ঢাকার চারপাশেই কাশফুল

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি

740c8e67d4e4570d8f8d97295ddfed1c-19


ঢাকা; শরৎ এলেই সাদা কাশফুলে ছেয়ে যায় গ্রামবাংলার প্রান্তর। তবে এই কাশফুল দেখতে নগরবাসীকে দূরে যেতে হয় না। ঢাকার চারপাশেই এখন কাশফুলের সমারোহ। শহরের প্রান্তে মিরপুর, উত্তরা বা পূর্বাচলে পা রাখলে দিগন্তজোড়া এই সাদা ফুলের দেখা মিলবে।
শরতে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই এখন ছুটছেন এসব কাশবনে। বিকেল ঘনাতেই জমজমাট হয়ে উঠছে ফাঁকা এলাকাগুলো। লোকসমাগমের কারণে এসব এলাকায় বেশ কিছু হালকা খাবারের দোকানও গড়ে উঠেছে।
মিরপুরের সাগুফতা: কালশী থেকে মিরপুর ডিওএইচএস পর্যন্ত সংস্কার হওয়া নতুন রাস্তার পাশে কিছুটা ফাঁকা জায়গা এবং ঝিল থাকায় অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে সেখানে ঘুরতে যাচ্ছেন। মূলত নতুন রাস্তায় পল্লবী ডি-ব্লকের ১ নম্বর সড়কের সামনে অবস্থিত মিরপুর আর্মি ক্যাম্প ক্যানটিন থেকে মিরপুর ডিওএইচএসের প্রবেশমুখ পর্যন্তই লোকজনের আনাগোনা বেশি। আবাসন প্রতিষ্ঠানের প্রকল্পের কারণে এ জায়গাটি অনেকের কাছে ‘সাগুফতা’ নামেও পরিচিত।
সড়কের পাশের ফাঁকা জমিতে ফুটেছে কাশফুল। কাশফুলের সঙ্গে ছবি তুলতে অনেকেই ঢাল বেয়ে নিচে নামছেন। মিরপুর থেকে ঘুরতে আসা নুরুজ্জামান বলেন, নিরিবিলি, গাছগাছালি আর একটু বসার জায়গা আছে। ঢাকায় পরিবার নিয়ে বেড়াতে যাওয়া যায় এমন জায়গা খুব বেশি নেই। কাশফুল দেখার সুযোগ ঢাকায় খুব বেশি নেই। আর খাবারের দোকান হওয়ায় সুবিধাই হয়েছে।
ডিওএইচএসের প্রবেশমুখে গড়ে উঠেছে একাধিক দোকান। পাশেই আছে কফির দোকান। ক্লান্ত শরীর শীতল করতে কোল্ড কফি কিংবা মিল্কশেকে চুমুক দিচ্ছেন লোকজন। চটপটি-ফুচকা, গোলা আইসক্রিম, পপকর্নসহ নানা ধরনের খাবারের অন্তত ৫০টি অস্থায়ী দোকান গড়ে উঠেছে এখানে।
উত্তরার দিয়াবাড়ী: উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের দিয়াবাড়ীতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরতে আসেন নানা বয়সী লোকজন। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উত্তরা তৃতীয় পর্যায়ের সম্প্রসারিত প্রকল্পের অংশ এই দিয়াবাড়ী। বিশাল বটগাছ আর তার দুই পাশে রাস্তায় গিয়ে দাঁড়ালে বোঝাই যায় না জায়গাটা শহরের কোল ঘেঁষে। বটগাছের বদৌলতে লোকমুখে জায়গাটার নাম হয়ে গেছে ‘দিয়াবাড়ী বটতলা’।

দিয়াবাড়ীর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এখন কাশফুল। ১৫ নম্বর সেক্টরের আবাসিক প্লটগুলো এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি। সেগুলোয় ফুটে আছে কাশফুল। মাঝখানে একটা মনোরম লেক আর লেকের ওপর একাধিক সেতু। ফুরফুরে বাতাসে দুলে উঠছে কাশবন। শহরের নানা প্রান্ত থেকে লোকজন আসছেন দিয়াবাড়ীতে।
বটতলা থেকে কিছুটা সামনে ৩ নম্বর সেতুর দুই পাশে লেকের পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বোট হাউস। বাঁশ ও কাঠের কাঠামো দিয়ে বানানো হয়েছে বসার জায়গা। সারি দিয়ে বাঁধা প্যাডেল বোট (পায়ে চালিত নৌকা)। ঘণ্টা ভিত্তিতে ভাড়া করে নৌকায় বেরিয়ে পড়ছেন সৌন্দর্যপিপাসুরা।
পূর্বাচল ৩০০ ফুট সড়ক: কুড়িল উড়ালসড়ক থেকে নেমে পূর্বাচল মহাসড়কটি সবার কাছে ‘৩০০ ফুট’ নামে পরিচিত। খিলক্ষেত উড়ালসড়কের পর থেকে সড়কটি বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের সামনে দিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে উঠেছে। উড়ালসড়ক চালু হওয়ার পর থেকে এই মহাসড়কটি নগরবাসীর বেড়াতে যাওয়ার নতুন জায়গা হয়ে উঠছে।
রোদের তেজ কমতে শুরু হলেই এখানে লোকসমাগম বাড়ে। আশপাশে গড়ে ওঠা বেশ কিছু রেস্তোরাঁর ছাদে বসেও লোকজন আড্ডা দেন। জায়গাটি ঘিরে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ ও হালকা খাবারের দোকান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *