পারলেন না দিলমা রুশেফ। অভিশংসিত হয়ে তাকে স্থায়ীভাবে ক্ষমতা হারাতেই হলো। বুধবার ব্রাজিলের সিনেট তাকে অভিশংসিত করে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। এর মধ্য দিয়ে বামপন্থি ওয়ার্কার্স পার্টি সেখানে ১৩ বছরের টানা রাজত্ব হারালো। বাজেটে কারসাজির অভিযোগে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিল সিনেট। অভিশংসনের পক্ষে ভোট পড়ে ৬১ টি। এর বিরুদ্ধে ভোট পড়ে মাত্র ২০টি। ব্রাজিলের নিয়ম অনুযায়ী একজন প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করতে দুই-তৃতীয়ায়শ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন হয়। সিনেটে সে টার্গেট পূরণ হওয়ায় দিলমা রুশেফ ক্ষমতা হারালেন। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন স্পিকার মাইকেল তেমের। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাকে শপথ পড়ানো হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দিলমা রুশেফের নামের আগে যুক্ত হয়েছে সাবেক প্রেসিডেন্ট পদবী। তার ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০১৯ সালের ১লা জানুয়ারি। সে পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করবেন নতুন প্রেসিডেন্ট তেমের। মধ্য-ডানপন্থি পিএমডিবি পার্টির এ নেতা অভিশংসন প্রক্রিয়ার সময়ে দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সিনেট ভোটের পর তিনি প্রথম মন্ত্রীসভার বৈঠকও করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ব্রাহিলে তার মধ্য দিয়ে শুরু হলো এক নতুন যুগের সূচনা। তিনি মন্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সরকারের পক্ষে সাফাই গাইতে। দিলমা রুশেফকে ‘অভ্যুত্থানের’ মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ আছে তা খন্ডনের জন্য তিনি মন্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি জাতীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত ওই বৈঠকে বলেন, কারো অভিযোগ জবাব দেয়া ছাড়া ছেড়ে দেয়া যাবে না। এ সময় তিনি মনত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে, যাতে ব্রাজিলের অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত হয়। উল্লেখ্য, দিলমা রুসেফকে ক্ষমতাচ্যুত করায় ব্রাজিল ও দক্ষিণ আমেরিকায় বামপন্থি তিনটি দেশে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। তারা ব্রাজিলের ওই অভিশংসন প্রক্রিয়ার তীব্র সমালোচনা করেছে। ব্রাজিল ও ভেনিজুয়েলা প্রত্যেকে তাদের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। বলিভিয়া ও ইকুয়েডরে নিয়োজিত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূতকেও দেশে তলব করা হয়েছে।