কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার অর্ধেকের বেশি বৃটিশ নারী

Slider নারী ও শিশু সারাদেশ

26642_b6

 

 অর্ধেকেরও বেশি বৃটিশ নারী কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার হন। কিন্তু বেশির ভাগই হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেন না বলে স্বীকার করেছেন। বৃটেনের ট্রেড ইউনিয়নগুলোর সংগঠন টিইউসি’র একটি নতুন গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
১৫০০ নারীকে নিয়ে করা ওই জরিপে ৫২ শতাংশই এ সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন। এক-তৃতীয়াংশ অপ্রীতিকর কৌতুকের শিকার
হয়েছেন। এক-চতুর্ভাগ জানিয়েছেন তাদেরকে অবাঞ্ছিতভাবে স্পর্শ করা হয়েছে।
টিইউসি’র প্রধান ফ্রান্সেস ও’গ্রেডি বলেন, ‘এর ফলে নারীরা লজ্জিত হয়ে পড়েন ও ভীতসন্ত্রস্ত বোধ করেন। কর্মক্ষেত্রে আমরা অসহায় হয়ে পড়ি। অথচ, আমরা চাই শুধু কাজ করতে আর শ্রদ্ধা পেতে।’ খুব অল্প সংখ্যক নারীই মনে করেন তাদের বড়কর্তারা এ ইস্যুতে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছেন। একে ‘কেলেঙ্কারি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ও’গ্রেডি।
টিইউসি বলেছে, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিভিন্ন ধরন থাকতে পারে। এক নারী সহকর্মীর যৌনজীবন নিয়ে অসংযত মন্তব্য ও কৌতুক করা থেকে শুরু করে অবাঞ্ছিত স্পর্শ, চুমু বা আলিঙ্গন এমনকি শারীরিক সুবিধা দাবি করা যৌন হয়রানির সংজ্ঞায় পড়ে।
টিইউসি গবেষণায় দেখতে পেয়েছে যে, ১০টির মধ্যে ৯টি যৌন হয়রানির ঘটনায় দোষী ব্যক্তি ছিল পুরুষ। প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে এক নারী (১৭%) বলেছেন, তাদের লাইন ম্যানেজার বা তাদের ওপর সরাসরি কর্তৃত্ব খাটাতে পারেন এমন ঊর্ধ্বতনরা যৌন হয়রানি করেছেন। যৌন হয়রানির শিকার হওয়া নারীদের প্রায় ৭৯% বলেছেন, তারা বিষয়টি তাদের নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানকে জানাননি। এর কারণ হিসেবে, এদের ২৮ শতাংশ উল্লেখ করেছেন যে, জানালে কর্মক্ষেত্রের সমপর্কে প্রভাব পড়তো। প্রায় ১৫ শতাংশ নারী বলেছেন ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে অভিযোগ জানাননি। প্রায় এক-চতুর্থাংশ (২৪%) নারী কারণ হিসেবে বলেছেন, তাদের মনে হয়েছিল অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হবে না বা বিশ্বাস করা হবে না। আর ২০ শতাংশ বলেছেন, তারা খুবই বিব্রত বোধ করছিলেন।
গবেষণায় উঠে এসেছে, কমবয়সী নারী চাকরিজীবীরা আনুপাতিকহারে বেশি যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। জরিপে ১৮-২৪ বছর বয়সী ১৩৮ জন নারী অংশগ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ (৬৩%) বলেছেন তারা কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন। টিইউসি লিখেছে, অল্পবয়স্ক নারীরা সাধারণত জ্যেষ্ঠ পদে থাকেন না। তাই তাদের এ ধরনের হয়রানির শিকার হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
জরিপে আরো উঠে এসেছে যে, ২৮% নারী বলেছেন, কর্মক্ষেত্রে নিজেদের শরীর ও পোশাক নিয়ে যৌন ইঙ্গিতসূচক মন্তব্য তারা শুনেছেন। ১২ শতাংশ বলেছেন তারা অযাচিত স্পর্শ পেয়েছেন বা তাদেরকে জোরপূর্বক চুমু দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
পুরুষদেরও কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থা করা হয়। বিবিসিকে এক ব্যক্তি জানান, তিনি মধ্যবয়স্ক পুরুষ। এখন প্রথমসারির ব্যবস্থাপকের পদে কাজ করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমার চেয়ে জুনিয়র পদের কমবয়সী এক নারীর যৌন ইঙ্গিতসূচক অবাঞ্ছিত মন্তব্য মাঝে মধ্যে শুনতে হয়েছে। এসব মন্তব্য আমাকে অস্বস্তিতে ফেলে- এ বিষয়টি স্পষ্ট করার পরও নিস্তার মেলেনি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *