ঢাকা; রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব কথা বলেছেন, তা কোম্পানির বিজ্ঞাপনী প্রচারণা দিয়ে প্রভাবিত বলে মন্তব্য করেছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।
আজ শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পর জাতীয় কমিটি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই মন্তব্য করা হয়। এতে বলা হয়েছে, কমিটি ২৯ আগস্ট সংবাদ সম্মেলন করে আবারও নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবে।
জাতীয় কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আনু মুহাম্মদ-এর পক্ষ থেকে দেওয়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী আজ রামপাল বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন—তা জানার পর থেকে অনেকের মাঝে আশার সঞ্চার হয়েছিল যে, হয়তো প্রধানমন্ত্রী রামপাল প্রকল্প নিয়ে স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য ও দেশজোড়া মতামতকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রী রামপাল প্রকল্প বাতিল করে সুন্দরবনকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষায় পদক্ষেপ নেবেন। কমিটি নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা কোম্পানির বিজ্ঞাপনী প্রচারণা দ্বারা প্রভাবিত। সে কারণে তাঁর বক্তব্যে অনেক ভুল তথ্য, অতিরঞ্জন আছে।’
এত সব আন্দোলনের খরচ কে জোগান দেয়? প্রধানমন্ত্রীর এ প্রশ্নের জবাবে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এই আন্দোলন জনগণের গায়ে-গতরে গড়ে তোলা।’
জাতীয় কমিটি নেতৃবৃন্দ বলেন, সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে তরুণেরাই প্রধান শক্তি। তারা আজকের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে জমায়েত হয়েছে। তাঁদের প্রেরণা, প্রাণের টান বোঝার ক্ষমতা থাকলে সুন্দরবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার উদ্যোগ দেখা যেত না।
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলন সম্পর্কে জাতীয় কমিটি নেতৃবৃন্দ বলেন, খালেদা জিয়া সুন্দরবন আন্দোলন বিষয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন। অন্যদিকে তাঁর বক্তব্যের সুযোগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনকে কালি মাখানোর চেষ্টা করেছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলি, সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলন বৈজ্ঞানিক তথ্য বিশ্লেষণের ওপর ভর করে ও সামাজিক দায়বোধ থেকে স্বাধীন ও স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন হিসেবে গত কয়েক দশকে বিকশিত হয়েছে।’
কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেন, এই আন্দোলনকে কলঙ্কিত না করে প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতি দায়বোধ থেকে জনগণের স্বার্থ বুঝতে চেষ্টা করে মানুষ ও প্রকৃতি বিধ্বংসী প্রকল্প বাতিল করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সাংবাদিক সম্মেলনের বক্তব্য এবং উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় কমিটির বিস্তারিত বক্তব্য আগামী ২৯ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।