স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
গাজীপুর অফিস: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তায় শ্রমিক লীগের দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে মাওনা-ফুলবাড়ীয়া-আঞ্চলিক গাজীপুর সড়কে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
মঙ্গলবার দু’পক্ষের অবস্থানের কারণে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দুর্ভোগে পড়ে পথচারী ও যাত্রীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে মাওনা চৌরাস্তার পূর্ব অংশে শ্রীপুর উপজেলা আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান ও পশ্চিম অংশে শ্রমিকলীগ সমর্থনকারী কর্মী লিটন ফকিরের লোকজন অবস্থান নেয়। থেমে থেমে দুই পক্ষের মধ্যে লাঠি সোটা, হকিস্টিক, ইটপাটকেল নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।
শ্রীপুর উপজেলা আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান জানান, উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা মাওনা চৌরাস্তার বিভিন্ন স্ট্যান্ডের শ্রমিক-যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য বন্টন করে দেন। কিন্তু মাওনা-ফুলবাড়ীয়া-আঞ্চলিক গাজীপুর সড়ক লিটন ফকির জোরপূর্বক গত এক মাস যাবত তা দখল করে রাখে। উপজেলা শ্রমিকলীগের সদস্যরা স্ট্যান্ডে গেলেই তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে লিটন ফকিরের লোকজন পুলিশের সহায়তায় শ্রমিকলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
উপজেলা আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের কার্যকরী সদস্য পরিচয়দানকারী লিটন ফকির পাল্টা বক্তব্যে জানান, স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা শ্রমিকলীগের লোকদেরকে মাওনা চৌরাস্তা এলাকার বিভিন্ন সড়কের মোড় নেতাকর্মীদের মাঝে ভাগাভাগি করে দেয়। দীর্ঘদিন যাবত আমি ও আমার লোকজন মাওনা-ফুলবাড়ীয়া-গাজীপুর সড়কের সিএনজি-লেগুনা-টেম্পু স্ট্যান্ড দেখাশুনা করে আসছি। শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক তার লোকজন নিয়ে মাওনা-ফুলবাড়ীয়া-গাজীপুর সড়কের মাওনা চৌরাস্তা টেম্পু স্ট্যান্ড জোরপূর্বক দখল করার পাঁয়তারা করছে।
শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুল আলম প্রধান বলেন, শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ কাউকে চাঁদাবাজি করার ইজারা দেয়নি। শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীরা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের ব্যাপারে মনগড়া কথা বলেছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির জানান, পুলিশ কারো পক্ষ হয়ে কাজ করেনি। সকাল থেকেই পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দুই পক্ষকে ঘটনাস্থল থেকে ধাওয়া করে সরিয়ে দেয়।
শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে কোনো প্রকার চাঁদাবাজি না করতে এবং সকল প্রকার যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ও চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করেতে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর সোমবার ওই স্ট্যান্ড দখলকে কেন্দ্র করে শ্রীপুর আঞ্চলিক শাখা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান ও শ্রমিক লীগ কর্মী লিটন ফকিরে মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় শ্রীপুর আঞ্চলিক শাখা শ্রমিকলীগের কার্যকরী সদস্য লিটন ফকির পক্ষের কবির খন্দকার (৩৫) দা’য়ের কোপে আহত হয়। তাকে ওই দিন শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় কবির খন্দকার বাদী হয়ে বাবুল, বাচ্চু, শামীম ও তাদের আরো চার সহযোগীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০/২৫ জনকে অভিযুক্ত করে শ্রীপুর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।