সামাজিক সংকটে বাড়ছে সহিংস কর্মকাণ্ড। নিষ্ঠুর হয়ে উঠছে মানুষ। তুচ্ছ কারণে আপনজনকে হত্যা করছে। ভাই ভাইকে, বাবা ছেলেকে মারছে। ছেলে আগুন দিচ্ছে বাবার গায়ে। মা হত্যা করছে মেয়েকে। এ এক সামাজিক সংকট। নানা খবরের আড়ালে গুরুত্বহীন রয়ে যাচ্ছে এসব মৃত্যু, হত্যাকাণ্ড। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ঘটছে এমন সব ঘটনা। কোনো কোনোটা আবার খবরেও আসছে না। গত এক সপ্তাহে মানবজমিনের পাতায় এমন ঘটনার সংখ্যা অন্তত ২০টি। শনিবার রাতে রাজশাহীতে নিজের শিশু সন্তানকে হত্যা করেছেন মা। ফরিদপুরে মোটরসাইকেল না কিনে দেয়ায় মা-বাবার গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে ছেলে। চট্টগ্রামে মা খুন করেছে ছেলেকে। রংপুরে বাবার হাতে খুন হয়েছে শিশু। কিশোরগঞ্জে সোনিয়া আক্তার (২৫) নামে এক নারীর হাত কামড়ে রক্তাক্ত করে দিয়েছে তার সাবেক স্বামী। শুক্রবার সকালে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে ২৪ বছর বয়সী তাহেরা খাতুনকে গলাটিপে হত্যা করেছে তার স্বামী। ফেনীতে ২ হাজার টাকা ফেরত না পেয়ে বন্ধুকে হত্যা করেছে আরেক বন্ধু। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জেও স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা করেছে স্বামী। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় টাকা চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় শিশুকে গলাটিপে হত্যা করে তার খালাতো ভাই। নাটোরের বড়াইগ্রামে চাচাত ভাইকে পিটিয়ে মারে অপর তিন ভাই। গত ১১ই সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের ভৌরবে আড়াই বছরের শিশু সন্তানকে আগুনে ছুড়ে ফেলে হত্যা করে তার মা। কেন ঘটছে এসব ঘটনা? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক অস্থিরতা, হতাশা এবং আস্থার সংকট সৃষ্টি হলেই মানুষ হয়ে ওঠে ঘাতক। আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের অধ্যাপক ড. ডালেম চন্দ্র বর্মণ এই সহিংস আচরণগুলোকে সার্বিক সামাজিক অস্থিরতার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে উল্লেখ করেন। তিনি মানবজমিনকে বলেন, স্বজনঘাতী সহিংসতার যে ঘটনাগুলো আমাদের সমাজে ঘটছে এগুলো সে অর্থে ঐক্যবদ্ধ বা কালেকটিভ সহিংসতা নয়। এগুলো ব্যক্তিগত পর্যায়ের দ্বন্দ্ব যা মাঝে মধ্যেই সহিংস রূপ নেয়। এগুলো ব্যক্তিগত হলেও কোনো ভাবেই এগুলোকে সমাজ থেকে আলাদা করা যায় না। ব্যক্তিরাও সমাজের অংশ। ব্যক্তিগত পর্যায়ে দ্বন্দ্বগুলো নিরসন করতে না পারলে মানুষ সালিশ-বিচারের ব্যবস্থা করে। সালিশতো সমাজই। সুতরাং, এই সহিংস আচরণগুলোর অবসান ঘটাতে হলে সার্বিকভাবে আমাদের সামাজিক ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে। শান্তি ও সংঘর্ষের এই অধ্যাপক বলেন, মা-ছেলের মধ্যে যখন দ্বন্দ্ব লাগে তখন দেখতে হবে, আমাদের মায়েরা তাদের ওপর অর্পিত সামাজিক দায়িত্ব পালন করছেন কিনা, আবার সন্তানেরা তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করছেন কিনা তাও দেখতে হবে। তিনি বলেন, খবরে দেখলাম বেশি দামের মোবাইল কিনে না দেয়ায় ছেলে বাবার ওপর আক্রমণ করেছে। বেশি দামের মোবাইল কেনার এই যে আকাঙ্ক্ষা সেটি বিশ্লেষণ করে অধ্যাপক বর্মণ বলেন, এই আকাঙ্ক্ষা তৈরির পেছনে বাইরের সমাজের প্রভাব থাকতে পারে। বিদেশি সংস্কৃতির ভূমিকাকেও অনেকে দায়ী করেন। আমাদের শিশু-কিশোররা বিদেশি অনুষ্ঠান, কার্টুন কিংবা গেমস-এর মাধ্যমেও সহিংসতা শিখতে পারে বলেও মত দেন তিনি। গ্রিন ইউনিভার্সিটির নৃবিজ্ঞানের শিক্ষক আহসান হাবীব এ বিষয়ে মানবজমিনকে বলেন, সমাজে এই ধরনের ঘটনাগুলো ঘটে মূল ছোটখাটো স্বার্থের বিষয়ে ছাড় দেয়ার মানসিকতা না থাকার কারণে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং পারিবারিক বন্ধন কমে গেলেও এগুলো ঘটে। আগে মানুষ বড় পরিবারে সবাই মিলে এক সঙ্গে বসবাস করতো। তবুও এইসব সংঘাত কম হতো। এখন মানুষ ছোট ছোট পরিবারে ভাগ হয়ে গেছে। কিন্তু, সামান্য কারণে প্রিয়জনকেও আক্রমণ করছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সামাজিক মূল্যবোধের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাগুলো পুনর্গঠনের দিকে জোর দেন নৃবিজ্ঞানের এই গবেষক। তিনি বলেন, সমাজের সব বিষয়ই একটার সঙ্গে অন্যটা সংযুক্ত। আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার অবনতি বা সুবিচার না হওয়ার কারণে, কিংবা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় অপরাধীরা সাহসী হয়ে উঠতে পারে। এটা অপরাধ বৃদ্ধির কারণ। তবে, অপরাধমুক্ত সমাজের জন্য সামাজিক মূলনীতিগুলোকে পুনরুদ্ধার করতে হবে।
এ বিষয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার মানবজমিনকে বলেন, সমাজের এই ধরনের সংঘাতগুলো একেবারে নতুন নয়। আগেও ছিল। সাধারণত মানসিক চাপের কারণে মানুষ এরকম প্রতিক্রিয়া দেখায়। কোনো কিছু না পাওয়ার ব্যর্থতার প্রতিক্রিয়ায়ও এমনটা ঘটায় মানুষ। অনেকে স্বজনদের ওপর আক্রমণ করে। অনেকে আবার নিজেই আত্মহত্যা করে বা করতে চায়। এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য মূলত মানসিক বিকাশের দিকে মনোযোগ দেয়া দরকার বলে এই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মত দেন। তিনি বলেন, এ জন্য কৈশোর থেকেই একজন শিশুকে গড়ে তোলা দরকার। শিশুকে শেখানো দরকার যে, সবকিছু চাইলেই পাওয়া যায় না। কোনো কিছু না পাওয়ার পরও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার শিক্ষা দিতে হবে। এ জন্য অভিভাবকদের সচেতন হওয়া দরকার পারিবারিক পর্যায়ে। এছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও লেখাপড়ার পাশাপাশি এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার।
এ বিষয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার মানবজমিনকে বলেন, সমাজের এই ধরনের সংঘাতগুলো একেবারে নতুন নয়। আগেও ছিল। সাধারণত মানসিক চাপের কারণে মানুষ এরকম প্রতিক্রিয়া দেখায়। কোনো কিছু না পাওয়ার ব্যর্থতার প্রতিক্রিয়ায়ও এমনটা ঘটায় মানুষ। অনেকে স্বজনদের ওপর আক্রমণ করে। অনেকে আবার নিজেই আত্মহত্যা করে বা করতে চায়। এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য মূলত মানসিক বিকাশের দিকে মনোযোগ দেয়া দরকার বলে এই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মত দেন। তিনি বলেন, এ জন্য কৈশোর থেকেই একজন শিশুকে গড়ে তোলা দরকার। শিশুকে শেখানো দরকার যে, সবকিছু চাইলেই পাওয়া যায় না। কোনো কিছু না পাওয়ার পরও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার শিক্ষা দিতে হবে। এ জন্য অভিভাবকদের সচেতন হওয়া দরকার পারিবারিক পর্যায়ে। এছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও লেখাপড়ার পাশাপাশি এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার।
এ বিষয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার মানবজমিনকে বলেন, সমাজের এই ধরনের সংঘাতগুলো একেবারে নতুন নয়। আগেও ছিল। সাধারণত মানসিক চাপের কারণে মানুষ এরকম প্রতিক্রিয়া দেখায়। কোনো কিছু না পাওয়ার ব্যর্থতার প্রতিক্রিয়ায়ও এমনটা ঘটায় মানুষ। অনেকে স্বজনদের ওপর আক্রমণ করে। অনেকে আবার নিজেই আত্মহত্যা করে বা করতে চায়। এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য মূলত মানসিক বিকাশের দিকে মনোযোগ দেয়া দরকার বলে এই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মত দেন। তিনি বলেন, এ জন্য কৈশোর থেকেই একজন শিশুকে গড়ে তোলা দরকার। শিশুকে শেখানো দরকার যে, সবকিছু চাইলেই পাওয়া যায় না। কোনো কিছু না পাওয়ার পরও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার শিক্ষা দিতে হবে। এ জন্য অভিভাবকদের সচেতন হওয়া দরকার পারিবারিক পর্যায়ে। এছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও লেখাপড়ার পাশাপাশি এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার।
এ বিষয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার মানবজমিনকে বলেন, সমাজের এই ধরনের সংঘাতগুলো একেবারে নতুন নয়। আগেও ছিল। সাধারণত মানসিক চাপের কারণে মানুষ এরকম প্রতিক্রিয়া দেখায়। কোনো কিছু না পাওয়ার ব্যর্থতার প্রতিক্রিয়ায়ও এমনটা ঘটায় মানুষ। অনেকে স্বজনদের ওপর আক্রমণ করে। অনেকে আবার নিজেই আত্মহত্যা করে বা করতে চায়। এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য মূলত মানসিক বিকাশের দিকে মনোযোগ দেয়া দরকার বলে এই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মত দেন। তিনি বলেন, এ জন্য কৈশোর থেকেই একজন শিশুকে গড়ে তোলা দরকার। শিশুকে শেখানো দরকার যে, সবকিছু চাইলেই পাওয়া যায় না। কোনো কিছু না পাওয়ার পরও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার শিক্ষা দিতে হবে। এ জন্য অভিভাবকদের সচেতন হওয়া দরকার পারিবারিক পর্যায়ে। এছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও লেখাপড়ার পাশাপাশি এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার।