নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত একজন নেতা গতকাল মঙ্গলবার বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ওই বর্ধিত সভা হয়। এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংসদ নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, সাবেক সাংসদ আনোয়ারুল আশরাফ খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন ভূঁইয়া, পৌর মেয়র কামরুজ্জামান, মাধবদীর মেয়র মোশাররফ হোসেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোতালিব পাঠান প্রমুখ।
একাধিক নেতা বলেন, জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামান সম্প্রতি প্রকাশ্যে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে নানা মন্তব্য করেন। এ ছাড়া তিনি দলীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উসকানিমূলক প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন—এমন খবরে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা ক্ষুব্ধ হন। এর জেরে কয়েক মাস ধরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জেলা মাসিক সমন্বয় সভা, আইনশৃঙ্খলা বৈঠকেও যান না। পাশাপাশি সম্প্রতি নরসিংদীর পৌর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে নানা তথ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জেলা প্রশাসকের পাঠানো প্রতিবেদনের কথা জানাজানি হয়। এতে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে। এই প্রেক্ষাপটে শনিবার ওই জরুরি সভা ডাকা হয়। এতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন। তাঁর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তদন্তের দাবি জানিয়ে রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অবহিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানতে চাইলে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসকের অসদাচরণের প্রতিকারের পাশাপাশি তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন বিয়াম জিলা স্কুল, ক্রীড়া সংস্থা, বাঁধনহারা সংগঠন, ডায়াবেটিক হাসপাতাল নিয়ে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও অনিয়ম তদন্ত করার জোর দাবি জানানো হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন ভূঁইয়া বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের আচরণে জেলা আওয়ামী লীগ অসন্তুষ্ট। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরলেই আমরা তাঁর কাছে এর প্রতিকার চাইব। এ বিষয়ে যা বলার তাঁর কাছেই বলা হবে।’
জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামান বলেন, ‘দলীয় নেতা-কর্মীরা রাজনীতি করেন। আমি প্রশাসনের লোক, প্রশাসনিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা শুনেছি। এ বিষয়ে আমার কোনো মতামত নেই।’