আজ বুধবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার পরিদর্শন শেষে কারাফটকে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, ‘মীর কাসেম আলীর পরিবারের লোকজন তাঁর সঙ্গে দেখা করে গেছেন। এ সময় মীর কাসেম আলীর স্ত্রী জানিয়েছেন, প্রাণভিক্ষার (মার্সি পিটিশন) বিষয়ে তাঁর স্বামী কিছুটা সময় চেয়েছেন। মার্সি পিটিশনের জন্য তাঁকে যৌক্তিক সময় দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার আবার তাঁর কাছে ওই বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে।’
সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, সাধারণ বন্দীর রায়ের ক্ষেত্রে নিয়মানুযায়ী আসামিদের বেলায় মার্সি পিটিশনের (প্রাণভিক্ষা) জন্য সর্বোচ্চ সাত দিন সময় দেওয়া হয়ে থাকে। তাঁকে সাত দিন সময় দেওয়া হতে পারে।
প্রাণভিক্ষা চাওয়া না হলে বা প্রাণভিক্ষা চাওয়ার পরও তা না পেলে কোন কারাগারে মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, ‘এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি। তবে প্রতিটি কারাগারেই এমন সব কার্য সম্পন্ন করতে সব সময় প্রস্তুতি থাকে। মীর কাসেম আলী যে সময় চাইবেন, সেটা কতটুকু যৌক্তিক, তা–ও আমরা দেখব।’
এ সময় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় হাইসিকিউরিটির জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মো. মিজানুর রহমান, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এর সুপার সুব্রত কুমার বালা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধে মীর কাসেমের ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন গতকাল মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত খারিজ করে দেন। এর পরপরই ৬৩ বছর বয়সী মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকরের সব ধরনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনের ওপর বিষয়টি নির্ভর করছে।
মীর কাসেম আলী কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ বন্দী রয়েছেন। ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ হওয়ার রায় আজ সকালে তাঁকে পড়ে শোনানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাশিমপুর কারাগার-২-এর কারা তত্ত্বাবধায়ক প্রশান্ত কুমার বণিক।
গতকাল সকালে রায় ঘোষণার পর বিকেলে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। বিকেলেই রায়ের অনুলিপি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যায়। সেখান থেকে রায়ের অনুলিপি কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। রিভিউ খারিজের মধ্য দিয়ে মীর কাসেমের আইনি লড়াইয়ের শেষ ধাপের ইতি ঘটেছে। এখন তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। এই সুযোগ তিনি নেবেন কি না, তা তাঁর আইনজীবী বা পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি। প্রাণভিক্ষা না চাইলে বা প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হলে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আর কোনো বাধা থাকবে না।