নতুন যুগের সূচনা করবে

Slider জাতীয়

35677_f2

 

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের আসন্ন ঢাকা সফর দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতায় নতুন যুগের সূচনা করবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অন্যান্য খাতে নিবিড় সহযোগিতার নতুন যুগের সূচনা করবে চীনা প্রেসিডেন্টের এ সফর। ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সিনহুয়াকে সাক্ষাৎকার দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত খুশি এবং সম্মানিত বোধ করছি যে প্রেসিডেন্ট শি বাংলাদেশে আসছেন। আমি বিশ্বাস করি, তার এ সফর দক্ষিণ এশিয়ার জন্যও অনেক গুরুত্বপূর্ণ হবে।’
বাংলাদেশ-চীনের দ্বিপক্ষীয় গভীর সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সম্পর্কের ভিত্তি হলো ৫টি মূলনীতি। এগুলো হলো- ‘শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থান, উত্তম প্রতিবেশীসুলভ মনোভাব, পারস্পরিক বিশ্বাস, আস্থা এবং একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়াদিতে হস্তক্ষেপ না করা।’
এক-চীন নীতি এবং চীনের জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি, দেশটির জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষার্থে নেয়া চীনের প্রচেষ্টার বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সিনহুয়াকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘চীন আমাদের সর্ববৃহৎ বাণিজ্য অংশীদারে পরিণত হয়েছে। আর আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা চীনকে বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে মনে করি। অর্থায়ন, পুঁজি ও প্রযুক্তির দিক দিয়ে আমাদের অনেক মেগা-প্রকল্পে শীর্ষ ভূমিকা পালন করছে চীন।’
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক এখন সহযোগিতার সমন্বিত অংশীদারির কাঠামোয় আবদ্ধ এবং প্রায় সব ক্ষেত্রজুড়ে ব্যপ্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বহুপ্রতীক্ষিত সফরের মধ্য দিয়ে এ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার পরিকল্পনা করছি আমরা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীত দশকগুলোতে বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক পরিপক্বতা অর্জন করেছে। তবে, ভবিষ্যতে বিভিন্ন খাতে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পৃক্ততার ব্যাপ্তি ঘটানোর বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ অবকাঠামো উন্নয়নের মতো খাত তথা আইসিটি, কৃষি-প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ইলেক্ট্রনিক্সের মতো অগ্রসরমান খাতগুলোতে বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
চীন প্রস্তাবিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রবৃদ্ধির কেন্দ্রবিন্দুগুলোর সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার বাকি অঞ্চলগুলোকে সংযুক্ত করতে এবং দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মধ্যে অভিন্ন অর্থনৈতিক নৈকট্য গড়ে তুলতে এখন কাজ করছে বাংলাদেশ। আর এটা ‘পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে অধিকতর অঙ্গীভূত করার ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে যা দক্ষিণে আমাদের সমুদ্র বন্দরগুলোর মাধ্যমে তিনটি ইকোসিস্টেমকে বাকি বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।’
এছাড়া, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় চীনা সমর্থনের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। বস্ত্র, চামড়া, পেট্রোকেমিকেল, ফার্মাসিউটিক্যাল, জাহাজ-নির্মাণ ও কৃষি-প্রক্রিয়াজাতকরণের মতো অন্যান্য অগ্রসরমান খাতগুলোতে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগকে স্বাগত জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক ও শিল্প এলাকা চালু করার দোরগোড়ায় রয়েছি, যা আমাদের অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সহযোগিতায় একটি মাইলফলক হবে। আমরা এসব অর্থনৈতিক এলাকায় উন্নয়নকারী বা স্বতন্ত্র বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনা বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে চাই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *