তুত করা হয়ে গেছে। এর ভেতরে ২০ হাজার চেয়ার রাখা হয়েছে। রয়েছে ১৬টি এলইডি টেলিভিশন। মূল মঞ্চ থেকে মৎস্য ভবন, শাহবাগ, দোয়েল চত্বর পর্যন্ত শতাধিক মাইক স্থাপন করা হয়েছে।
আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত নেতারা বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্মেলনস্থলে উপস্থাপন করা হবে আওয়ামী লীগের ইতিহাস, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ এবং সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নের চিত্র।
সম্মেলনের মঞ্চে নিরাপত্তা তল্লাশি নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন ও ঢাকা শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১০ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবেন। সম্মেলনস্থলে লাগানো হয়েছে প্রায় ১৪০টি সিসি ক্যামেরা।
এ ছাড়া উদ্যানের চারপাশের রাস্তা, নগরের সব কটি প্রবেশপথ ও অন্যান্য স্থানেও নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা।