সাতক্ষীরা; সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের চাপে কোলা এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ভেঙে ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে কমপক্ষে এক হাজার পরিবারের পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে চার শতাধিক চিংড়িঘের।
গত শনিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কোলা গ্রামের খোলপেটুয়া নদীর ১০০ মিটার পাউবোর বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
সরেজমিনে গতকাল বেলা দুইটার দিকে দেখা গেছে, পাউবোর আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কোলা এলাকায় বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে ইউনিয়নের কোলা ও হিজলিয়া এবং শ্রীউলা ইউনিয়নের হাজরাখালী, মাড়িয়ালা, কলিমাখালী ও নাঙ্গলদাড়ি গ্রামে পানি থইথই করছে। ইতিমধ্যে অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পাউবোর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েক শ চিংড়িঘের। ডুবে গেছে ধান ও সবজির খেত।
হিজলিয়া গ্রামের মোস্তাফা আকুনজি বলেন, তাঁর ঘরের মধ্যে পানি ঢুকেছে। বাড়ি থেকে আর বের হতে পারছেন না। তার ২০০ বিঘার চিংড়িঘের তলিয়ে গেছে। একই গ্রামের রবিউল ইসলাম ও মোছা গাজী বলেন, তাঁদের ঘরে পানি ঢুকেছে। এখন ঘরবাড়ি ছেড়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তাঁদের দুজনের ৪০ বিঘার চিংড়িঘের ভেসে গেছে। কোলা গ্রামের ইয়াসিন মোল্লা বলেন, তাঁর একটি কাঁচা ঘর পড়ে গেছে। বাড়ির চারদিকে পানি থইথই করছে। বাড়ি ছেড়ে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।
প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, বর্তমানে পূর্ণিমার জোয়ারে নদীতে পানি বেড়েছে। পানির চাপে হঠাৎ করে শনিবার সন্ধ্যার দিকে কোলা এলাকার পাউবোর বেড়িবাঁধ ধসে যায়। রাত ১০টার দিকে ওই স্থানের ১০০ মিটার বাঁধ ভেঙে গ্রামের মধ্যে হু হু করে পানি ঢুকতে শুরু করে। গতকাল বিকেল চারটার আগে কোলা ও হিজলিয়া গ্রামে পানি থইথই করছিল। মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে না দিলেও পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বর্তমানে দুই গ্রামের ৫০০ পরিবারের আড়াই হাজার মানুষ পানিবন্দী। শতাধিক চিংড়িঘের ভেসে গেছে।
শ্রীউলা ইউপির চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল জানান, বাঁধ ভেঙে তাঁর ইউনিয়নের হাজরাখালী, মাড়িয়ালা, কলিমাখালী ও নাঙ্গলদাড়ি গ্রাম একপ্রকার তলিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে নাঙ্গলদাড়িয়া গ্রামের শামছুর রহমান মোল্লা, ইজ্জত আলী, মহসিন গাজী, আবুল হোসেন গাজী, খোকন গাজী, আবদুল বারী, জালাল মোল্লাসহ ২৫-৩০টি পরিবার গরু-ছাগল নিয়ে পাউবোর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। ৩০০ চিংড়িঘের ভেসে গেছে। পূর্ণিমায় জোয়ারে পানির চাপ বাড়ছে। তাতে রাতে আরও পাঁচ-সাতটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শ্রীউলা ইউপির চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল জানান, বাঁধ ভেঙে তাঁর ইউনিয়নের হাজরাখালী, মাড়িয়ালা, কলিমাখালী ও নাঙ্গলদাড়ি গ্রাম একপ্রকার তলিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে নাঙ্গলদাড়িয়া গ্রামের শামছুর রহমান মোল্লা, ইজ্জত আলী, মহসিন গাজী, আবুল হোসেন গাজী, খোকন গাজী, আবদুল বারী, জালাল মোল্লাসহ ২৫-৩০টি পরিবার গরু-ছাগল নিয়ে পাউবোর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। ৩০০ চিংড়িঘের ভেসে গেছে। পূর্ণিমায় জোয়ারে পানির চাপ বাড়ছে। তাতে রাতে আরও পাঁচ-সাতটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আশাশুনি পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বলেন, ‘এখনই বাঁধ মেরামত করা যাচ্ছে না। জোয়ার না কমলে কাজ করা যাবে না। ইতিমধ্যে ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রাতের জোয়ারে আরও কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। আগামী মঙ্গলবারের আগে জোয়ার কমবে না। জোয়ারের চাপ কমার পর স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ সংস্কার করা শুরু হবে। কাজ করার জন্য ইতিমধ্যে তারা ১০ হাজার খালি পলিথিনের বস্তা সরবরাহ করা হয়েছে।’