বঙ্গবন্ধু কলকাতার ইত্তেহাদ পত্রিকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ছিলেন

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

36703_f2

ঢাকা; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার চেয়ে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা বেশি জরুরি। কারণ, অনেক ক্ষেত্রে মালিক-সম্পাদক একই ব্যক্তি। এ কারণে চাইলেই সাংবাদিকেরা সবকিছু করতে পারছেন, তা নয়। তাই সাংবাদিকদের স্বাধীনতাই বেশি প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে নতুন ভবন ৩১ তলা বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন। দিনটি জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
শেখ হাসিনা বলেন, গণমাধ্যম অনেক সুবিধা ভোগ করে। তাই সুবিধা ভোগ করবেন আর নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন না, তা হয় না। এ জন্য দেশ ও মানুষের জন্য দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের মনোযোগী হতে হবে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের যেমন নীতিমালা আছে, তেমনি সাংবাদিকদের জন্যও নীতিমালা আছে। সাংবাদিকদের সেই নীতিমালা মেনে চলতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে তো যিনি মালিক, তিনিই হয়ে যান সম্পাদক। মালিক সম্পাদক হলে সাংবাদিকতার সুযোগটা সেখানে মাঝে মাঝে একটু বাধাগ্রস্ত হয়, তাতে কোনো সন্দেহ নাই।’ তিনি বলেন, গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা আছে। দেশে এখন সাত শয়ের বেশি পত্রিকা ও ২৪টি টেলিভিশন চ্যানেল আছে। আরও ৪৪টি টেলিভিশন চ্যানেলের জন্য আবেদন পড়ে আছে।

প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেওয়ার আগে প্রেসক্লাব চত্বরে ৩১ তলা বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রেসক্লাবের পুরো জমিতে এই কমপ্লেক্স তৈরি করা হবে। প্রতিটি ফ্লোরের আয়তন ১৯ হাজার ৮০০ বর্গফুট। কমপ্লেক্সের প্রথম ১০ তলা ব্যবহার করা হবে প্রেসক্লাবের জন্য। ১১ থেকে ২৮ তলা বিভিন্ন সংবাদপত্র, দেশি-বিদেশি সংবাদ সংস্থা, টেলিভিশন ও রেডিওকে ভাড়া দেওয়া হবে। ২৯ থেকে ৩১ তলায় প্রেসক্লাবের সদস্যদের জন্য থাকবে হেলথ ক্লাব, সুইমিং পুল, জিমনেশিয়াম, গেস্ট হাউস, ডাইনিং হল ও সিনেপ্লেক্স। এ ছাড়া চারতলা আরও একটি ভবন করা হবে। ওই ভবনে সাংবাদিকদের ইউনিয়ন অফিস, মিটিং রুম, শো-রুম, ডিসপ্লে সেন্টার এবং নামাজের ঘর থাকবে। ১ হাজার ২০০ লোকের ধারণক্ষমতাসহ কমপ্লেক্সে একটি মিলনায়তনও থাকবে। এর প্রবেশপথ হবে বাইরের দিকে।

বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু কলকাতার ইত্তেহাদ পত্রিকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ছিলেন। আরইত্তেফাক যখন বের হলো, তখন তো হাতে হাতে পত্রিকার কপি বিক্রি করতেন। সেই হিসেবে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান সাংবাদিক পরিবারেরই সদস্য। তিনি বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্স নির্মাণে তাঁর পক্ষে যা করার তা করবেন বলে আশ্বাস দেন।

মিডিয়া কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, স্বপ্ন দেখতে হবে। কিন্তু সক্ষমতা ছাড়িয়ে যেন স্বপ্নের জগতে চলে না যাই। তাহলে ঘুম ভাঙলে ধপাস করে পড়ে যেতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান। আরও বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি গোলাম সারওয়ার ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি (বিএফইউজে) মনজুরুল আহসান বুলবুল।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *