ঢাকা: অ্যাবা গ্রুপের জিএম মাকসুদুর রহমানের প্রতারণার শিকার হয়ে চাকরি হারানোর পর ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন একই প্রতিষ্ঠানের কর্মী ডিএম সোহাগ। এ ব্যাপারে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন সোহাগ।
জানা যায়, অ্যাবা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান দ্য বটম কালেকশন্স লিমিটেডে জিএম মাকসুদুর রহমান ও ডিএম সোহাগ কর্মরত ছিলেন। হঠাৎ একদিন জিএম মাকসুদুর রহমান সোহাগকে চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করার প্রলোভন দেখান। এর পরই মাকসুদুর রহমান তার রুমে ডেকে নিয়ে সোহাগকে গাড়ি ব্যবসা করার কথা বলে ২৪ লাখ টাকা সংগ্রহ করতে বলেন। সোহাগ তখন মাকসুদুর রহমানকে বলেন, আমার কাছে গাড়ি ব্যবসা করার মতো এত টাকা নেই। ওই সময় মাকসুদুর রহমান সোহাগকে নগদ কিছু টাকা জোগার করতে বলেন এবং বাকি টাকা ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। সহজ-সরল সোহাগ মাসুদুর রহমানের সেই প্রস্তাবে রাজী হন।
এরই প্রেক্ষিতে সোহাগ লোন নিয়ে গাড়ি কেনার জন্য মাকসুদুরকে ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ টাকা দেন। পরবর্তীতে সোহাগকে গাড়ি বুঝিয়ে দিতে বললে নানা তাল-বাহানা শুরু করেন মাকসুদুর। এ নিয়ে দুই জনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হলে প্রতারক মাকুসুদুর সোহাগকে জানায়, তোমার একটি গাড়ি আবদুল্লাহপুর হইতে মোহাম্মদপুর লিংক রোড পর্যন্ত চলাচল করছে। এর একমাস পর সোহাগ তার গাড়ির আয়ের টাকা দাবি করলে তখনও দেব-দিচ্ছি বলে ঘুরাতে থাকে মাসুদুর। পাঁচ মাস পর গত ১ এপ্রিল কোনো কাগজপত্র ছাড়া একটি গাড়ি সোহাগকে বুঝিয়ে দেন ওই প্রতারক। তখন মাসুদুরের কাছে বাকি দুইটি গাড়ি চাইলে সোহাগকে সে বলে দুটি নয় আরো একটি গাড়ি দেবো। আর বাকি ৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ফেরত দেবে। পরবর্তীতে মাসুদুর বাকি গাড়ি ও টাকা তো দেনইনি উল্টো সোহাগকে অ্যাবা গ্রুপের চাকরি থেকে বের করে দেন।
এ ঘটনায় প্রতারণার শিকার সোহাগ গত ৬ আগস্ট উত্তরার পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এ খবর শুনে মাসুদুর তার ক্যাডার বাদল, রনি আহম্মেদ, আমিনুল, মতি, জুয়েল, নেয়ামত, হাবীব, শামীম ও মান্নানসহ ১০/১২জন সোহাগকে মারার জন্য যান। এখন প্রাণ বাঁচাতে স্ত্রী-সন্তানসহ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
প্রতারণার শিকার সোহাগ বলেন, মাসুদুর নানা ধরনের অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত। আমার মতো অনেকের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করে তাদের নিঃশ্ব করেছেন।
তিনি জানান, মাসুদুর উত্তরার ১২ নং সেক্টরে ৫ নম্বর রোডের ১০ নম্বর হাউজের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটের মালিক। উত্তরা খালপাড়ে তার ৮ কাঠা জমি রয়েছে। ঢাকার আশুলিয়ায় একটি বাড়ি রয়েছে। এছাড়া পিরোজপুরে নিজ গ্রামের বাড়িতে ১০/১২ বিঘা জমি রয়েছে মাসুদুরের। একটি প্রতিষ্ঠানের জিএম হয়ে মাসুদুর এত সম্পদের মালিক হলেন কীভাবে সে প্রশ্ন তুলেন সোহাগ।
একই সঙ্গে প্রতারক মাসুদুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন সোহাগ।