ইসলামিক স্টেট (আইএস) সদস্য মসিউদ্দিন ওরফে আবু আল মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে বাংলাদেশের র্যাব। এ জন্য আজ শনিবারই কলকাতা পৌঁছানোর কথা রয়েছে র্যাবের দু’কর্মকর্তার। তারা সেখানে গিয়ে মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে এ খবর লিখেছেন সাংবাদিক সাগ্নিক চৌধুরী। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএস অপারেটিভ মসিউদ্দিন ওরফে আবু আল মুসাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ভারতে। সেখানকার জিজ্ঞাসাবাদকারীদের সে বলেছে, জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) মোহাম্মদ সুলাইমানের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। ১লা জুলাই ঢাকায় হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলা হয়। সেই হামলার তদন্তে অগ্রগতি করতে বাংলাদেশ র্যাবের তদন্তকারী দলের দু’কর্মকর্তার আজ শনিবার কলকাতা পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এক সূত্র ওই প্রতিবেদককে বলেছেন, বাংলাদেশী এই দু’জন কর্মকর্তার মধ্যে একজন হলেন এসপি। আরেকজন জুনিয়র কর্মকর্তা। উল্লেখ্য, মসিউদ্দিন ওরফে আবু আল মুসা (২৫)কে গত ৬ই জুলাই পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ গ্রেপ্তার করে বীরভূম রেল স্টেশন থেকে। তার বসবাস বীরভূমেই। ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো ও ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাজ্য পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ও এনআইএ। এ সময় ভারতে আইএসের উপস্থিতি ও একটি নৃশংস হত্যাকা-ের ভিডিও সম্পর্কে পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করেছে। সে স্বকিার করেছে যে, একজন হিন্দুর শিরñেদ, তার সঙ্গীকে ধর্ষণের নির্দেশনা দিয়েছিল সে। ওই সময় এসব নৃশংসতার ভিডিও ধারণ করতেও বলেছিল। একই সঙ্গে সেই ভিডিও সীমান্তের কাছাকাছি বাংলাদেশে তার অনুগতদের কাছে পৌঁছে দেয়ার নির্দেশনাও দিয়েছিল সে। শিরñেদের ওই ভিডিও যাতে সিরিয়ায় আইএসের কাছে পৌঁছে দেয়া হয় এমন নির্দেশনা ছিল তার। এর কারণ ছিল, সন্ত্রাসী সংগঠনটির যোগাযোগ বিষয়ক শাখার কাছে তা পৌঁছে দেয়া, যাতে তারা ইন্টারনেটে তা প্রচার করতে পারে। তার সঙ্গে ভারতে খেলাফত প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া যায়। ভারতীয় জিজ্ঞাসাবাদকারীদের মুসা বলেছে, তার হ্যান্ডলার অর্থাৎ তার কাছ থেকে যার কাছে ভিডিওটি পৌঁছে যাবে তাকে সে প্রথমে সনাক্ত করে জিহাদি জন নামে। উল্লেখ্য, আইএস এ পর্যন্ত যতগুলো শিরñেদের ভিডিও প্রচার করেছে তার মধ্যে অনেকগুলোতে জিহাদি জনকে দেখা গেছে। কিন্তু মুসার দেয়া জিহাদি জন বাস্তবে জেএমবির মোহাম্মদ সুলায়মান। মুসা আরও বলেছে, সুলায়মানই তাকে নির্দেশ দিয়েছে অমুসলিমদের টার্গেট করতে, তাদের শিরñেদ করতে ও সে দৃশ্য ভিডিওতে রেকর্ড করতে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আরও লিখেছে, মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে আরও কিছু তথ্য। সে বলেছে, গত বছর মার্চে ছোট ভাইয়ের বিয়ের সময় জিহাদি জনের সঙ্গে সাক্ষাত হয় মুসার। এ সময় সে নিজেকে জেএমবির মোহাম্মদ সুলায়মান হিসেবে পরিচয় দেয়। তখন মুসাকে সুলায়মান বলে যে, আইএসের সমর্থনের বিষয়ে জেএমবিতে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। এ সময় সে একটি রেশন কার্ড পাওয়ার জন্য মুসার সাহায্য চায়। এ ছাড়াও সিরিয়ায় যাওয়ার সামর্থ না থাকলেও ভারতেই আইএসের হয়ে কাজ করতে মুসাকে উদ্বুদ্ধ করে সুলায়মান।