২ শিশুর লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন সবাই

Slider সারাবিশ্ব

file (2)

 

ধ্বংসস্তূপের ভিতর শুধু লাশ আর লাশ। উদ্ধারকারীরা গত রাতে ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে উদ্ধার করে আনেন ৮ মাস ও ৯ বছর বয়সী দুটি শিশুর লাশ। পিতামাতার সঙ্গে তারাও ভবন চাপা পড়ে নিহত হয়েছে। তাদের লাশ দেখে সেখানে উপস্থিত লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। সেই কান্না যেন পুরো ইতালিকে গ্রাস করেছে। চারদিকে শোক। যারা বেঁচে আছেন তাদের বাঁচার আকুতি। এ এক অন্যরকম ইতালি। ভূমিকম্পের আঘাতে ল-ভ- সব। স্বজন হারানো মানুষের মাতম আর আহতদের আর্তনাদে সেখানকার আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ১৫৯। এখনও অসংখ্য মানুষ নিখোঁজ। আহত অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। চারদিকে শুধুই ধ্বংসাবশেষ। এ অবস্থায় সেকানে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার জরুরি ভিত্তিতে আক্রান্তদের কিভাবে সহায়তা দেয়া যায় তা নির্ধারণে মন্ত্রীপরিষদের সভা আহ্বান করেছেন প্রধানমন্ত্রী মাত্তিও রেনজি। তিনি বুধবার সাংবাদিকদের বলেছেন, এ দিনটি হলো কান্নার। আগামী দিনগুলো হলো পুনর্গঠনের।  এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়েছে, গত রাতভর উদ্ধারকর্মীরা জীবিতদের উদ্দারের চেষ্টা করেছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাতের শেষভাগে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প বিরানভূমি করে দিয়েছে ইতালির মধ্যাঞ্চল। আমাট্রিস শহরে হোটেল রোমা  ধসে পড়েছে। এতে ছিলেন ৭০ জন অতিথি। সেখান থেকে মাত্র ৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের এখনও কোন হদিস মেলেনি। এ শহরের মেয়র বলেছেন, এবারের ভূমিকম্পে এ শহরটিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাটির সঙ্গে মিশে গেছে লোকালয়। রাস্তাগুলোতে মারাত্মক সব ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে যোগাযোগ বিঘিœত হচ্ছে। এটি পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় ভূমিধসের সমূহ আশঙ্কা করা হচ্ছে। যারা বেঁচে আছেন তাদের অবস্থা সঙীন। হাজার হাজার মানুষ অবস্থান করছেন তাঁবুতে। তাতে আশ্রয় নেয়া আলেসান্দ্রো গাব্রিয়েলি বলেছেন, রাতগুলো হবে আমাদের কাছে সবচেয়ে ভীতিকর। প্রতিটি তাঁবুতে অবস্থান করছেন ১২ জন করে মানুষ। এমন তাঁবু পাতা হয়েছে খোলা আকাশের নিচে, পার্কিং এলাকায়। আলেসান্দ্রো বলেন, মঙ্গলবার রাতে আমাদের ঘুম ভেঙেছে বিকট শব্দে। মনে হচ্ছিল বিকট শব্দে বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে কোথাও। ওদিকে উদ্ধারকর্মীরা অন্ধাকারের ভিতরেই ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত উদ্ধার করেছেন ১০ বছর বয়সী একটি মেয়ে শিশুকে। পেসকারা ডেল ট্রোনটো’তে একটি ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছিল শিশুটি প্রায় ১৭ ঘন্টা। কিন্তু তার মতো সৌভাগ্যবান নয় অন্য অনেক শিশু। আকুমোলি শহরের পাশে একটি গ্রামে চার সদস্যের একটি পরিবার চাপা পড়েছে ধ্বংসস্তূপের নিচে। এর মধ্যে রয়েছে ৮ মাস ও ৯ বছর বয়সী দুটি শিশু। উদ্ধারকর্মীরা যখন এই শিশু দুটির মৃতদেহ কম্বলে জড়িয়ে বের করে আনেন তখন তাদের দাদী কান্নায় আকাশ বাতাস ভারি করে তোলেন। তিনি চিৎকার করে বলেন, ঈশ্বর কেন সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে নিলো।
ইতালির এ ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ল্যাজিও ও মারচে অঞ্চলে। সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন ল্যাজিওতে। ভূমিকম্পে পাশ্ববর্তী আমব্রিয়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ তিনটি অঞ্চলেই দীর্ঘদিন ধরে কয়েক শতাব্দীর পুরনো ভবনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে এগুলো ভূমিকম্পের জন্য ঝুঁকিপ্রবণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *