২০০৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমানকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়। সে সময় পুরস্কারের মেডেল ও সম্মাননাপত্র কোনো উত্তরাধিকারকে না দিয়ে জাতীয় জাদুঘরের একটি কর্নারে যথাযোগ্য মর্যাদায় সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তখন বিরোধী দলে থাকা আওয়ামী লীগ এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে জিয়াউর রহমানকে পুরস্কার দেওয়ায় আপত্তি তোলে দলটি।
গত ২৪ আগস্ট অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে জাতীয় পুরস্কার-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রত্যাহারের পাশাপাশি জাতীয় জাদুঘর থেকে ওই পুরস্কারের মেডেল ও সম্মাননাপত্র সরিয়ে ফেলার সুপারিশ করে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, জাতীয় জাদুঘরকে মেডেল ও সম্মাননাপত্র ফেরত দিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর আগেও আরেক চিঠিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কবে, কীভাবে জিয়াউর রহমানের পদকটি জাতীয় জাদুঘরে আসে, তা জানতে চেয়েছিল।
পদক ফেরত দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় জাদুঘরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক একরাম আহমেদ বলেন, মহাপরিচালকের অনুপস্থিতিতে তিনি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কয়েক দিনের জন্য দায়িত্ব পালন করছেন। পদকের বিষয়ে আলোচনার জন্য বুধবার তাঁকে জাদুঘরে যেতে বলা হয়েছে। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না।
জাতীয় জাদুঘরের সচিব রমজান আলী বলেন, পদকটি চাওয়া হলে তা দেওয়ার জন্য জাদুঘর প্রস্তুত আছে। এ বিষয়ে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে চাননি। জাদুঘরের কিপার স্বপন কুমার বিশ্বাস এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাদুঘরের একজন কর্মকর্তা জানান, জোট সরকারের সময়ে বঙ্গভবনের তোশাখানা থেকে পুরস্কারটি জাতীয় জাদুঘরে এসেছিল। এটি এখন গুদামে সংরক্ষিত আছে। তিনি জানান, জাদুঘরে প্রায় ৯৫ হাজার নিদর্শন আছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪ হাজার প্রদর্শন করা যায়, বাকি নিদর্শন গুদামে থাকে।
জিয়াউর রহমানকে দেওয়া ‘স্বাধীনতা পদক’ প্রত্যাহারে সরকারের মন্ত্রিসভা কমিটির সিদ্ধান্তে উদ্বেগ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছে বিএনপি। গত ২৬ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ সরকার ঐক্যের রাজনীতিকে সম্পূর্ণ বিসর্জন দিয়ে গোটা জাতিকে বিভক্ত করে দিয়েছে। অন্যদিকে গত ২৭ আগস্ট স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ছোট করার জন্যই তাঁর সঙ্গে জিয়াউর রহমানকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার।