ঢাকা; দেশের শিল্প-উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে প্রযুক্তি হস্তান্তরসহ বিভিন্নমুখী সহযোগিতা দেবে চীন। বেইজিংয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে ৫ বছর মেয়াদি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে ঢাকা। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে তার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে ওই চুক্তিটি সই হয়। চীনের ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিফর্ম কমিশন ও বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সম্পাদিত ওই চুক্তিকে চীনা প্রেসিডেন্টে ঢাকা সফরে সম্পাদিত চুক্তিগুলোর মধ্যে পূর্ণাঙ্গ এবং দীর্ঘমেয়াদি একটি রূপরেখা চুক্তি হিসাবে দাবি করছেন সফর-সংশ্লিষ্ট সরকারি দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। তাদের সরবরাহ করা তথ্য মতে, সরকারি পর্যায়ে যে ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হচ্ছে শিল্প উৎপাদনের বিষয়ক ওই রূপরেখা চুক্তি। এই চুক্তির আওতায় আগামী বছরগুলোতে উৎপাদনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশকে তাৎপর্যপূর্ণ সহযোগিতা দেবে চীন। চুক্তিটির সূচনাতেই বলা হয়েছে- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ও গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের মধ্যকার দীর্ঘ অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং বিনিয়োগ সংক্রান্ত অংশীদারিত্বকে আরো গভীর করাই ওই চুক্তির লক্ষ্য। উৎপাদন সক্ষমতা সংক্রান্ত দুই দেশের বিদ্যমান সহযোগিতাকে আরো গভীর করার বিষয়ে সেখানে ঢাকা ও বেইজিংয়ের নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্যের বিষয়টিও পুনর্ব্যক্ত করা হয়। সেখানে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ক বিশাল সম্ভাবনাকেও অনুমোদন করা হয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে দুই দেশের বিভিন্ন কোম্পানির আগ্রহের বিষয়টিও সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে চুক্তিতে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধাকে কাজে লাগানো, বিনিয়োগ ও পরস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। সেখানে উভয় দেশের নীতি, মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, সমমান ও সমান সুবিধা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
চুক্তিটি বাস্তবায়নের বিষয়ে সেখানে বলা হয়েছে- বাংলাদেশ ও চীন- উভয়ে বিদ্যমান আইন-কানুন ও নীতি মেনে তাদের কোম্পানি এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরস্পরের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত যাবতীয় সহযোগিতায় উৎসাহিত করবে। চুক্তিতে সক্ষমতা বাড়ানোর গুরুত্বপূর্ণ কিছু খাতকে চিহ্নিত করা হয়েছে। খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে- টেলিকমিউনিকেশন্স, পাওয়ার গ্রিড, পাওয়ার স্টেশন, হাইওয়ে, রেলওয়েসহ বিভিন্ন অবকাঠামো, আয়রন, স্টিল, ফাউন্ড্রি, গ্লাস তৈরির বিভিন্ন কারখানা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, খাদ্য ও কৃষি-প্রক্রিয়াজাত ইন্ডাস্ট্রি, যন্ত্রাংশ নির্মাণ, হালকা শিল্প, ইলেক্ট্রনিক্স এবং টেক্সটাইল ইত্যাদি। উল্লিখিত তালিকার বাইরেও দুই দেশের ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে কোনো খাতে সক্ষমতা বাড়ানো সংক্রান্ত সহযোগিতার সুযোগ রাখা হয়েছে। চুক্তিতে বলা হয়েছে, দুই দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কমিশনের অনুমোদন নিয়ে কোম্পানিগুলো সহযোগিতা সংক্রান্ত প্রজেক্ট তৈরি করবে। প্রজেক্ট উভয়ের আইন-কানুন ও নীতি মেনে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি), জয়েন্ট ভেঞ্চারসহ বিভিন্ন রূপে হতে পারে। প্রজেক্টে অর্থায়ন, সহ-অর্থায়ন, গ্যারান্টি এবং লং টার্ম ইন্স্যুরেন্সের ক্ষেত্রে উভয় দেশ তার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহ যোগাবে। রূপরেখা চুক্তির আওতায় গৃহীত কর্মগুলো বাস্তবায়ন করবে দুই দেশের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত স্টিয়ারিং কমিটি। কমিটিতে চীনের ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিফর্ম কমিশনের সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ দুই দেশের সংশ্লিষ্ট-কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। ওই কমিটিতে চীনের জাতীয় উন্নয়ন কমিশনের নেতা এবং বাংলাদেশের শিল্পসচিব কো-চেয়ার হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটি কোন কোন খাতে সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টি অগ্রাধিকার দেয়া জরুরি তা চিহ্নিত করবে। চুক্তির আওতায় গৃহীত সব প্রজেক্টের কার্যকর বাস্তবায়নে কমিটি তদারকি করবে। যার মধ্যে সংশ্লিষ্ট-শিল্পের প্রযুক্তি হস্তান্তর বা বিনিময়ের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এ ছাড়া কমিটি প্রজক্টগুলোর কার্যক্রম সমন্বয় করবে, সেখানে নীতি প্রণয়ন ও পরামর্শ প্রদানের বিষয়টিও তাদের হাতেই থাকছে। উভয় দেশের কোম্পনিগুলোর সংশ্লিষ্টদের ভিসাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়টিও স্টিয়ারিং কমিটি দেখভাল করবে। এ ছাড়া যৌথভাবে প্রজেক্ট প্রমোশন ইভেন্ট, সেমিনার এবং সুনির্দিষ্ট বিষয়ে গবেষণার যৌথ উদ্যোগের বিষয়টিও কমিটি ঠিক করবে। কমিটির সদস্যরা নিয়মিতভাবে অল্টারনেটিভ ভেন্যুতে (একবার ঢাকায় পরবর্তী আয়োজন বেইজিংয়ে) বৈঠক করবেন। কোনো কারণে তা সম্ভব না হলে কিংবা সুবিধাজনক হলে তৃতীয় কোনো দেশেও তারা বৈঠকে বসতে পরবেন। জরুরি প্রয়োজনে ভিডিও কনফারেন্সেও তারা বৈঠক বা আলোচনা করে নিতে পারবেন। ওই চুক্তির আওতায় যাবতীয় সমন্বয় ও যোগাযোগে কমিটির একটি সচিবালয় থাকবে। চীনের জাতীয় কমিশনের ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন ক্যাপিটাল অ্যান্ড ওভারসিজ ইনভেস্টমেন্ট এবং বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অনুবিভাগের যোগাযোগে ওই সচিবালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। অন্য কোনো সিদ্ধান্ত না থাকলে চুক্তিটি বাস্তবায়নে যাবতীয় কার্যক্রম, যোগাযোগ, সহযোগিতা সংক্রান্ত ব্যয় উভয় দেশ নির্বাহ করবে। চুক্তি বাস্তবায়নের কোনো ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সমস্যা হলে দুই পক্ষের সরাসরি আলোচনায় তা নিষ্পত্তি হবে। দুই দেশের অন্য কোনো চুক্তি শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত রূপরেখা বাস্তবায়নে প্রভাব ফেলতে পারবে না। প্রাথমিকভাবে চুক্তিটির মেয়াদ সইয়ের তারিখ থেকে আগামী ৫ বছর বলবৎ থাকবে। কারও আপত্তি না থাকলে এর মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়বে। কোনো পক্ষ ভিন্নমত পোষণ করলে অবশ্যই মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩ মাস আগে বিষয়টি লিখিতভাবে অন্য পক্ষের নোটিশে আনতে হবে।
চুক্তিটি বাস্তবায়নের বিষয়ে সেখানে বলা হয়েছে- বাংলাদেশ ও চীন- উভয়ে বিদ্যমান আইন-কানুন ও নীতি মেনে তাদের কোম্পানি এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরস্পরের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত যাবতীয় সহযোগিতায় উৎসাহিত করবে। চুক্তিতে সক্ষমতা বাড়ানোর গুরুত্বপূর্ণ কিছু খাতকে চিহ্নিত করা হয়েছে। খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে- টেলিকমিউনিকেশন্স, পাওয়ার গ্রিড, পাওয়ার স্টেশন, হাইওয়ে, রেলওয়েসহ বিভিন্ন অবকাঠামো, আয়রন, স্টিল, ফাউন্ড্রি, গ্লাস তৈরির বিভিন্ন কারখানা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, খাদ্য ও কৃষি-প্রক্রিয়াজাত ইন্ডাস্ট্রি, যন্ত্রাংশ নির্মাণ, হালকা শিল্প, ইলেক্ট্রনিক্স এবং টেক্সটাইল ইত্যাদি। উল্লিখিত তালিকার বাইরেও দুই দেশের ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে কোনো খাতে সক্ষমতা বাড়ানো সংক্রান্ত সহযোগিতার সুযোগ রাখা হয়েছে। চুক্তিতে বলা হয়েছে, দুই দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কমিশনের অনুমোদন নিয়ে কোম্পানিগুলো সহযোগিতা সংক্রান্ত প্রজেক্ট তৈরি করবে। প্রজেক্ট উভয়ের আইন-কানুন ও নীতি মেনে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি), জয়েন্ট ভেঞ্চারসহ বিভিন্ন রূপে হতে পারে। প্রজেক্টে অর্থায়ন, সহ-অর্থায়ন, গ্যারান্টি এবং লং টার্ম ইন্স্যুরেন্সের ক্ষেত্রে উভয় দেশ তার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহ যোগাবে। রূপরেখা চুক্তির আওতায় গৃহীত কর্মগুলো বাস্তবায়ন করবে দুই দেশের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত স্টিয়ারিং কমিটি। কমিটিতে চীনের ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিফর্ম কমিশনের সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ দুই দেশের সংশ্লিষ্ট-কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। ওই কমিটিতে চীনের জাতীয় উন্নয়ন কমিশনের নেতা এবং বাংলাদেশের শিল্পসচিব কো-চেয়ার হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটি কোন কোন খাতে সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টি অগ্রাধিকার দেয়া জরুরি তা চিহ্নিত করবে। চুক্তির আওতায় গৃহীত সব প্রজেক্টের কার্যকর বাস্তবায়নে কমিটি তদারকি করবে। যার মধ্যে সংশ্লিষ্ট-শিল্পের প্রযুক্তি হস্তান্তর বা বিনিময়ের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এ ছাড়া কমিটি প্রজক্টগুলোর কার্যক্রম সমন্বয় করবে, সেখানে নীতি প্রণয়ন ও পরামর্শ প্রদানের বিষয়টিও তাদের হাতেই থাকছে। উভয় দেশের কোম্পনিগুলোর সংশ্লিষ্টদের ভিসাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়টিও স্টিয়ারিং কমিটি দেখভাল করবে। এ ছাড়া যৌথভাবে প্রজেক্ট প্রমোশন ইভেন্ট, সেমিনার এবং সুনির্দিষ্ট বিষয়ে গবেষণার যৌথ উদ্যোগের বিষয়টিও কমিটি ঠিক করবে। কমিটির সদস্যরা নিয়মিতভাবে অল্টারনেটিভ ভেন্যুতে (একবার ঢাকায় পরবর্তী আয়োজন বেইজিংয়ে) বৈঠক করবেন। কোনো কারণে তা সম্ভব না হলে কিংবা সুবিধাজনক হলে তৃতীয় কোনো দেশেও তারা বৈঠকে বসতে পরবেন। জরুরি প্রয়োজনে ভিডিও কনফারেন্সেও তারা বৈঠক বা আলোচনা করে নিতে পারবেন। ওই চুক্তির আওতায় যাবতীয় সমন্বয় ও যোগাযোগে কমিটির একটি সচিবালয় থাকবে। চীনের জাতীয় কমিশনের ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন ক্যাপিটাল অ্যান্ড ওভারসিজ ইনভেস্টমেন্ট এবং বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অনুবিভাগের যোগাযোগে ওই সচিবালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। অন্য কোনো সিদ্ধান্ত না থাকলে চুক্তিটি বাস্তবায়নে যাবতীয় কার্যক্রম, যোগাযোগ, সহযোগিতা সংক্রান্ত ব্যয় উভয় দেশ নির্বাহ করবে। চুক্তি বাস্তবায়নের কোনো ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সমস্যা হলে দুই পক্ষের সরাসরি আলোচনায় তা নিষ্পত্তি হবে। দুই দেশের অন্য কোনো চুক্তি শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত রূপরেখা বাস্তবায়নে প্রভাব ফেলতে পারবে না। প্রাথমিকভাবে চুক্তিটির মেয়াদ সইয়ের তারিখ থেকে আগামী ৫ বছর বলবৎ থাকবে। কারও আপত্তি না থাকলে এর মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়বে। কোনো পক্ষ ভিন্নমত পোষণ করলে অবশ্যই মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩ মাস আগে বিষয়টি লিখিতভাবে অন্য পক্ষের নোটিশে আনতে হবে।