ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যত বাধা বিপত্তিই আসুক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অব্যাহত থাকবে। বুধবার ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘ সময় ধরে ইতিহাস বিকৃতির উদাহরণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫-এর পর একটি প্রজন্মকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতেই দেয়া হয়নি। বঙ্গবন্ধুর নাম ও তার ভাষণ বাজানো নিষিদ্ধ ছিল। একটি প্রজন্ম যদি ক্রমাগতভাবে বিকৃত ইতিহাস শুনতে থাকে, তবে তাদের চরিত্রটাও বিকৃত হয়ে যায়। আজকের যে সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ তা সেই বিকৃত ইতিহাস থেকেই সৃষ্টি। দেশ ও জাতির জন্য যে কোন ত্যাগে স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন-যে কোন মহৎ অর্জনে মহান আত্মত্যাগের প্রয়োজন। তাই দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে, তাদের কল্যাণ ও উন্নত জীবন দিতে আমিও যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় সিনিয়র সাংবাদিক ও গবেষক সৈয়দ বদরুল আহসান, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা ছাড়াও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রীসভার সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখল এবং তখনকার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫ সালের পর দেশে ১৯টা ক্যু হয়েছে। প্রতি রাতে ছিল কারফিউ। অনেকে বলে জিয়া নাকি (জিয়াউর রহমান) গণতন্ত্র দিয়েছে। গণতন্ত্র নয়, জিয়া দিয়েছিল কারফিউ গণতন্ত্র। তখন স্বাধীনভাবে চলার কোনও সুযোগ ছিল না, কথা বলার কোনও সুযোগ ছিল না। বঙ্গবন্ধুর আমলে ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধী সাজাপ্রাপ্ত ছিল, ২২ হাজার মামলা হয়েছিল। কিন্তু জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে সব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দিলেন। গোলাম আযমকে পাকিস্তান থেকে ফিরিয়ে আনেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর এর বিচার বন্ধ করে রেখেছিলেন জিয়াউর রহমান। বিদেশিরা তদন্ত করতে চাইলেও তাদেরকে যে সুযোগ দেয়া হয়নি। বঙ্গবন্ধু হত্যার কয়েক বছর পর য্ক্তুরাজ্যে গিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার দাবিতে জনমত গঠনের চেষ্টা করলাম। সে দেশের বেশ কয়েকজন এমপিও আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তারা সবাই মিলে স্যার টমাস উইলিয়ামসকে বাংলাদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু জিয়াউর রহমান তাকে ভিসা দেয়নি। কেন তাকে বাংলাদেশে আসতে ভিসা দেয়া হয়নি? জিয়া চায়নি এই ঘটনার তদন্ত হোক। কারণ, তদন্ত হলে তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ হয়ে যেতো।