আওয়ামীলীগ-বিএনপির মধ্যে দীর্ঘ সময়ের রাজনৈতিক বিরোধের মধ্যে অন্যতম ইস্যু ছিল স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুর নৃশংস খুনের দিনে বেগম জিয়ার জন্মদিন পালন । জাতীয় শোক দিবসে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালন নিয়ে তুমুল বিতর্ক সব সময় রাজনৈতিক মাঠ উত্তপ্ত করে রাখত। আওয়ামীলীগ তথা অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্ঠ ব্যাক্তিদের দাবির মুখেও বেগম জিয়া জন্মদিন পালন করেছেন। দলীয় প্রধানের এই জন্মদিন পালনের সঙ্গে সঙ্গে দেশ বিদেশে দলীয় নেতা-কর্মীরাও জন্মদিনের কেক কেটেছেন। এই জন্মদিন পালন করতে গিয়ে অনেককে গ্রেফতারও হয়েছেন। তবুও পালিত হয়েছে বেগম জিয়ার জন্মদিন। কোন ভাবেই এই জন্মদিন প্রতিরাধ করা সম্ভব হয়নি।
সম্প্রতি সরকার বিরোধী জোট করার লক্ষ্যে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রধান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের সঙ্গে বেগম জিয়ার একটি বৈঠক হয়। বৈঠককে ঘিরে নানা আলোচনা ও সমালোচনা হলেও বঙ্গবীর বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলন করে ফলাফল ব্যাখা করেছেন। তিনি বলেছেন, বেগম জিয়ার জন্মদিন হলেও ১৫ আগষ্ট তিনি তা পালন না করতে অনুরোধ করেছেন। একই সঙ্গে জামায়াতকে জোট থেকে বাদ দিতেও তিনি আহবান জানিয়েছেন।
আজ ১৪ আগষ্ট। রাত ১২টা ০১ মিনিট থেকেই ১৫ আগষ্ট শুরু। ইতোমধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বলা হয়েছে, দেশের চলমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে বেগম জিয়া আজ রাতে জন্মদিন পালন করছেন না। কিছু দিন আগে বেগম জিয়ার পরামর্শক হিসেবে সুপরিচিত সাবেক ঢাকসু ভিসি প্রফেসর এমাজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জামায়াতের সাথে বিএনপির নৈতিক মিল নেই। তার সূরে বুঝা যায় বিএনপি-জামায়াত সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে।
সুতরাং দাবি করা যায়, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের অনুরোধ বেগম জিয়া রেখেছেন। যে যাই বলুক, রাজনৈতিক নানা কথা আসতে পারে, বিতর্ক থাকতে পারে কিন্তু প্রধান দুই দলের মধ্যে একটি চলমান ইস্যু মিমাংসা হয়েছে কাদের সিদ্দিকীর আহবানে এটাই বাস্তব। দুই দলকেই পাখা দিয়ে বাতাস করে ঠান্ডা করার চেষ্টা করছেন তিনি।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের অনুরোধে দুই দলের মধ্যে দূরত্ব কমারও একটি লক্ষন দেখা দিয়েছে। বিএনপির নেতা সাবেক মন্ত্রী ফজলুর রহমান পটলের জানাযা নামাজে আওয়ামীলী ও বিএনপির প্রথম সারির নেতাদের অংশ গ্রহন ও মিডিয়ায় কথা বলতে দেখা গেছে। ফলে জাতি আশা করতেই পারে যে, একটি জাতীয় সংলাপ আসন্ন।
সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধপূর্ন দুই দলের মধ্যে রাজনৈতিক হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করেছে বলেই আশা করছে জাতি। আর এই হাওয়া সৃষ্টির জন্য বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমকে কৃতিত্ব দিতেই হয়। তিনি এই কৃতিত্বের দাবিদার।
ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইনচীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম