গ্রাম বাংলা ডেস্ক: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ভূমিকা নিয়ে যেসব মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করা হয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছেন, এই বানোয়াট তথ্যের কোনো প্রমাণ যদি কেউ দিতে পারেন- তাহলে আমি রাজনীতি থেকে চিরবিদায় নেবো, এমনকি দেশ ছেড়েই চলে যাবো। আর যারা এ ধরনের মিথ্যাচার করছেন, তারা প্রমাণ দিতে না পারলে জাতির সামনে তাদের মা চাইতে হবে।
গতকাল এক বিবৃতিতে এরশাদ বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা আমার বুকের লালিত স্বপ্ন। দুর্ভাগ্য, সেই স্বাধীনতাযুদ্ধে আমি অংশগ্রহণ করতে পারিনি। কারণ, যুদ্ধ শুরুর মাত্র এক মাস আগে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে আমাকে পোস্টিং দেয়া হয়েছিল। যদি দেশে থাকতাম তাহলে জীবনবাজি রেখেই স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করতাম। অথচ বিস্ময়ের সাথে ল করছি, কিছু কিছু মহল আমার বিরুদ্ধে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আমার ভূমিকা নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট এবং কল্পনাপ্রসূত তথ্য প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এই মহলটি বলতে চায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি নাকি পাকিস্তান থেকে ছুটিতে বাংলাদেশে এসেছি এবং কোনো এক কল্পিত আদালতের বিচারক ছিলাম। আমি এ ধরনের জঘন্য মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সাবেক এই সেনাপ্রধান বলেন, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় এবং স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের বন্দিশিবিরে স্ত্রীসহ আমি এবং বাঙালি সৈনিক ও অফিসাররা অবর্ণনীয় নির্যাতন ও দুর্দশা সহ্য করে বেঁচে ছিলাম। এরপর বঙ্গবন্ধুর কূটনৈতিক সাফল্যে আমরা দেশে ফিরতে পেরেছি। দেশে ফেরার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই আমাকে পদোন্নতি দিয়ে আর্মি হেড কোয়ার্টারে অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনিই আমাকে এনডিসি কোর্স করাতে ভারতে পাঠিয়েছেন। পরে আমি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছি। মতা লাভের পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে আমি যা করেছি-তা আর কেউ করতে পারেনি। এখন আমাকে নিয়ে যারা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চানÑ তারা কোন পরে হয়ে কাজ করছেন সে প্রশ্ন এসে যায়। তাদের ব্যাপারে জাতিকে সজাগ থাকতে হবে।
দেশে ফিরেছেন এরশাদ
এ দিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ চীনে ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরেছেন। গতকাল বেলা সোয়া ১টায় তিনি হজরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তার সফরসঙ্গী ছিলেন পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি ও পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পানিসম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
এরশাদকে স্বাগত জানাতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়িাম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, এস এম আব্দুল মান্নান, মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, সুনীল শুভরায়, এস এম ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মো: আজম খান, তাজ রহমান, পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবুল, নূরুল ইসলাম নূরু, আলহাজ শওকত চৌধুরী এমপি, মো: ইয়াহইয়া চৌধুরী এমপি, সালাউদ্দিন আহমেদ মুক্তি এমপি প্রমুখ।