ঢাকা; সিলেটে কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অপরাধীদের আমরা প্রশ্রয় দিচ্ছি না। অপরাধী অপরাধীই, সে যে দলেরই হোক। যে অপরাধী তাকে শাস্তি পেতেই হবে, কোনো রেহাই পাবে না। এ প্রসঙ্গে বিএনপি’র সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত জোট প্রকাশ্য মানুষের গায়ে পেট্রোল ঢেলে দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। প্রকাশ্য মানুষ হত্যা, নৃশংসতা ও কুপিয়ে আহত করার পশুত্বের পথ তো এই বিএনপি-জামায়াত জোটই শিখিয়ে দিয়ে গেছে। তাদের দেখানো অমানবিকতার ঘটনার রেশই তো এখনও চলছে। তিনি বলেন, যারা আন্দোলনের নামে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, দেশের সম্পদ বিনষ্ট করেছে তারা কেউ-ই রেহাই পাবে না। তাদের বিচার অবশ্যই হবে। আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে। তবে যুদ্ধাপরাধীদের যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে, মন্ত্রী-এমপি বানিয়েছে তাদের কী বিচার হবে না? তাদেরও বিচার হওয়া উচিত। যুদ্ধাপরাধীদের যারা মন্ত্রী বানিয়েছে, তাদেরও বিচার এই বাংলার মাটিতে অবশ্যই একদিন হবে। বৃহস্পতিবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ১০ম জাতীয় সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। কলেজছাত্রী খাদিজার ওপর হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রকাশ্য একটি মেয়েকে কোপানো হচ্ছে, পাশে দাঁড়িয়ে থেকে অনেকে ভিডিও করলেও ওই মেয়েটির জীবন বাঁচাতে এগিয়ে যায়নি! পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেদের হাতের কাছে কিছুই ছিল না? কেন সবাই মিলে একজোট হয়ে মেয়েটিকে রক্ষা করতে গেল না। কেন মানবিক মূল্যেবোধ এভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে? শেখ হাসিনা বলেন, কিছু পত্রিকা ও মানুষ এটাকে দলীয় হিসেবে প্রচারের চেষ্টা করছে। এটা রাজনৈতিক বা দলীয় কোন্দল ছিল না। এটা কি কারণে হয়েছে তা সবাই জানে, পত্র-পত্রিকাতেও এসেছে। প্রেম প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় এভাবে কুপিয়ে মারবে? তিনি বলেন, আমরা অপরাধীকে ধরেছি। দলীয়ভাবে প্রশ্রয় দিচ্ছি না। অপরাধীকে শাস্তি পেতেই হবে। কে কোন দলে করে আমি সেটা দেখি না, দেখবোও না। যে অপরাধী তার অবশ্যই বিচার হবে। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতাদের অভিযোগের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সবদিক থেকে দেশের উন্নয়ন হচ্ছে- তখনই কিছু না কিছু ঘটনা ঘটে, যা দুঃখজনক। এ প্রসঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জোটের নির্বাচন বানচাল এবং অবরোধ-হরতালের নামে নির্বিচারে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া প্রতিজ্ঞা করেছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন না ঘটিয়ে তিনি ঘরে ফিরে যাবেন না। এজন্য তিনি প্রকাশ্য আগুন দিয়ে পুড়িয়ে শত মানুষকে হত্যা করলেন, দেশের কোটি কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস করলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি-জামায়াত জোট) মামলার কথা বলেন। তারা যে নির্বিচারে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করলেন, জীবন্ত মানুষের গায়ে পেট্রোল ঢেলে দিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করলেন- তার কী কোন বিচার হবে না? যারা তাদের অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার হয়ে পরিবার-পরিজন হারালেন, দগ্ধ হয়ে এখনও জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে- তাদের কী বিচার চাওয়ার কোনো অধিকার নেই? যারা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, নাশকতা চালিয়ে দেশের সম্পদ বিনষ্ট করেছে তাদের অবশ্যই বিচার হবে, শাস্তি তাদের পেতেই হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে নিজেকে নিজে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দেন। যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রী-উপদেষ্টা বানিয়ে পুনর্বাসন করেন। আর তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়া যেসব যুদ্ধাপরাধী সর্বোচ্চ আদালতে দণ্ডিত হয়েছে, দণ্ড কার্যকর হয়েছে, সেসব যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের হাতে লাখো শহীদের রক্তস্নাত জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিল। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যারা যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছিলো তাদের কী বিচার হবে না। তাদেরও বিচার হওয়া উচিত। কেননা যে অপরাধ করে, আর যে অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও সমর্থন দেয় তারাও সমান অপরাধী। তাই বাংলার মাটিতে একদিন তাদেরও বিচার হবে। সংসদ নেতা বলেন, জঙ্গি-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থান নিয়েছি। জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর হতে হবে। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার পাশাপাশি সকল অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সবাই নিজের ছেলে- মেয়ে ও ছাত্র-ছাত্রীদের দিকে খেয়াল রাখুন। কে কি করছে, কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে তা নজরে রাখুন। এ ব্যাপারে ধর্মীয় শিক্ষকদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের ধর্ম নয়। ইসলাম ধর্মে কোন জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদের স্থান নেই। যারা ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করছে, এরা প্রকৃত পক্ষে ইসলাম ধর্মেরই ক্ষতি করছে। শেষ বিচারের মালিক একমাত্র রাব্বুল আলামীন, অন্য কেউ নয়। সবাই বিপথের পথ ছেড়ে শান্তি ও মানবতার পথে ফিরে আসুক- এটাই আমি চাই।
ভারত-পাকিস্তানকে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান: সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বজায় থাকুক- এটাই আমরা চাই। কোনো রকম সংঘাত বা উত্তেজনা হোক এটা আমরা চাই না। যে কোনো দেশই হোক, কোনো দেশের মধ্যে সংঘাত হলে বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভারত ও পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি উভয় দেশকে আহ্বান জানাবো তারা যেন সংযত আচরণ করে, কোনো উত্তেজনা যেন সৃষ্টি না হয়।
বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্বের কাছে বিস্ময়: সরকারের উন্নয়ন ও সফলতা তুলে ধরতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ সবদিক থেকে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে তা প্রমাণিত। অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও তা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। সারা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে বাংলাদেশ স্বীকৃতি পেয়েছে। বিশ্ববরেণ্য অনেক নেতাও বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। উন্নয়নে বিস্ময় প্রকাশ করে অনেকে কি ম্যাজিকে এটা সম্ভব হলো তাও জানতে চেয়েছে। আমি তাদের বলেছি- কোন ম্যাজিক নয় বরং দেশের মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নের চিন্তা নিয়ে কাজ করেছি বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। এবারে জাতিসংঘে প্রাপ্ত দু’টি পুরস্কারও দেশের জনগণের প্রতি উৎসর্গ করে বলেন, দেশের জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে দেশ সেবার সুযোগ দিয়েছিল বলেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি, দেশের জন্য সুনাম ও পুরস্কার অর্জন করতে পারছি। এদিকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বীকৃতি স্বরূপ এবার তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধীদের নিয়ে মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল নিরলস কাজ করছে। এজন্য দুই সন্তানের জন্য আজ আমি একজন গর্বিত মা।
ভারত-পাকিস্তানকে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান: সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বজায় থাকুক- এটাই আমরা চাই। কোনো রকম সংঘাত বা উত্তেজনা হোক এটা আমরা চাই না। যে কোনো দেশই হোক, কোনো দেশের মধ্যে সংঘাত হলে বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভারত ও পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি উভয় দেশকে আহ্বান জানাবো তারা যেন সংযত আচরণ করে, কোনো উত্তেজনা যেন সৃষ্টি না হয়।
বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্বের কাছে বিস্ময়: সরকারের উন্নয়ন ও সফলতা তুলে ধরতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ সবদিক থেকে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে তা প্রমাণিত। অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও তা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। সারা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে বাংলাদেশ স্বীকৃতি পেয়েছে। বিশ্ববরেণ্য অনেক নেতাও বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। উন্নয়নে বিস্ময় প্রকাশ করে অনেকে কি ম্যাজিকে এটা সম্ভব হলো তাও জানতে চেয়েছে। আমি তাদের বলেছি- কোন ম্যাজিক নয় বরং দেশের মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নের চিন্তা নিয়ে কাজ করেছি বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। এবারে জাতিসংঘে প্রাপ্ত দু’টি পুরস্কারও দেশের জনগণের প্রতি উৎসর্গ করে বলেন, দেশের জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে দেশ সেবার সুযোগ দিয়েছিল বলেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি, দেশের জন্য সুনাম ও পুরস্কার অর্জন করতে পারছি। এদিকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বীকৃতি স্বরূপ এবার তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধীদের নিয়ে মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল নিরলস কাজ করছে। এজন্য দুই সন্তানের জন্য আজ আমি একজন গর্বিত মা।