যা হচ্ছে তা বলা ও ব্যাখা করার অবকাশ রাখে না। আমাদের নীতি ও নৈতিকতার যে অধ;পতন হচ্ছে তাতে জাতির ভবিষৎ কি তা অজানা হয়ে যাচ্ছে। মনে হয় আামদের গন্তব্যই সরে যাচ্ছে। দিন দিন আমরা অন্ধকারের দিকে যাচ্ছি।
খবর নতুন না হলেও উপসর্গ নতুন। একজন মা গ্রেফতারের পর বললেন, চাপাতি দিয়ে নিজ হাতেই গলা কেটে সন্তানদের হত্যা করেছেন তিনি। কেন মা সন্তানদের নৃশংসভাবে হত্যা করলেন তা জানাতে ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ডে আছেন তিনি।
ইসলাম শান্তির ধর্ম। অশান্তির মাধ্যমে ইসলাম কায়েম করতে গিয়ে একের পর এক খুন হচ্ছে। এখন খবর এলো বাগেরহাটে আইএস পরিচয়ে কলেজ শিক্ষক ও ব্র্যাক ব্যাংক ম্যানেজারকে নিজ হাতে লেখা চিঠি পাঠিয়ে জবাই করে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে অসিত কুমার দাস (৫২) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনা যদি সত্য হয় তবে হিন্দু লোকটি কোন ইসলাম কায়েমের জন্য এই কাজ করেছেন! প্রশ্ন আসতেই পারে।
ইসলামী সুন্নত পড়ে মানুষ খুন করার কারণে সুন্নতী লেবাস এখন ভয়ের কারণ হয়ে যাচ্ছে। কারণ যিনি মুসলমান ও যিনি জঙ্গী উভয়ের পোষাক একই। সুতরাং বুঝতে কষ্ট হওয়ার কারণে প্রকৃত মুসলমানরা এখন আতঙ্কিত।
এবার দেখা যাক দেশের অবস্থা। আওয়ামীলীগ সব সময় গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করেছে। এখন গনতন্ত্র ছাড়াই গনতান্ত্রিক সরকারের আবরণে দেশ চালাচ্ছে। কথায় কথায় জনগনের সরকার দাবি করলেও বাস্তবে উল্টো। কারণ জনগন নিশ্চিত হয়েছে তাদের ভোট ছাড়াই সরকার হতে পারে।
বিএনপি জনগনের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করতে গিয়ে ভোটার মেরে ফেলছে। ভোট কেন্দ্র পুঁড়িয়ে দিয়েছে। তাহলে তারা কোন গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে তা জনগনের জানা নেই।
জামায়াতে ইসলাম দেশের বিরুদ্ধে ছিল। তারা বাংলাদেশ চায় নি। কিন্তু ওই জামায়াতকে নিয়ে দেশ চালিয়েছে বিএনপি ও আওয়ামীলীগও। জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের জন্য সকল দল আন্দোলন করেছে। মানুষ মেরেছে। উৎখাতও করেছে। কিন্তু এখন আবার জাতীয় পার্টিকে নিয়ে দেশ পরিচালনা করছে তারাই। ফলে জাতীয় পার্টি ভোটার বিহীন গনতন্ত্র চর্চার অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারছেন ক্ষমতাসীন হয়ে।
আমাদের রাজনৈতিক দল গুলোর কথিত গনতান্ত্রিক কর্মকান্ডের জন্য দেশে এখন গনতন্ত্র অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকার প্রজাতন্ত্র নির্ভর হয়ে যাওয়ায় সরকারী কর্মচারীরা বেপরোয়া হয়ে যেতে বাঁধা পাচ্ছে না। সত্য থেকে সরে সত্যের আবরণে কাজ করতে সুবিধা করার জন্য গনমাধ্যমের উপর কঠিন নিয়ন্ত্রন চাপিয়ে দিচ্ছে সরকার। সরকার, জনগন ও প্রজাতন্ত্রের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে অপরাধ। ফলে দিন দিন নতুন নতুন অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। অপরাধের ধরণ ও প্রকৃতি মানুষের নীতি নৈতিকতা ও সুস্থ বিবেককে থমকে দিচ্ছে।
অচিরেই এই অবস্থা থেকে মুক্তি হওয়া দরকার। এর জন্য সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এখন জরুরী হয়ে গেছে। না হয় আমাদের মানবিক গন্তব্যও সরে যেতে পারে বলে আশংকা রয়েছে।