সিলেটের পাহাড়ঘেরা সীমান্ত এলাকা সংগ্রামপুঞ্জি। গভীর রাতে গোপন বৈঠক চলছিল ‘উগ্রপন্থি’দের। অস্ত্র হস্তান্তরসহ নাশকতার পরিকল্পনার লক্ষ্যে চলছিল সে বৈঠক। পুলিশের কানে যায় সে বার্তা। সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার ওসি দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সোমবার ভোরে অভিযান চালায় বৈঠকস্থলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছুড়ে উগ্রপন্থিরা। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে বৈঠককারীরা পালিয়ে যায়, শুধু পালাতে পারেননি একজন। পুলিশের খাঁচায় বন্দি হতে হয় সংগ্রামপুঞ্জি এলাকার জহিলং কংওয়ানের ছেলে স্টালিন তারিয়াংকে। উদ্ধার করা হয় বেশকিছু দেশি-বিদেশি অস্ত্র। যে স্থান থেকে স্টালিনকে আটক করা হয় সেটা খাসিয়া নারী নেত্রী নরেলা টাইনসংয়ের ঠিকানা। সংগ্রামপুঞ্জির এ ঘটনা সিলেটের আলোচিত চরিত্র নরেলা টাইনসংকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে। অস্ত্র ব্যবসা, হুন্ডি ব্যবসা, ভূমি দখল এমনকি অবৈধ অস্ত্রধারীদের পৃষ্ঠপোষকতার অনেক অভিযোগ আগে থেকেই ছিল তার বিরুদ্ধে।
দিদিমার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে ২০০০ সালের দিকে হঠাৎ করেই সিলেটের জাফলংয়ে আবির্ভূত হন নরেলা টাইনসং। মধ্য তিরিশের সুদর্শনা, সুশ্রী এ আদিবাসী কন্যা মন কাড়েন অনেকের। সম্পর্ক গড়ে তুলেন জাফলংয়ের এক ব্যক্তির সঙ্গে। মোহমায়ায় ধর্মান্তরিত হন ওই ব্যক্তি। ঘর বাঁধেন নরেলার সঙ্গে। বিভিন্ন সূত্র বলছে, নরেলা ভারতীয় নাগরিক। মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরের ৪৯ কিলোমিটার দূরে শিলং-গোয়াহাটি রোডের নংপো থানা শহরে নরেলার বাড়ি। ৩ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে নরেলা তৃতীয়। বড় ভাই জেশপা টাইনসং ৫৫ বছর বয়সে মারা যান। অপর দুই ভাই আউডি ও সালান টাইনসং। ভাইবোন সকলেই থাকেন নংপো এলাকায়। নরেলার শৈশব-কৈশোর ও যৌবনও কেটেছে এই নংপোতেই। তবে ভারতীয় গণমাধ্যম তাকে চিহ্নিত করছে বাংলাদেশি হিসেবে। তাদের ভাষ্য নরেলা সিলেটের জাফলংয়ের বাসিন্দা। ২০১৩ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর শিলং টাইমসের এক প্রতিবেদনে নরেলার এমন পরিচয়ই দেয়া হয়েছে।
সিলেটের স্থানীয় একটি দৈনিক ২০১১ সালের ৬ই মার্চ থেকে ১৮ই মার্চ পর্যন্ত নরেলা টাইনসংয়ের উপর ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এসব প্রতিবেদনে উঠে এসেছে অস্ত্র ব্যবসা, হুন্ডি ব্যবসা, অস্ত্রধারী জঙ্গিদের আশ্রয়দানসহ নরেলার বিভিন্ন অপকর্মের চিত্র। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৩ সালে জাফলংয়ের সংগ্রামপুঞ্জিতে কারনপতি নামে এক খাসিয়া মহিলার মৃত্যু হয়। এ মৃত্যুর কিছুদিনের মধ্যেই আবির্ভাব ঘটে নরেলা টাইনসংয়ের। কারনপতিকে নানি দাবি করে তার সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারী পরিচয়ে নরেলা নিজেকে ‘রানী’ হিসেবে উপস্থাপন করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নরেলা ভারত ও বাংলাদেশ- দু’ দেশেরই পাসপোর্ট ধারণ করছেন। তার একটি পাসপোর্ট নম্বর গঙঢ ০৭৫৯৯৩০। এ পাসপোর্টটিতে ইস্যুর তারিখ হিসেবে উল্লেখ আছে ২৪শে নভেম্বর ২০০৫। এ পাসপোর্টটি দিয়ে নরেলা দু’বার যুক্তরাষ্ট্র সফরও করে এসেছেন। পাসপোর্টটিতে তার স্বামী হিসেবে ডেমন লামিনের নাম উল্লেখ থাকলেও অপর একটি পাসপোর্টে স্বামীর নাম লেখা দেলোয়ার লামিন।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, নরেলা টাইনসং-এর উত্থান ঘটে ২০০৭ সালে। এ সময় নরেলা জাফলংয়ে আদিবাসীদের জমি করায়ত্ত করেন। ‘অনুমতি দখল’ নামে নিজেই একটি আইন তৈরি করেন। এর মাধ্যমে আদিবাসীদের নিজেদের জমি তার কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে বরাদ্দ নিতে বাধ্য করেন। রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হন নরেলা।
এদিকে, রাজধানী ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি জাতীয় দৈনিক পাহাড়িকন্যা নরেলা টাইনসংকে নিয়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ২০০৮ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি ও ২রা মার্চ। ‘কে এই রহস্যময় খাসিয়া রানী’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে নরেলাকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৭ সালের ১৮ই ডিসেম্বর রাতে রিসিকান্ত, রুবি দাশ, মো. সয়ফুলকে ৯ লাখ ৮৯ হাজার ৬৭৫ ভারতীয় রুপিসহ বাংলাদেশের প্রতাপপুর সীমান্ত ফাঁড়ির বিডিআর জাফলংয়ের লামাপুঞ্জি থেকে আটক করে। ভারতীয় এসব নাগরিককে বাংলাদেশি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সনদও সংগ্রহ করা হয়। আর এসবের পেছনে কলকাঠি নাড়েন ‘খাসিয়া রানী’ নরেলা টাইনসং।
ঢাকা থেকে প্রকাশিত অপর এক দৈনিক ২০০৮ সালের ২৪শে জুলাই সংখ্যায় ‘জাফলংয়ে পাথর কেটে ধ্বংস করা হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের একটি অংশে উল্লেখ করা হয়, ‘হুন্ডি ব্যবসায়ী ও অবৈধ অস্ত্রধারী জঙ্গিরা স্থানীয় কিছু আদিবাসী খাসিয়ার বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে থাকে।’ এদের আশ্রয়দাতা হিসেবে পত্রিকাটি নরেলার দিকেই অঙ্গুলি তোলে।
ঢাকা ও সিলেটের সংবাদপত্রে নরেলাকে জড়িয়ে প্রকাশিত সকল সংবাদকে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন নরেলা টাইনসং। তিনি সিলেট থেকে প্রকাশিত একাধিক দৈনিকে সে সময় বিজ্ঞাপন আকারে তার বক্তব্য প্রকাশ করেন। ভারতীয় নাগরিক- পত্রপত্রিকার এমন বক্তব্য নাকচ করে দিয়ে নরেলা বিজ্ঞাপনে বলেছেন, তিনি বাংলাদেশি নাগরিক এবং তার পিতাও বাংলাদেশি, এবং তিনি পিতামাতার একমাত্র সন্তান। ভারতের মেঘালয়ে তার আত্মীয়স্বজন থাকলেও ভারতে তার কোনো বাড়ি নেই বলে পত্রিকায় প্রদত্ত বক্তব্যে নরেলা উল্লেখ করেন। তিনি তথ্য দেন, তার বাংলাদেশি ভোটার কার্ডও আছে।
দিদিমার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে ২০০০ সালের দিকে হঠাৎ করেই সিলেটের জাফলংয়ে আবির্ভূত হন নরেলা টাইনসং। মধ্য তিরিশের সুদর্শনা, সুশ্রী এ আদিবাসী কন্যা মন কাড়েন অনেকের। সম্পর্ক গড়ে তুলেন জাফলংয়ের এক ব্যক্তির সঙ্গে। মোহমায়ায় ধর্মান্তরিত হন ওই ব্যক্তি। ঘর বাঁধেন নরেলার সঙ্গে। বিভিন্ন সূত্র বলছে, নরেলা ভারতীয় নাগরিক। মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরের ৪৯ কিলোমিটার দূরে শিলং-গোয়াহাটি রোডের নংপো থানা শহরে নরেলার বাড়ি। ৩ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে নরেলা তৃতীয়। বড় ভাই জেশপা টাইনসং ৫৫ বছর বয়সে মারা যান। অপর দুই ভাই আউডি ও সালান টাইনসং। ভাইবোন সকলেই থাকেন নংপো এলাকায়। নরেলার শৈশব-কৈশোর ও যৌবনও কেটেছে এই নংপোতেই। তবে ভারতীয় গণমাধ্যম তাকে চিহ্নিত করছে বাংলাদেশি হিসেবে। তাদের ভাষ্য নরেলা সিলেটের জাফলংয়ের বাসিন্দা। ২০১৩ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর শিলং টাইমসের এক প্রতিবেদনে নরেলার এমন পরিচয়ই দেয়া হয়েছে।
সিলেটের স্থানীয় একটি দৈনিক ২০১১ সালের ৬ই মার্চ থেকে ১৮ই মার্চ পর্যন্ত নরেলা টাইনসংয়ের উপর ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এসব প্রতিবেদনে উঠে এসেছে অস্ত্র ব্যবসা, হুন্ডি ব্যবসা, অস্ত্রধারী জঙ্গিদের আশ্রয়দানসহ নরেলার বিভিন্ন অপকর্মের চিত্র। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৩ সালে জাফলংয়ের সংগ্রামপুঞ্জিতে কারনপতি নামে এক খাসিয়া মহিলার মৃত্যু হয়। এ মৃত্যুর কিছুদিনের মধ্যেই আবির্ভাব ঘটে নরেলা টাইনসংয়ের। কারনপতিকে নানি দাবি করে তার সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারী পরিচয়ে নরেলা নিজেকে ‘রানী’ হিসেবে উপস্থাপন করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নরেলা ভারত ও বাংলাদেশ- দু’ দেশেরই পাসপোর্ট ধারণ করছেন। তার একটি পাসপোর্ট নম্বর গঙঢ ০৭৫৯৯৩০। এ পাসপোর্টটিতে ইস্যুর তারিখ হিসেবে উল্লেখ আছে ২৪শে নভেম্বর ২০০৫। এ পাসপোর্টটি দিয়ে নরেলা দু’বার যুক্তরাষ্ট্র সফরও করে এসেছেন। পাসপোর্টটিতে তার স্বামী হিসেবে ডেমন লামিনের নাম উল্লেখ থাকলেও অপর একটি পাসপোর্টে স্বামীর নাম লেখা দেলোয়ার লামিন।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, নরেলা টাইনসং-এর উত্থান ঘটে ২০০৭ সালে। এ সময় নরেলা জাফলংয়ে আদিবাসীদের জমি করায়ত্ত করেন। ‘অনুমতি দখল’ নামে নিজেই একটি আইন তৈরি করেন। এর মাধ্যমে আদিবাসীদের নিজেদের জমি তার কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে বরাদ্দ নিতে বাধ্য করেন। রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হন নরেলা।
এদিকে, রাজধানী ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি জাতীয় দৈনিক পাহাড়িকন্যা নরেলা টাইনসংকে নিয়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ২০০৮ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি ও ২রা মার্চ। ‘কে এই রহস্যময় খাসিয়া রানী’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে নরেলাকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৭ সালের ১৮ই ডিসেম্বর রাতে রিসিকান্ত, রুবি দাশ, মো. সয়ফুলকে ৯ লাখ ৮৯ হাজার ৬৭৫ ভারতীয় রুপিসহ বাংলাদেশের প্রতাপপুর সীমান্ত ফাঁড়ির বিডিআর জাফলংয়ের লামাপুঞ্জি থেকে আটক করে। ভারতীয় এসব নাগরিককে বাংলাদেশি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সনদও সংগ্রহ করা হয়। আর এসবের পেছনে কলকাঠি নাড়েন ‘খাসিয়া রানী’ নরেলা টাইনসং।
ঢাকা থেকে প্রকাশিত অপর এক দৈনিক ২০০৮ সালের ২৪শে জুলাই সংখ্যায় ‘জাফলংয়ে পাথর কেটে ধ্বংস করা হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের একটি অংশে উল্লেখ করা হয়, ‘হুন্ডি ব্যবসায়ী ও অবৈধ অস্ত্রধারী জঙ্গিরা স্থানীয় কিছু আদিবাসী খাসিয়ার বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে থাকে।’ এদের আশ্রয়দাতা হিসেবে পত্রিকাটি নরেলার দিকেই অঙ্গুলি তোলে।
ঢাকা ও সিলেটের সংবাদপত্রে নরেলাকে জড়িয়ে প্রকাশিত সকল সংবাদকে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন নরেলা টাইনসং। তিনি সিলেট থেকে প্রকাশিত একাধিক দৈনিকে সে সময় বিজ্ঞাপন আকারে তার বক্তব্য প্রকাশ করেন। ভারতীয় নাগরিক- পত্রপত্রিকার এমন বক্তব্য নাকচ করে দিয়ে নরেলা বিজ্ঞাপনে বলেছেন, তিনি বাংলাদেশি নাগরিক এবং তার পিতাও বাংলাদেশি, এবং তিনি পিতামাতার একমাত্র সন্তান। ভারতের মেঘালয়ে তার আত্মীয়স্বজন থাকলেও ভারতে তার কোনো বাড়ি নেই বলে পত্রিকায় প্রদত্ত বক্তব্যে নরেলা উল্লেখ করেন। তিনি তথ্য দেন, তার বাংলাদেশি ভোটার কার্ডও আছে।