গাজীপুর; প্রখ্যাত সমাজবিশ্লেষক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেছেন, বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের উত্থানের জন্য রাজনীতি, শিক্ষানীতি, সামাজিক বৈষম্য দায়ী, কোন একক গোষ্ঠীকে এর জন্য দায়ী করা যাবে না। গণতন্ত্রের নামে মিথ্যাচার খুনো-খুনি চলছে। সমাজে বর্তমানে অশুভ চিন্তার প্রাধান্য বেড়ে গেছে। অশুভ চিন্তা সবসময় ছিল, আছে, থাকবে। এসব অশুভ সমস্যাকে দূর করার মধ্যেই মনুষত্বের মাহাত্ম।
তিনি আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে গাজীপুর সদর উপজেলাধীন ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, পৃথিবীতে প্রতিটি ধর্মের আবির্ভাব ঘটেছে নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের কল্যাণের লক্ষ্যে। তাই ধর্মের প্রতি এবং ধর্মের প্রবর্তকদের প্রতি সকলের শ্রদ্ধাবোধ থাকা উচিত। ইসলাম বা অন্য কোনো ধর্ম কখনও গুপ্ত হত্যাকে সমর্থন করেনি। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে, গুপ্ত হত্যা করে ধর্মের বিকাশ করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার দোসররা তাদের সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থেই ধর্মীয় উগ্রবাদকে জাগিয়ে তুলতে চেয়েছে বার বার। সেজন্য গণতন্ত্রপন্থী, ইসলামপন্থী বা সমাজতন্ত্রী-সবাইকে এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। কোন জাতির মধ্যে রাজনীতি উন্নত না হলে, সেই জাতি কখনই সভ্য জাতি হিসেবে টিকে থাকতে পারে না। পঞ্চম, অষ্টম, দশম, দ্বাদশসহ বিভিন্ন শ্রেণিতে পাবলিক পরীক্ষা প্রচলনের মাধ্যমে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার্থীতে পরিণত করা হয়েছে। জাতির স্বার্থেই এ ব্যবস্থা চলতে দেয়া উচিত নয়। নবীন শিক্ষার্থীদের তিনি পাঠ্য পুস্তকের বাইরেও অন্যান্য ভালো বই পড়ার পরার্মশ দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কবি ও বহুমাত্রিক লেখক সাযযাদ কাদির বলেন, নিজেকে তথা জাতিকে উন্নত করতে হলে চীনের অধিবাসীদের মতো পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সম্মান প্রদান এবং অগ্রজদের প্রতি অনুগত থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, নিজেকে জানতে হবে, দেশকে জানতে হবে, জাতির ইতিহাস জানতে হবে। তবেই একুশ শতকের তরুণেরা নতুন পৃথিবী সৃষ্টি করতে পারবে।
প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটির সদস্য সচিব সিরাজুল হক, কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী রিফাতুল হাসান মামুন, তন্ময় ইসলাম মিম্মা, একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুজন শেখ ও সুমাইয়া মিতু চৌধুরী।
আলোচনা সভাশেষে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও জাদু প্রর্দশিত হয়। উল্লেখ্য, অনুষ্ঠান শুরুর আগে অতিথিবৃন্দ কলেজ ক্যাম্পাসে ঔষধি গাছের চারা রোপণ করেন।
— প্রেসবিজ্ঞপ্তি