ঢাকা; গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম জড়িত কি না, এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত নয় পুলিশ। তাঁকে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (টিআইএস) সমন্বিতভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সে প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি। ওই প্রতিবেদন ও গুলশান হামলা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া জবানবন্দি মিলিয়ে সিদ্ধান্তে আসা যাবে তিনি জড়িত কি না।
আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
গুলশান হামলার পর আটক ও বর্তমানে জামিনে থাকা তাহমিদ হাসিব খান সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম বলেন, তাহমিদের জড়িত থাকার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তথ্য চাপা এবং অসহযোগিতার অভিযোগে ৫৪ ধারায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গুলশান হামলা মামলার তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। তদন্তে তাঁর জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁকে আবার এই মামলায় গ্রেপ্তার করা হবে।
এ সময় মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম বলেন, গুলশান হামলার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে কেউ কেউ ইতিমধ্যে অভিযানে নিহত হয়েছেন বা আত্মহত্যা করেছেন। পলাতক মারজান, জাহাঙ্গীর ওরফে রাজীব এবং চকলেট ওরফে বাশারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করতে পারলে এ ঘটনার পুরো রহস্য উন্মোচিত হবে। তিনি বলেন, আজিমপুরে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত তানভীর কাদেরীর ছেলে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এই জবানবন্দির মাধ্যমে গুলশান হামলা সম্পর্কে কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর আগে পুলিশের কাছে যেসব তথ্য ছিল, তা ছিল গোয়েন্দা তথ্য। এ ছাড়া কল্যাণপুরের অভিযানে আহত রাকিবুল হাসান রিগ্যানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে আরও কিছু তথ্য পাওয়া যাবে।
সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র কোন পথে এসেছে, তা জানা গেছে বলে জানান মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘অস্ত্র কার কাছে এসেছে, কীভাবে এসেছে, সেটা জানতে পেরেছি। কিন্তু নেপথ্যে ব্যক্তি কে, তা এখনো বের করা সম্ভব হয়নি।’ তিনি বলেন, গুলশান হামলার জন্য তৃতীয় একটি দেশ থেকে ভারত হয়ে দুই ধাপে প্রায় ২০ লাখ টাকা এসেছিল। এই টাকা গ্রহণ করে চকলেট ওরফে বাশারুজ্জামান।
নব্য জেএমবি সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে কিছু তরুণ সহিংসতায় জড়িত হয়ে পড়ছে। নব্য জেএমবি একটি মতাদর্শিক সংগঠন। এটিকে সমূলে বিনাশ করতে না পারলে সুযোগমতো তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। এ জন্য গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর যে গণসচেতনতা তৈরি হয়েছে, তা অব্যাহত রাখতে হবে।